ঢাকা | নভেম্বর ২১, ২০২৫ - ২:২৬ পূর্বাহ্ন

রাজশাহীতে ট্রাফিক কার্যালয়ের সামনে অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ

  • আপডেট: Thursday, November 20, 2025 - 9:49 pm

স্টাফ রিপোর্টার: অটোরিকশার বিরুদ্ধে ট্রাফিক পুলিশের চলমান অভিযানকে কেন্দ্র করে নগরীতে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এখন কোনো সার্জেন্ট অটোরিকশা ধরলেই চালকদের গুণতে হচ্ছে দুই হাজার ছয়’শ টাকার জরিমানা, যা আগে ছিল মাত্র তিন’শ টাকা।

হঠাৎ বেড়ে যাওয়া এই জরিমানাকে আয়-উপার্জনের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ দাবি করে রাজশাহী মহানগরীর শতাধিক অটোরিকশা চালক গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে আরএমপি ট্রাফিক বিভাগের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভে জড়ো হন। তারা বলছেন, তিন দিন অটো চালিয়েও জরিমানার টাকা ওঠে না। এ জরিমানা তারা মানেন না। বিক্ষোভকারীরা জানান, নগরীর অটোরিকশা এখন দুই শিফটে চলে।

সকাল থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত চলে সবুজ রঙের অটোরিকশা, আর পরের শিফটে চলে মেরুন রঙের অটোরিকশা। গ্রাম থেকে অনেক সময় অটোরিকশা হাসপাতালে রোগী নিয়ে আসেন। শহর থেকে বের হতে হতে শিফট পরিবর্তন হয়ে গেলে সার্জেন্ট তাদের গাড়ি জব্দ করে মামলা দেন। সেই মামলার জরিমানা দাঁড়ায় দুই হাজার ছয়শো টাকা। এই টাকায় একজন চালকের সারাদিনের আয় প্রায় পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়।

চালকেরা আরও জানান, গাড়ি জব্দ হওয়ার পরদিন জরিমানার টাকা জমা দিলেই কেবল তারা গাড়ি ফেরত পান। কিন্তু একই অভিযোগে দ্বিতীয়বার ধরা পড়লে জরিমানা বেড়ে হয় পাঁচ হাজার টাকা। তৃতীয় ক্ষেত্রে সেই পরিমাণ দাঁড়ায় সাড়ে সাত হাজার টাকা। তাদের কথায়, এমন অস্বাভাবিক জরিমানা দিয়ে গাড়ি চালানো সম্ভব নয়। এতে পরিবার পরিজনসহ হাজারো চালক আজ নিদারুণ কষ্টে আছে।

বিক্ষোভে জাতীয়তাবাদী ইজিবাইক শ্রমিক দলের রাজশাহী মহানগর শাখার সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, ‘আমরা মোট এগারো দফা দাবি জানিয়েছি। এগুলো কোনো বাড়তি সুবিধা নয়; এগুলো চালকদের ন্যায্য অধিকার। অযৌক্তিক জরিমানা, গাড়ি ডাম্পিং ও হয়রানির কারণে হাজারো পরিবার কর্মহীন হয়ে পড়েছে। আমরা চাই সহনশীল জরিমানা, নির্দিষ্ট পার্কিং ব্যবস্থা এবং নিবন্ধিত গাড়ির সুরক্ষা নিশ্চিত হোক।’

চালকদের দাবি অনুযায়ী তারা চান ন্যায্য ভাড়া নির্ধারণ, হালনাগাদ ভাড়ার তালিকা প্রকাশ, অতিরিক্ত যাত্রী তোলার বিরুদ্ধে তদারকি, নির্দিষ্ট পার্কিং ও যাত্রী ওঠানামার স্থান নির্ধারণ, অনিবন্ধিত গাড়িকে আইনের আওতায় আনা, নকশানুযায়ী নিরাপদ গাড়ি উৎপাদন, সমন্বিত ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নীতি, টাইম ওভার মামলার পুনর্বিবেচনা, চালকদের ট্রাফিক আইন বিষয়ক প্রশিক্ষণ এবং মাসিক সমন্বয় সভা আয়োজন। বিক্ষোভে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহসভাপতি গগণ কুমার রায়, শাহ আলম, মো. অনু, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. হামিদ, দপ্তর সম্পাদক মো. আলমগীর, প্রচার সম্পাদক মো. রাসেলসহ অনেকে। দাবি না মানলে তারা আরও কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আরএমপি ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার নূর আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘জরিমানা সফটওয়্যারে অটোমেটিক সেট করা। সেখানে কমানোর সুযোগ নেই। তবে কোনো চালক নির্ধারিত ফরমে আবেদন করলে আমি বিষয়টি বিবেচনায় নিই। বৈধ কাগজপত্র থাকলে দুই হাজার ছয়শো টাকার জরিমানা কমিয়ে ছয়শো পঞ্চাশ টাকা করে দিই।’ তিনি বলেন, ‘চালকদের আরও কিছু দাবি আছে, যেগুলো শুধু ট্রাফিক বিভাগের বিষয় নয়। সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে সমন্বিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’