ঢাকা | নভেম্বর ২৬, ২০২৫ - ১:৫৯ পূর্বাহ্ন

ভূমিকম্প পরবর্তী পরিস্থিতি: রাজশাহীতে ভবন নিরাপত্তায় কঠোর হবে আরডিএ

  • আপডেট: Tuesday, November 25, 2025 - 9:45 pm

স্টাফ রিপোর্টার: সাম্প্রতিক ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে পুরো দেশের মতো রাজশাহীতেও দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে ভবন নিরাপত্তা নিয়ে। এ পরিস্থিতিতে নগরবাসীর সুরক্ষা ও স্থাপনার স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে জরুরি পদক্ষেপ নিয়েছে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ)।

মঙ্গলবার আরডিএ কার্যালয়ে “ভবন নির্মাণে ভূমিকম্পসহ বিভিন্ন দুর্যোগে সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ” বিষয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন আরডিএ চেয়ারম্যান এস.এম তুহিনুর আলম। সভায় উপস্থিত ছিলেন রুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. নিয়ামুল বারী, অধ্যাপক ড. আবু সুফিয়ান মো. জিয়া হাসানসহ আরডিএর বিভিন্ন ইউনিটের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও প্রকৌশলীরা।

সভায় সভাপতির বক্তব্যে চেয়ারম্যান এস.এম তুহিনুর আলম বলেন, “রাজশাহীকে নিরাপদ নগরীতে পরিণত করতে আরডিএ সর্বোচ্চ আন্তরিক। ভবন নির্মাণে অনিয়মের জায়গা নেই। জনগণের জীবনই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। তিনি সব পক্ষের সহযোগিতায় একটি শক্তিশালী, নিরাপদ ও স্থিতিশীল নগর পরিবেশ গঠনের আহ্বান জানান।” তিনি আরও বলেন, “রাজশাহী একটি দ্রুত পরিবর্তনশীল নগরী। এখানে যে গতি ও পরিসরে ভবন নির্মাণ হচ্ছে, তা অত্যন্ত ইতিবাচক। তবে উন্নয়ন কখনো মানুষের জীবনের নিরাপত্তার বিনিময়ে হতে পারে না।

সাম্প্রতিক ভূমিকম্প আমাদের সতর্ক করেছে যে, ভবন নির্মাণে নিয়ম-নীতির প্রশ্নে কোন ধরনের শৈথিল্য বরদাস্ত করা হবে না।” তিনি বলেন, “আমরা চাই রাজশাহীর ভবনগুলো হোক টেকসই, নিরাপদ ও আধুনিক প্রযুক্তির আলোকে নির্মিত। এজন্য স্ট্রাকচারাল ডিজাইনে Bangladesh National Building Code (BNBC)-এর প্রতিটি ধাপ কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে। বিশেষ করে Earthquake Load গণনায় অসচেতনতা বা ইচ্ছাকৃত ভুল ভবিষ্যতে ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনতে পারে। আরডিএ এই বিষয়ে আরও কঠোর হবে।”

সভায় রুয়েটের অধ্যাপক ড. নিয়ামুল বারী বলেন, ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সবচেয়ে কার্যকর হলো ভবনের শক্তিশালী নকশা, সঠিক নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার এবং নির্মাণ তদারকি। তিনি আরডিএকে নিয়মিত কর্মশালা আয়োজন, বিল্ডিং কনসাল্টেন্টদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও জনসচেতনতা কর্মসূচি জোরদারের পরামর্শ দেন।

সভায় সিদ্ধান্ত হয় আগামী ৪ ডিসেম্বর সিটি কর্পোরেশনসহ আরডিএ তালিকাভুক্ত সকল কনসাল্টেন্ট, প্রকৌশলী ও স্টেকহোল্ডারদের জন্য ভূমিকম্প বিষয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হবে। এছাড়াও ভবন নির্মাণে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্তৃক অনুমোদিত ফায়ার সেফটি প্ল্যান যথাযথভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে কিনা তা কঠোরভাবে তদারকি করা। আরডিএর অধিক্ষেত্র এলাকায় সব ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা হালনাগাদ, কারণ নিরূপণ ও প্রয়োজনীয় ঝুঁকি-নিরসন পরিকল্পনা গ্রহণ। নিয়ম ভঙ্গকারী নির্মাণকাজের ক্ষেত্রে জরিমানা, নির্মাণ স্থগিতকরণসহ কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা। নগরবাসীর মাঝে ভূমিকম্প প্রস্তুতি ও দুর্যোগ সচেতনতা বাড়াতে পাবলিক ক্যাম্পেইন ও গণমাধ্যমে প্রচারণা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।