ঢাকা | নভেম্বর ৫, ২০২৫ - ১২:৫৯ পূর্বাহ্ন

দলিল লেখকের ‘ভুয়া’ সনদকে সঠিক বলে প্রত্যায়ন, শিক্ষা বোর্ডে উথালপাথাল

  • আপডেট: Tuesday, November 4, 2025 - 10:27 pm

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে একজন দলিল লেখকের ভুয়া সনদপত্রকে ‘সঠিক’ বলে প্রত্যায়ন দেয়ার অভিযোগ উঠেছে শিক্ষা বোর্ডের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসায় শিক্ষা বোর্ডে রীতিমতো উথালপাথাল শুরু হয়েছে।

জানা গেছে, এসএসসি পরীক্ষায় অংশ না নিলেও শাহীন আলী নামের একজন দলিল লেখককে এসএসসি পাসের প্রত্যয়ন দিয়েছে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড। এতে প্রত্যায়নকারী কর্মকর্তা হিসেবে স্বাক্ষর করেছেন বোর্ডের রেকর্ড শাখার কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন। রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক আ. ন. ম. মোফাখখারুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনা জানার পর তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, রাজশাহীর পবা সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে দলিল লেখক হিসেবে নিবন্ধিত হতে এসএসসির একটি সনদপত্র জমা দেন শাহীন আলী। তিনি যে সনদটি জমা দিয়েছেন, সেটি রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের। ওই সনদে উল্লেখিত রোল নম্বর ছিল-৬২৩৭১৩, রেজিস্ট্রেশন নম্বর ছিল-৬১৭৩৮২, পাসের সাল ছিল-১৯৯৭, বিদ্যালয়-দারুশা উচ্চ বিদ্যালয়। শাহীনের জমাকৃত সনদটি জাল হিসেবে সন্দেহ হওয়ায় পবা সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয় থেকে সেটি রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে যাচাইয়ের জন্য পাঠানো হয়। প্রথম দফায় বোর্ডের সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে সনদটি ‘সঠিক’ বলে প্রত্যয়ন দেয়া হয়।

শিক্ষা বোর্ডের তিন কর্মকর্তা- রেকর্ড শাখার আলমগীর হোসেন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ফারজানা লতা ও মিন্টু ভুয়া ওই সনদটিকে ‘সঠিক’ বলে প্রত্যয়ন করেন। তবে শাহীন আলীর এক সহপাঠী তার এসএসসি পাস নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই আবারও শুরু হয় অনুসন্ধান। পরে পবা সাব-রেজিস্ট্রার নিজেই শিক্ষা বোর্ডে হাজির হয়ে আবারও সনদটি যাচাইয়ের অনুরোধ জানান। এবার ডেপুটি কন্ট্রোলার (এসএসসি) মুনজুর রহমান খান শাহীনের সনদটি যাচাই শেষে প্রত্যয়ন দেন তার সনদটি ভুয়া।

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের রেকর্ড শাখার কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, ভুলবশত প্রত্যয়নটি দেয়া হয়েছিল। পরে আমরাই বুঝতে পারি সনদটি ভুয়া। ডেপুটি কন্ট্রোলার মুনজুর রহমান খান জানান, সনদটি ভুয়া। প্রথমে রেকর্ড শাখার মিন্টু নামের এক কর্মচারীর ভুলে এমন হয়েছে। ঘটনাটি নিয়ে বোর্ড তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।

এদিকে, ভুয়া সনদ জমা দেয়ায় দলিল লেখক শাহীনের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া হবে জানতে চাইলে পবা উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার শাহীন আলী বলেন, শিক্ষা বোর্ড থেকে তার (দলিল লেখক শাহীন) সনদটি ভুয়া হিসেবে প্রত্যায়ন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জেলা রেজিস্ট্রারের কাছে পাঠানো হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে সেখান থেকে তাকে শোকজ নোটিস পাঠানোর পর প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ঘটনায় দলিল লেখক শাহীনের লাইসেন্সটি বাতিলও করা হতে পারে বলে জানান পবার সাব-রেজিস্ট্রার।