নিয়ামতপুরে গৃহবধূকে মুখে বিষ ঢেলে হত্যার চেষ্টা
নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর নিয়ামতপুরে স্বামীর পরকীয়ার তথ্য জেনে যাওয়ায় এক গৃহবধূকে শারীরিক নির্যাতন ও মুখে বিষ প্রয়োগ করে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ এনে থানায় মামলা দায়ের কররেছেন ভুক্তভোগী এক গৃহবধূর বাবা নূর হোসেন (৫২)।
গত ২৫ নভেম্বর ওই গৃহবধূ আমিনার বাবা মামলাটি করেন। মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, আমিনার সঙ্গে ২০২০ সালে ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় মাহাবুর হাসান মহব্বতের। বিয়ের সময় ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা ও ১ লাখ টাকার আসবাবপত্র দেয়া হয় মহব্বতকে।
প্রায় তিন বছর ধরে ভালোভাবেই চলছিলো আমিনার সংসার। সম্প্রতি স্বামী মাহাবুর হাসান মহব্বতের পরকীয়ার বিষয়টি জানতে পারেন আমিনা। মোবাইল ফোনে কিছু নগ্ন ছবিও দেখে ফেলেন তিনি। এরপর বিষয়টি স্বামীকে জানালে শুরু হয় তার ঊপর নির্যাতন।
পরকীয়ার বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য আরও ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করেন মহব্বত। যৌতুকের টাকা না পেয়ে পরিবারের সদস্যদের সহায়তায় আমিনাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয় বলে দাবি করেন মামলার বাদী নূর হোসেন। আমিনার বাবা জানান, গত ২১ অক্টোবর সকাল ৮টার দিকে এনিয়ে স্বামীর সাথে কথা কাটাকাটি হয় আমিনার। এরপর তার ঊপর শুরু হয় নির্যাতন।
নির্যাতনের এক পর্যায়ে শ্বাসরোধ ও পরে মুখে বিষ ঢেলে হত্যার চেষ্টা করা হয়। খবর পেয়ে আমিনাকে উদ্ধার করে অসুস্থ অবস্থায় প্রথমে নিয়ামতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা শেষে বিষয়টি মিটমাট করে স্বামীর বাড়িতে পাঠানোর চেষ্টা করা হলে স্বামীর পরিবার আমিনাকে নিতে অস্বীকৃতি জানায়।
এদিকে, ভুক্তভোগী আমিনার তিন বছর বয়সী সন্তান আব্দুর রহমানকে ফেরত দিচ্ছে না বলেও জানান গৃহবধূর বাবা।
ভুক্তভোগী আমিনা প্রতিবেদককে বলেন, আমার স্বামীর পরকীয়ার নগ্ন ছবি মোবাইল ফোনে দেখতে পাওয়ার পর থেকে আমার সাথে অশান্তি এবং নির্যাতন শুরু হয়। এরপর বিষয়টি আমার ননদের স্বামী শাহিনুরকে জানালে সে সবকিছু ঠিক করে দিবে বলে আশ্বাস্ত করে। কিন্তু তা না করে সে আজ আমাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে এবং একপর্যায়ে আমার শশুর-শাশুড়ির সহযোগিতায় আমার স্বামী মহব্বত জোর পূর্বক মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে তাদের অপকর্মের প্রমাণ নষ্ট করার লক্ষ্যে হত্যার চেষ্টা করে। শুধু তাই নয়, অমি যখন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছি তখন আমাকে কোটের মাধ্যমে ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দেয়।
নিয়ামতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান জানান, গত ২৫ নভেম্বর আমিনার বাবা নুর হোসেন বাদী হয়ে মাহাবুর হাসান মহব্বত, জালাল উদ্দীন সেন্টু ও মরিয়মকে আসামি করে নিয়ামতপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর থেকেই অভিয্ক্তদের গ্রেপ্তারের জন্য চেষ্টা অব্যাহত আছে।








