ঢাকা | নভেম্বর ৪, ২০২৫ - ৬:০৮ পূর্বাহ্ন

শীতের আগমনে চারঘাটে লেপ-তোষক তৈরির ব্যস্ততা

  • আপডেট: Monday, November 3, 2025 - 10:00 pm

মোজাম্মেল হক, চারঘাট থেকে: কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে ভোরের সকাল। সন্ধ্যা নামলেই অনুভূত হচ্ছে শীত, রাতে ঝরছে কুয়াশা। ধীরে ধীরে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। পাতলা কাঁথায় মানছে না শীত, তাই হিমেল ঠান্ডা থেকে রক্ষা পেতে প্রয়োজন লেপের উষ্ণতার। তাই শীতের আগমনী বার্তায় রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কারিগররা।

সোমবার সকালে উপজেলার বিভিন্ন বাজার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, প্রায় অর্ধ শতাধিক লেপ-তোষকের দোকান রয়েছে। শীত মৌসুমে ব্যবসায়ীরা রেডিমেড লেপ তোষক তৈরি করে তা বিক্রি করছেন। উপজেলার স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, শীতের আগমনে এবার আগাম লেপ-তোশক বানানোর ধুম পড়েছে।

সাধারণ মানুষ প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত লেপ-তোষকের দোকানে ভিড় করছে। অপরদিকে মধ্যবিত্ত ও উচ্চ-মধ্যবিত্তদের দেখা যাচ্ছে উপজেলার বড় বড় কাপড়ের দোকানগুলোতে কম্বল কিনতে। তবে তুলা, লেপের কাপড়, ফোম ও মজুরিসহ সব মিলিয়ে গত বছরের তুলনায় এ বছর খরচ কিছুটা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা।

চারঘাট বাজারের লেপ-তোষক তৈরির কারিগর মঞ্জু রহমান বলেন, পুরো বছরের চেয়ে শীতের এ মৌসুমে বেচাকেনা একটু বেশি হয়। শীত আসার আগেই মানুষ লেপ-তোষক বানাতে শুরু করেছে। আমরাও ব্যস্ত সময় পার করছি। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবসা আরও বৃদ্ধি পাবে। উপজেলার সারদা ইউনিয়নের খোর্দ্দগোবিন্দপুর গ্রামের পাশু বেওয়া বলেন, নিজেদের পুরোনো ব্যবহারি লেপ সেলাই করে নিচ্ছেন। লেপ-তোষক বানানোর ক্ষমতা তাদের নেই। তাই পুরোনো লেপকে মেরামত করে ব্যবহার উপযোগী করছেন তারা।

উপজেলার মিয়াপুর গ্রামের বাসিন্দা মনোয়ারা বেগম বলেন, নতুন লেপ কিনতে গেলে খরচ অনেক, তাই পুরোনো লেপটাই ধুনিয়ে বাড়তি কিছু তুলা দিয়ে নতুন কাপড়ে মুড়িয়ে নিচ্ছি। এতে খরচ অর্ধেকেরও কম হবে। কারিগরদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বছরের অন্য সময়ের থেকে এই শীত মৌসুমে তাদের কাজ বেশি থাকে। দৈনিক একজন শ্রমিক ৪-৫টা লেপ সেলাই করতে পারেন। উপজেলার লেপ-তোষক দোকানের মালিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, অধিক মুনাফা ও বেশি বিক্রির আশায় দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন কারিগর ও ব্যবসায়ীরা।

ক্রেতারাও লেপ-তোষক তৈরির জন্য ভিড় করছেন। শীত যত এগিয়ে আসছে, কাজ তত বাড়ছে। তারা আরো বলেন, আগে একেকটা লেপ (বড়) তৈরি করতে ১৫শ থেকে ১৮শ টাকা খরচ হতো। এখন তুলা, কাপড় আর শ্রমের দাম বেড়ে সেই খরচ দাঁড়িয়েছে ২৫শ থেকে ২৬শ টাকার মতো। ফলে লেপ বিক্রি করে আগের মতো লাভ হয় না। শীতের আগমনে চারঘাট উপজেলার প্রতিটি গ্রামে এখন লেপ ধুননের শব্দ আর নতুন কাপড়ের ঘ্রাণ ভেসে বেড়াচ্ছে। রোদে শুকানো তুলার ফাঁকে হাসিমুখে কাজ করছেন ধুনকররা।