ঢাকা | নভেম্বর ২৬, ২০২৫ - ১০:৩৪ অপরাহ্ন

শিরোনাম

রাজশাহীতে আটা-চিনি-কাপড়ের রঙ মিলে হচ্ছে খেজুরের গুড়!

  • আপডেট: Wednesday, November 26, 2025 - 10:23 pm

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীর বাঘায় একটি কারখানায় কোনো রস ছাড়াই তৈরি হচ্ছে আখ ও খেজুরের গুড়। আটা, চিনি ও কাপড়ের রঙ দিয়েই তৈরি হচ্ছে এসব গুড়।

বুধবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত উপজেলার আড়ানী পৌরসভার শাহাপুর দিয়ারপাড়া এলাকায় অভিযান চালায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। এতে নান্টু মহাজন, সান্টু মিয়া, মোক্তার আলী, তৌফিক ও এনারুলের গুড় কারখানায় ভেজাল বিরোধী যৌথ অভিযান পরিচালনা করে মোট দুই লাখ টাকা জরিমানা করে রাজশাহী ভোক্তা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ইব্রাহিম হোসেন।

অভিযানে ভেজাল গুড় ৩১ হাজার ৭০৭ কেজি, ভেজাল লালি গুড় ১২ হাজার ৯৭০ কেজি, ভেজাল চিনির সিরা ২২ হাজার ৫১৭ লিটার, হাইড্রোজ আড়াই কেজি, ফিটকিরি সাড়ে ৪ কেজি, চুন ১২ কেজি ৭শ গ্রাম, ফুড কালার ৩ কেজি ৬৫০ গ্রাম কেজি জব্দ করে জনসাধরণের সম্মুখে ধ্বংস করা হয়।

পরে রাজশাহী ভোক্তা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ইব্রাহিম হোসেন বলেন, পর্যায়ক্রমে আরও কারখানায় জরিমানা করা হবে। একইসঙ্গে এইগুলো ধ্বংস করা হয়। অভিযুক্তকারীদের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ এর ৪২, ৪৩ ধারায় ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছ।

অভিযানে ওই গ্রামে গিয়ে গুড় তৈরির কারখানায় দেখা যায়, কারখানাগুলোতে আখ বা খেজুরের রসের কোনো বালাই নেই। তবুও তৈরি হচ্ছে গুড়। কারখানার ভেতর দেখা গেছে কড়াইয়ে গুড় তৈরি হচ্ছে। তার পাশেই বিভিন্ন খাঁচের ওপর ফেলে দেয়া হচ্ছে আকৃতি। তৈরি হওয়া গুড়গুলো পরবর্তীতে স্থানীয় বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে পাঠানো হয়। এই এলাকায় গুড় তৈরি করেন সান্টু মিয়া।

র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যান তিনি। তার স্ত্রী লাকি অকপটে স্বীকার করে বলেন, গুড়গুলো তৈরিতে কোনো ধরনের রসের ব্যবহার নেই। শুধু চিনি দিয়ে আখ ও খেজুরের গুড় তৈরি করা হয়। এরমধ্যে মেশানো হয় কাপড়ে দেয়া রঙ, আটা, হাইড্রোজ, গ্যাস পাউডার, চুন ও চিনি। এরপরে এগুলো রাজশাহী, নাটোর, পাবনার বিভিন্ন মোকামে পাঠানো হয়। সেখানে বিভিন্ন দামে কেনাবেচা হয়।

র‌্যাব-৫ এর উপ-অধিনায়ক মেজর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এখানে যে গুড় রয়েছে, এতে আখ বা খেজুরের রসের কোনো উপস্থিতি নাই। সবগুলো চিনি ও কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি। কারখানাগুলোতে প্রায় একটনের মতো গুড় রয়েছে। এগুলো ধ্বংস করা হয়।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের মুখপাত্র ডা. শংকর কে বিশ্বাস বলেন, রাসায়নিক দ্রব্যাদি কোনোভাবেই স্বাস্থ্যের জন্য না। এটা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক। এর ফলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হবে, হতে পারে ক্যান্সার। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে সব থেকে বেশি ক্ষতির কারণ হবে। অন্যদিকে ভোক্তাদের অভিযোগ ভেজালকারীদের ধরে শুধুমাত্র জারমানা করলেই হবে না এদের দিতে হবে দৃষ্টান্তমূলোক কঠোর শাস্তি। যাতে করে অন্যেরা এ কাজে সাহস না পায়।