সরকারি পরিষেবায় দলিত জনগোষ্ঠীর অভিমগ্যতা বৃদ্ধির দাবি
স্টাফ রিপোর্টার: বৈষম্য বিলোপ আইন প্রণয়নসহ আবাসন এবং সরকারি পরিষেবায় দলিত জনগোষ্ঠীর অভিমগ্যতা বৃদ্ধির দাবীতে ‘রাজশাহী বিভাগীয় দলিত সম্মেলন-২০২৫’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বেলা ১০.৩০ টায় রাজশাহীর গ্রেটার রোডস্থ শাহ্ ডাইন কনভেনশন সেন্টারে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলন (বিডিইআরএম) ও নাগরিক উদ্যোগ আয়োজিত এ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বিডিইআরএম- কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি উত্তম কুমার ভক্ত।
বিডিইআরএম-কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শিপন কুমার রবিদাস-এর সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর-রাজশাহী এর উপপরিচালক শবনম শিরিন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ আমিরুল ইসলাম (কনক), যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর-রাজশাহী এর সহকারী পরিচালক আশিকুর রহমান, রাজশাহী বিভাগীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমী’র পরিচালক হরেন্দ্রনাথ সিং, সমাজসেবা অধিদপ্তর-রাজশাহীর অধীন সেইফ হোম এর ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট কাজী ফাহিমা মুন্নি, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের উপপ্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা সেলিম রেজা রঞ্জু, রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার গোরসার মহাবিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক সমরেশ কুমার সরকার।
সম্মেলনে বক্তাগণ বলেন, “আজও দলিত জনগোষ্ঠী শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আবাসন, কর্মসংস্থান ও অন্যান্য রাষ্ট্রীয় সেবায় কাক্সিক্ষত সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এই বৈষম্য নিরসনে জরুরি ভিত্তিতে বৈষম্য বিলোপ আইন প্রণয়ন, জাতীয় বাজেটে সংখ্যা অনুযায়ী বরাদ্দ নিশ্চিত করা এবং সরকারি চাকরিতে দলিত জনগোষ্ঠীর জন্য কোটা প্রণয়ন করা অত্যন্ত প্রয়োজন। তারা আরও বলেন, আদমশুমারিতে দলিতদের আলাদা পরিচয়ে গণনা, শিক্ষা উপবৃত্তি প্রদান, আবাসন প্রকল্পে দলিতদের অগ্রাধিকার এবং মানববর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অমানবিক ও অবমাননাকর পদ্ধতির বিলুপ্তি নিশ্চিত করতে হবে।
সম্মেলনে দলিত প্রতিনিধিরা তাদের জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলায় দলিতরা এখনো রেস্টুরেন্ট, সেলুন, স্কুল, হাসপাতাল এমনকি শ্মশানে পর্যন্ত বৈষম্যের শিকার হন।
বক্তাগণ আরও বলেন, “টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নের জন্য দলিত জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ অপরিহার্য। সরকার ও সুশীল সমাজকে একযোগে কাজ করতে হবে। কারণ দলিতদের বাদ রেখে এসডিজি অর্জন সম্ভব নয়।”
মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর-রাজশাহী এর উপপরিচালক শবনম শিরিন বলেন, “দলিতদের দক্ষতা উন্নয়ন মূলক প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব। নিজেদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। যোগ্য হয়ে উঠলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বৈষম্য কমবে। শিক্ষিত, দক্ষ ও যোগ্য হলে বৈষম্য কমবে এবং সুযোগ তৈরি হবে।”
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর-রাজশাহী এর সহকারী পরিচালক মোঃ আশিকুর রহমান বলেন, “আগামীতে দলিত যুবরা সরকারীভাবে যুব প্রশিক্ষন কেন্দ্রের মাধ্যমে বিভিন্ন যুগোপযোগী প্রশিক্ষন নিতে ইচ্ছুক হলে আমাদের দপ্তর থেকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সে সুযোগ দেওয়া হবে। প্রয়োজন শুধু স্বদিচ্ছা আর ঐকান্তিক প্রচেষ্টা।”
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ আমিরুল ইসলাম (কনক) বলেন, “এদেশের সকল ক্ষেত্রে দলিত, হরিজন এবং আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ইতিবাচক অবদান অনস্বীকার্য। আপনাদের ন্যয়সঙ্গত কর্মকান্ডে আমার সর্বোচ্চ সহযোগিতা সর্বদাই থাকবে। আপনাদের কোনও কাজে লাগলে আমাকে বলবেন, কোনরকম সংকোচ ছাড়াই।”
সোনালী/জগদীশ রবিদাস











