ঢাকা | নভেম্বর ৫, ২০২৫ - ১:৩৯ পূর্বাহ্ন

রাতের আঁধারে ফেলে যাওয়া বিষ্ঠায় তানোর গোদাগাড়ীতে পরিবেশ দূষণ

  • আপডেট: Tuesday, November 4, 2025 - 10:00 pm

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার কাকনহাট এলাকায় নাবিল গ্রুপের মালিকানাধীন (নাবা ফার্ম) থেকে উৎপন্ন মুরগির লিটারের বর্জ্য (বিষ্ঠা) নিয়মিতভাবে গভীর রাতে ফেলে দেয়া হচ্ছে তানোর উপজেলার মাড়িয়া জোকারপাড়া গ্রামের পুকুর ও রাস্তার ধারে। এতে এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে মারাত্মক দুর্গন্ধ। দূষিত হচ্ছে পানি, মারা যাচ্ছে পুকুরের মাছ।

স্থানীয় গ্রামবাসীর অভিযোগ, রাত ১২টা থেকে ৩টার মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব ড্রাম ট্রাক ব্যবহার করে নিয়মিত এসব বর্জ্য ফেলে নিরবে সটকে পড়েন প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারীরা। ফেলে যাওয়া বিষ্ঠার দুর্গন্ধে স্থানীয় এলাকায় জনজীবন চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। মাড়িয়া জোকারপাড়া গ্রামের কৃষকরা জানান, তারা এই পুকুরের পানি সেচ, রান্না ও গৃহস্থালির কাজে ব্যবহার করতেন। কিন্তু এখন দূষিত পানির কারণে তা আর সম্ভব নয়। পুকুরের মাছ মারা যাচ্ছে, জমিতেও চাষাবাদ বন্ধ হয়ে গেছে।

এ ঘটনায় স্থানীয় ২ নম্বর বাধাইড় ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আসগার আলী রাজশাহী পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। অভিযোগপত্রে তিনি উল্লেখ করেছেন, কোম্পানির বর্জ্যবাহী ট্রাক আটকালে নাবিল গ্রুপের লোকজন স্থানীয়দের ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে। এর আগেও, গত জুলাই মাসের ৮ ও ৯ তারিখে স্থানীয়রা তানোর উপজেলার ব্রুরুজ এলাকায় এমন দুটি ট্রাক আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিলেন।

কিন্তু তানোর থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) চালকদের কাছ থেকে ‘আর বর্জ্য ফেলবে না’ এমন লিখিত মুচলেকা নিয়ে ট্রাকগুলো ছেড়ে দেন। উল্লেখ্য, গত জুলাই মাসেই গোদাগাড়ী উপজেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে নাবা ফার্মকে পরিবেশ দূষণের দায়ে ২ লাখ টাকা জরিমানা করে এবং ওই ফার্মের কর্মচারী নাঈমকে ছয় মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেছিল। কিছুদিন বন্ধ থাকার পর পুনরায় তারা একইভাবে বর্জ্য ফেলে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।

গত বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) গভীর রাতেও মুরগির বিষ্ঠা ফেলে দেয়া হয় তানোর উপজেলার মাড়িয়া জোকারপাড়া গ্রামের পাশের সড়কে। যা এখন পুরো গ্রামজুড়ে তীব্র দুর্গন্ধ ও পরিবেশ দূষণ সৃষ্টি করেছে। স্থানীয়রা বলেন, আমাদের ছেলেমেয়ে নিয়ে এখন গন্ধে টেকা দায় হয়ে পড়েছে। আমাদের পুকুরের পানি, বাতাস সবকিছুই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রশাসন যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তবে এ এলাকায় বসবাস করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। এ বিষয়ে স্থানীয়রা রাজশাহী জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন, যেন নাবিল গ্রুপের বর্জ্য ফেলার এই পরিবেশবিধ্বংসী কার্যক্রম বন্ধ হয় এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়।