ঢাকা | নভেম্বর ৯, ২০২৫ - ২:১২ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

প্রাণ হারাচ্ছে চলনবিল

  • আপডেট: Saturday, November 8, 2025 - 9:55 pm

সোনালী ডেস্ক: চলনবিল দেশের বৃহত্তম বিল; যা বর্তমানে নাটোর, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলা জুড়ে বিস্তৃত। থই থই পানি, পাখ-পাখালি আর নানা দেশীয় প্রজাতির মাছে একসময় ভরপুর থাকত এই বিশাল জলাভূমি। বিশেষ করে মাছ ও ধান উৎপাদনে এই বিলের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দখল-দূষণে নদীনালার পানিপ্রবাহ হ্রাস ও গতিপ্রকৃতি পরিবর্তন, কংক্রিটের স্থাপনা নির্মাণ, বিলের বুক চিরে সড়ক-ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ ও পলি ভরাট হয়ে এখন অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে চলনবিল। পানিপ্রবাহ প্রায় বন্ধ হয়ে মৃতপ্রায় হয়ে গেছে চলনবিলকেন্দ্রিক আত্রাই, নন্দকুঁজা ও গুমানী, বড়ালসহ ২২টি নদনদী। নানা পন্থায় শাসনের ফলে ৮০০ বর্গকিলোমিটার জুড়ে পানিসম্পন্ন এই বিল গত ৫ দশকে মাত্র ৬৬ বর্গকিলোমিটারে দাঁড়িয়েছে। বিলের জলজ বাস্তুতন্ত্র ও জীববৈচিত্র্যও হুমকির মুখে পড়েছে। পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে এই অঞ্চলের বহু মানুষ। ভয়াবহ বিপর্যয় ধেয়ে আসলেও চলনবিলের উন্নয়নে সরকারের কার্যত কোনো প্রকল্প নেই।

যেমন ছিল চলনবিল: ১৮৮১ সালে প্রকাশিত ‘ইম্পেরিয়েল গেজেট অব ইন্ডিয়া’ নামের ব্রিটিশ-ভারতের ঐতিহাসিক গ্রন্থে চলনবিলের ভৌগোলিক ইতিহাস তুলে ধরা হয়। ঐ গ্রন্থে বলা হয়— নাটোর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও নওগাঁ জেলা নিয়ে চলনবিল। ১৭৫৭ হেক্টর আয়তনের ৩৯টি বিল, ৪২৮৬ হেক্টর আয়তনবিশিষ্ট ১৬টি নদী এবং ১২০ বর্গকিলোমিটার আয়তনবিশিষ্ট ২২টি খাল নিয়ে ৫০০ বর্গমাইল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত ছিল এই বিল। চলনবিলে প্রধান নদী ৯টি, ২০টি খালসহ ছোট ছোট বিভিন্ন বিল ও খাল রয়েছে। অতীতে ২৩ হাজারের মতো বড় বড় পানির আধার ছিল। চলনবিলের মধ্যে রয়েছে আত্রাই, নন্দকুঁজা, গুমানী, গুড়, করতোয়া, বড়াল, তুলসিগঙ্গা, চেঁচিয়া, ভাদাই, চিকনাই, রূপনাই, বানগঙ্গা ইত্যাদি নদী। আর উল্লেখযোগ্য খালগুলো হলো: নবীরহাজির জোলা, হক সাহেবের খাল, নিমাইচড়া খাল, বেশানীর খাল, গুমানী খাল, উলিপুর খাল, সাঙ্গুয়া খাল, দোবিলা খাল, কিশোরখালির খাল, বেহুলার খাড়ি, বাকইখাড়া, গোহালখাড়া, গাড়াবাড়ি খাল, কুমারভাঙ্গা খাল, জানিগাছার জোলা ও সাত্তার সাহেবের খাল। এসব নদী-খাল ঘিরে বিলের গুরুদাসপুরের চাঁচকৈড়, নাজিরপুর, সিংড়ার, বড়াইগ্রামের আহম্মেদপুর, তাড়াশের ধামাইচ, নাদোসৈয়দপুর, চাটমোহরের ছাইকোলা, অষ্টমনিষা, মির্জাপুর ভাঙ্গুড়া, নওগাঁওসহ সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছিল বড় নৌবন্দর।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞানী ড. রেদওয়ানুর রহমানের প্রবন্ধ থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে— প্রায় তিন দশক আগেও চলনবিলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদ-নদীতে বছর জুড়েই ৬ থেকে ১২ ফুট পানি থাকত। ফলে সারা বছর নৌচলাচল করত। কিন্তু বছরের পর বছর পলি জমে বিস্তীর্ণ বিল আর প্রবহমান নদী ভরাট হয়ে গেছে। পরিসংখ্যান মতে, প্রতি বছর ২২২১ মিলিয়ন ঘনফুট পলি প্রবেশ করে। পানি নেমে গেলে ৫৩ মিলিয়ন ঘনফুট পলি বর্ষায় চলনবিল ত্যাগ করে। অবশিষ্ট ২১৬৮ মিলিয়ন ঘনফুট পলি নদনদীসহ চলনবিলে রয়ে যায়। বাঁধ-সড়ক-কালভার্টে চলনবিলের বিনাশ শুরু: সরকারের পানি উন্নয়ন বোর্ডের ট্রাস্টি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস)’-এর তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭৫ সালের শুষ্ক মৌসুমেও চলনবিলের ৮০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে পানি ছিল। এরপর গত ৫০ বছরে উন্মুক্ত জলারাশির সেই আয়তন ৯২ শতাংশ কমে ২০২৫ সালে এসে ৬৬ বর্গকিলোমিটারে দাঁড়িয়েছে। মূলত চলনবিলের ভেতর ১৫টি পোল্ডার সৃষ্টি করতে গিয়ে ১ হাজার ৫০০ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। ১ হাজার ১৮৮ কিলোমিটার সড়ক, ১১৩টি সেতু এবং ৮৫৫টি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। স্লুইসগেটসহ ১৮০টি নিয়ন্ত্রণমূলক স্থাপনাও নির্মিত হয়েছে। এসব কারণে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে চলনবিল তার চরিত্র হারিয়েছে।

সিইজিআইএসের গবেষণা বলছে, ১৯৮৫ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে চলনবিলে পোল্ডারের সংখ্যা প্রায় তিন গুণ বেড়ে ১৪তে দাঁড়ায়। একই সঙ্গে পানি নিয়ন্ত্রণের স্থাপনার সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে হয় ১৮০। ফলাফল হিসেবে ২৩০ বর্গকিলোমিটার কমে ঐ বছরের শুষ্ক মৌসুমে চলনবিলের মাত্র ৮০ বর্গকিলোমিটারে পানি ছিল। ২০১৫ সালের দিকে পোল্ডারের সংখ্যা বেড়ে ১৫ হয়। পানি নিয়ন্ত্রণমূলক স্থাপনার সংখ্যা হয় ২১৫। ‘বদ্ধ পানিতে মাছ চাষ’ পদ্ধতি অবলম্বন করে গড়ে তোলা হয় হাজার হাজার অপরিকল্পিত পুকুর। ফলে ২০২৫ সালের মার্চ মাসে চলনবিলে পানি ছিল মাত্র ৬৬ বর্গকিলোমিটার এলাকায়। বড়ালের মুখে সরু স্লুইসগেটে বড় সর্বনাশ: নদীটির নাম বড়াল। পদ্মায় জন্ম আর যমুনায় বিলীন। ২২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই নদীর পেট চিরে জন্মেছে নদীনালা, খাল-বিল। পদ্মা-যমুনার পানি এই নদী হয়েই গড়িয়ে পড়ত দেশের সর্ববৃহৎ চলনবিলে। অথচ ৫০০ ফিট প্রস্থের নদীটির উৎসমুখে ১৯৮৪ সালে নির্মিত হয়েছে তিন কপাটের একটি সরু স্লুুইসগেট। সেই থেকে বড়াল তার যৌবন হারিয়েছে। একই সঙ্গে চলনবিলের বুক চিরে বয়ে যাওয়া ২২টি নদী, শ দুয়েক নালা এবং অন্তত ২৫০টি বিল মৃতপ্রায় হয়ে গেছে। ১৯৮৪ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত সময়ে মিলিয়ে গেছে বেশকিছু নদীর চিহ্ন। বড়াল রক্ষা আন্দোলন কমিটির সদস্যসচিব এস এম মিজানুর রহমান জানান, বড়াল নদীতে অপরিকল্পিতভাবে স্লুইসগেট নির্মাণের ফলে ৩৮ বছরে ২২০ কিলোমিটার নদীর মধ্যে বড়ালের ১২০ কিলোমিটার বেদখল হয়েছে। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে ফারাক্কার বাঁধের বিরূপ প্রভাব পড়েছে চলনবিলে। চারঘাট পৌরসভা বড়াল নদীর ১৪০০ ফিট দখল করে মার্কেট-স্থাপনা নির্মাণ করেছে। এছাড়া পাবনার আটঘরিয়া থেকে বনপাড়া পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার নদী দখল করে সরকারি অফিসসহ ব্যক্তিমালিকানায় বহু স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে।

নতুন সমস্যা চলনবিলে বিশ্ববিদ্যালয়: সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বুড়ি পোতাজিয়া এলাকায় পূর্ব চলনবিলের শেষ অংশে এসে খাল, বিল, বড়ালসহ অর্ধশত নদীর পানি মিলেমিশে একাকার। অন্তত শতাধিক উৎস থেকে আসা পানির সম্মিলিত প্রবাহ যমুনা নদীতে মিলিত হয়েছে। অথচ উন্মুক্ত পানির সেই প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করে অধিক ব্যয়ে এখানে স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ করতে চায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরিবেশ ও পানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খালবিল আর নদীর মিলনস্থলে কংক্রিটের স্থাপনা নির্মাণ করা হলে পানির প্রবাহ বন্ধ হবে, যা চলনবিলের জলজ বাস্তুতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, অন্যদিকে পানির এই শক্তিশালী প্রবাহ বাধা পেলে তা আশপাশের এলাকার জন্য জলাবদ্ধতা ও বন্যার প্রকোপ বাড়িয়ে তুলবে। খনন হলেও ফেরেনি নাব্যতা: চলনবিলের বুক চিড়ে যে কয়টি নদীর প্রবাহ তার মধ্যে অন্যতম বড়াল, আত্রাই, গুমানী ও তুলশীগঙ্গা। বাঘাবাড়ী থেকে উত্তর জনপদের প্রায় আটটি জেলাতে নৌ চলাচলের মাধ্যম ছিল এসব নদী। জৌলুশ ফেরাতে বছর দুয়েক আগে এই চারটি নদীর কিছু কিছু অংশ খনন করা হয়েছে। উদ্দেশ্য ছিল নদীর প্রস্থ ও গভীরতা বৃদ্ধি এবং নাব্যতা ফেরানো। যাতে নৌ-চলাচলে গতি বাড়ে, বিল এলাকার মানুষ নদীর পানিতে সেচ সুবিধা পান এবং উন্মুক্ত জলরাশিতে মাছ শিকার করতে পারেন। কিন্তু বাস্তবে এসবের কিছুই হয়নি। নদী খনন করা হয়েছে ঠিকই কিন্তু নাব্যতা ফেরেনি। খননের উচ্ছিষ্ট মাটিতেই আবার সংকুচিত হয়েছে এসব নদী। নদী পাড়ের বাসিন্দাদের দাবি, প্রতিটি নদী খননের ক্ষেত্রেই নানা অনিয়ম অসঙ্গতি ফুটে উঠে। কোনো নদীই ঠিকঠাক খনন করা হয়নি। ফলে বিল আর নদীতে প্রয়োজনীয় পানি না থাকায় ভূগর্ভস্ত পানির স্তরও আশঙ্কাজনকহারে নিচে নেমেছে। নদী রক্ষা আন্দোলনের মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, দখলের কবলে পড়ে চলনবিল এবং নদী নালায় পানির সংকট তৈরি হয়েছে। এছাড়া চলনবিল অঞ্চলের কয়েকটি শিল্প কারখানার তরল বর্জ্য বড়াল, নন্দকুঁজাসহ কয়েকটি নদীর পানিতে মিশে দূষণ সৃষ্টি করায় পরিবেশে ব্যাপক প্রভাব পড়ছে। ধ্বংস হচ্ছে জীববৈচিত্র্যও।

জেলেদের দুর্দিন ও পেশা বদল: স্থানীয়দের অভিযোগ, নদী সংলগ্ন এলাকায় ফসলহানি, নদী ও বিলের পানি দূষণ করায় দুর্গন্ধ-রোগবালাই ছড়াচ্ছে। একশ্রেণির ভূমিদস্যু দখল প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখায় জলাশয় ও ফসলি জমি কমছে। এতে করে জেলে-কৃষক, ব্যবসায়ীরা বেকার ও দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। বাংলাদেশ সরকারের চলনবিল মৎস্য প্রকল্প থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৯৮২ হতে ২০০৬ সালের মধ্যে এক সমীক্ষায় দেখা যায়—১৯৮২ সালে মোট ১ লাখ ৭৭ হাজার ৬১ জন জেলে চলনবিল এবং নদ-নদী ও খাল জলাশয়ে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। পর্যায়ক্রমে কমতে কমতে ২০০৬ সালে জেলের সংখ্যা ৭৫ হাজারে দাঁড়ায়। বর্তমানে চলনবিলের জেলেরা পেশা বদলেছেন। যারা এই পেশায় আছেন খাল-বিল, নদী-নালায় পানি না থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা দুর্দিন পার করছেন।

চলনবিল রক্ষায় আন্দোলন: বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), বড়াল রক্ষা আন্দোলন, চলনবিল রক্ষা আন্দোলন, নাগরিক সমাজ নামের বিভিন্ন সংগঠন ২০০৮ সাল থেকে চলনবিল ও নদ-নদী রক্ষায় আন্দোলনে নামে। বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষ্যে নদী পাড়ের চার জেলার আট উপজেলার মানুষ নিয়ে রাজশাহীর চারঘাটের পদ্মা নদীর উৎস মুখ থেকে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ীঘাট পর্যন্ত ২২০ কিলোমিটার দীর্ঘ পৃথিবীর বৃহত্তম মানববন্ধন কর্মসূচিও পালন করা হয়েছে। বড়াল রক্ষা আন্দোলন কমিটির ডিএম আলমগীর জানান, চলনবিলের দূষণ রোধ, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, বড়াল নদী চালু ও তা রক্ষার জন্য জনদাবির মুখে পানি উন্নয়ন বোর্ড টাস্কফোর্স গঠন করে। নদী বিষয়ক টাস্কফোর্স এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির সভায় বড়াল নদীর সব বাধা অপসারণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। কিন্তু বাস্তবে বিলের জৌলুশ ফেরাতে এবং নদী উদ্ধারে এখন পর্যন্ত কিছুই করা হয়নি।

চলনবিল বাঁচাতে করণীয়: চলনবিল রক্ষা আন্দোলনের সদস্যসচিব ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক এস এম মিজানুর রহমান বলেন, সরকারের সদিচ্ছা থাকলে ধুঁকতে থাকা চলনবিলের প্রাণ ফিরিয়ে আনা সম্ভব। চলনবিলে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, জলাশয় সৃষ্টি ও প্রমত্তা পদ্মার শাখা নদী বড়াল দখলমুক্ত করে নাব্যতা ফেরাতে হবে। বাঁধ অপসারণ, অন্যান্য নদী পুনঃখনন, অপ্রয়োজনীয় স্লুইসগেটগুলো অপসারণ ও ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের আওতায় আনতে হবে চলনবিলের প্রধান নদ-নদী। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং নতুন স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ করতে হবে। নদী দখলমুুক্ত করে পানির প্রবাহ ফেরানো গেলে আবারও চলনবিল প্রাণ ফিরে পাবে। চলনবিল ও এখানকার বাস্তুতন্ত্র নিয়ে গবেষণা করছেন বাস্তুতন্ত্র গবেষক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যপক ড. মো. মনিরুজ্জামান সরকার। চলনবিলকে ‘পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা’ ঘোষণা করে তা সংরক্ষণে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি এই গবেষকের। তিনি মনে করেন, চলনবিল শুধু একটি বৃহৎ বিল-ই নয়, এটি একটি বৃহৎ জলজ বাস্তুতন্ত্রের আধার। এই বিলের প্রাণ ফিয়ে আনা সম্ভব। চলনবিলকে বাঁচাতে হলে সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করা জরুরি। একই সঙ্গে বিল অঞ্চলে নতুন করে স্থায়ী কাঠামো নির্মাণ করতে না দেওয়া। তাছাড়া চলনবিলে কোনো ধরনের নির্মাণ কাজের ক্ষেত্রে বাস্তুতন্ত্র গবেষকদের পরামর্শ নেওয়ার ব্যবস্থা চালু করতে হবে। বিলকে যথেচ্ছভাবে দূষণরোধে সরকারিভাবে কর্মসূচি নিয়ে, প্রয়োজনে আইনের প্রয়োগ ঘটাতে হবে।