রাজশাহী শহরে জমিদারের পুরনো বাড়ির নিচে ‘সুড়ঙ্গের’ সন্ধান
স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী মহানগরীর শিপাইপাড়া এলাকায় দিঘাপতিয়ার জমিদার পরিবারে এক পুরনো বাড়ি ভাঙার সময় একটি ‘সুড়ঙ্গের’ সন্ধান মিলেছে। বাড়িটি নির্মাণ করেছিলেন দিঘাপতিয়ার রাজা হেমেন্দ্র কুমার রায়ের ছেলে সন্দীপ কুমার রায়।
স্থাপনাটির দুই পাশে দুটি একতলা ভবন, পেছনে একটি দোতলা ভবন এবং সামনে একটি ফুলের গাছ রয়েছে। সরকারি কাগজে এটি এখন অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে নথিভুক্ত।
জরাজীর্ণ হওয়ায় জেলা প্রশাসন নিলামে বিক্রি করে এক লাখ ৫২ হাজার টাকায়। ক্রেতা ১০-১৫ দিন ধরে ভাঙার কাজ শুরু করলে নিচ থেকে সুড়ঙ্গ বের হয়ে আসে। সুড়ঙ্গের পানি বের হওয়ায় সেচযন্ত্র বসিয়ে পানি নিষ্কাশন করা হচ্ছে। তবে এক সুড়ঙ্গের সঙ্গে আরেকটির সংযোগ রয়েছে।
বোয়ালিয়া ভূমি অফিস সূত্র জানায়, দরগাপাড়া মৌজার ৫২৪ খতিয়ানের এই জমির দাগ নম্বর ৪৭। তবে বাড়িটি শিপাইপাড়া এলাকায় অবস্থিত। ১৯৮১ সালে এটি অর্পিত সম্পত্তি ঘোষণা করা হয়, যদিও সুপ্রিম কোর্ট ১৯৭৪ সালের পর কোনো সম্পত্তি অর্পিত ঘোষণা করতে নিষেধ করেছিল।
স্থানীয় ইতিহাসবিদরা বলছেন, বাড়িটির প্রত্নতাত্ত্বিক মূল্য যাচাই না করে ভাঙার জন্য নিলামে তোলা হয়েছে। কবি ও গবেষক তসিকুল ইসলাম জানান, স্বাধীনতার পর সরকার এটি ভাষাসৈনিক মনোয়ারা রহমানকে ইজারা দিয়েছিল। তিনি এখানে ‘মহিলা কুটিরশিল্প প্রতিষ্ঠান’ করেন।
এ ছাড়া ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, তেভাগা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক মনোয়ারার স্বামী এম আতাউর রহমান এবং শিক্ষাবিদ আ ন ম সালেহও এখানে বসবাস করেছেন। হেরিটেজ রাজশাহীর প্রতিষ্ঠাতা মাহাবুব সিদ্দিকী বলেন, রাজশাহীর পরতে পরতে দিঘাপতিয়ার জমিদারদের অবদান আছে।
এমন স্থাপনা ভাঙার সিদ্ধান্ত অত্যন্ত দুঃখজনক। ইতিহাস চর্চাকারীদের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল। রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মহিনুল ইসলাম বলেন, বাড়িটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় ভাঙার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সুড়ঙ্গের বিষয়ে সহকারী কমিশনারকে পাঠানো হয়েছে। প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া গেলে তা রক্ষা করা হবে।











