ঢাকা | নভেম্বর ১৫, ২০২৫ - ১২:২৩ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

বাগমারায় স্বামী কর্তৃক বিষাক্ত ড্যামফিক্স খাওয়ানো স্ত্রী আসমানি আর নেই

  • আপডেট: Friday, November 14, 2025 - 9:22 pm

বাগমারা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারায় বিষাক্ত রাসায়নিক ড্যামফিক্স (পরিষ্কারক) পান করিয়ে স্ত্রীকে হত্যা চেষ্টা করেছিল পাষন্ড স্বামী রফিকুল। ঘটনার প্রায় সাত মাস পর স্ত্রী আসমানি (৩২) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর ৪.৩০ মিনিটে মৃত্যু বরণ করেছে।

এ ঘটনার মামলায় অভিযুক্ত ১ নং আসামি ভিকটিমের স্বামী আব্দুর রশিদ বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে। মামলার দুই নং আসামি ও রশিদের বাবা রফিকুল ইসলামকে (৬০) এই মামলায় হত্যা চেষ্টার প্ররোচনা দানের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হলেও বর্তমানে সে জামিনে রয়েছেন।

মামলার এজাহার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ২ নম্বর নরদাশ ইউনিয়নের চন্ডিপুর গ্রামের আমজাদ হোসেনের মেয়ে আসমানী খাতুনের সাথে একই গ্রামের রফিকুল ইসলাম এর ছেলে আ: রশিদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই বদমেজাজি পাষন্ড স্বামী আ: রশিদের সাথে স্ত্রী আসমানী খাতুনের প্রায়শই ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকতো।

ঘটনার দিন আ: রশিদ তার শ্বশুর বাড়ি গিয়ে স্ত্রীর শয়ন কক্ষে প্রবেশ করে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে জোর পূর্বক হত্যার উদ্দেশে তার মুখে ড্যামফিক্স এসিড জাতীয় তরল (পরিষ্কারক) ঢেলে দেয় আ: রশিদ।

এসময় আসমানির চিৎকারে মেয়ের মা মালেকা বিবি এবং উক্ত মামলায় উল্লেখিত সরেজমিনে থাকা সাক্ষীগণ এবং আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে আশঙ্কা জনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩৮ নং ওয়ার্ডে ভর্তি করে। টানা ১৭ দিন চিকিৎসার পর মেডিকেল থেকে ছাড়পত্র দেয় আসমানীর চিকিৎসকরা।

পরবর্তীতে অবস্থার আরও অবনতি হলে ঢাকায় একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন ড্যামফিক্সের প্রভাবে তার খাদ্যনালী সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে গেছে। এরপর কৃত্রিম উপায়ে পেটের পার্শ্ববর্তী স্থানে ফুটো করে তরল খাবার প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়। এভাবেই এতদিন বেঁচে ছিলেন আসমানী।

এমন নির্মম নিষ্ঠুর ঘটনার সুষ্ঠু বিচার প্রাপ্তির আশায় ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে আসমানির পিতা আমজাদ হোসেন গত ২২ এপ্রিল বাগমারা থানায় একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর ২৪/৯৬। ঘটনার প্রায় সাত মাস পরে ভুক্তভোগী আসমানি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে।

তার ৮ বছরের এক শিশু সন্তান ও রয়েছে, এমন হৃদয় বিদারক ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। হাট গাঙ্গোপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এস আই জহিরুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে লাশের ময়না তদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে পাঠানো হয়। ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসীর দাবি, এমন নিষ্ঠুর ও নির্মম ঘটনার জন্য দায়ী আসামিদের সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হোক।