ঢাকা | অক্টোবর ২০, ২০২৫ - ১:৫৯ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

তেভাগা আন্দোলনের নেত্রী ইলা মিত্রের জন্ম শতবার্ষিকী আজ

  • আপডেট: Friday, October 17, 2025 - 10:03 pm

চাঁপাইনবাবগঞ্জ ব্যুরো: আজ শনিবার (১৮ অক্টোবর) ঐতিহাসিক তেভাগা আন্দোলনের নেত্রী, আদিবাসী ও কৃষক অধিকার রক্ষার সংগ্রামী নারী ইলা মিত্রের জন্ম শতবার্ষিকী। দিবসটি উপলক্ষে ইলামিত্রের জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন কমিটি চাঁপাইনবাবগঞ্জে আলোচনা সভা, শোভাযাত্রা ও আদিবাসী-বাঙালি কৃষক সমাবেশের উদ্যোগ নিয়েছে।

আঞ্চলিক ইতিহাস গবেষক ও আদিনা ফজলুল হক সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মাযহারুল ইসলাম তরু বলেন, ইলা মিত্র শুধু একজন নারী নেত্রী নন, ছিলেন কৃষক আন্দোলনের এক অনন্য প্রতীক। তেভাগা আন্দোলনে তাঁর নেতৃত্ব ব্রিটিশ পরবর্তী সময়ের নারী জাগরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ইতিহাসে তাঁর ভূমিকা নিয়ে আরও গবেষণা ও পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্তির দাবি জানান তাঁরা। নারী সংগঠন জাগো নারী বহ্নি শিখার সভাপতি ফারুকা বেগম বলেন, পুরুষতান্ত্রিক সমাজে একজন নারী হয়েও ইলা মিত্র যেভাবে কৃষক ও আদিবাসী অধিকার রক্ষায় আন্দোলন করেছেন, তা আজও নারীর ক্ষমতায়নের পথ দেখায়।

তাঁরা মনে করেন, সমাজে সমতার লড়াইয়ে ইলামিত্র আজও প্রাসঙ্গিক। তেভাগা আন্দোলনের নেত্রী ইলামিত্রের জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন কমিটির প্রচার সম্পাদক কর্ণে লিউস মূর্ম বলেন, ইলা মিত্র ছিলেন তাঁদের আশা ও সাহসের প্রতীক। ভূমির ন্যায্য অধিকার, আত্মসম্মান আর রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে তাঁর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা আন্দোলন আজও পথ দেখাচ্ছে প্রান্তিক মানুষকে।

সাংস্কৃতিক কর্মী নিবেদিতা সাহা নিলিমা, ইলা মিত্র ছিলেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের নাম। তাঁর আদর্শ ও সাহসিকতা থেকে তারা জানতে চায় নারী নেতৃত্ব, অধিকার আর প্রতিবাদের সঠিক ইতিহাস। তরুন প্রজন্মের আসিফ ইয়াসির বলেন, ইলা মিত্রকে স্কুল-কলেজের পাঠ্যপুস্তকে স্থান দিতে হবে, যেন আগামী প্রজন্মও তাঁকে জানে ও অনুকরণ করে। নবাবগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শ্রী সমিত চ্যাটার্জী, ইলা মিত্রের আদর্শিক চেতনা আজও অনুপ্রেরণা দেয় অধিকার ও মর্যাদার সংগ্রামে থাকা প্রতিটি মানুষকে, তাই তাকে চির অম্লান করতে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি এবং মর্যাদা দেয়ার দাবী জানান।

সাংবাদিক ও লেখক মাহবুবুল ইসলাম ইমন, ঐতিহাসিক তেভাগা আন্দোলনের নেত্রী, আদিবাসী ও কৃষক অধিকার রক্ষার সংগ্রামী নেত্রী ইলা মিত্রের এত ত্যাগ এবং তাকে সম্মানিত করতে রাষ্ট্রীয়ভাবে একুশ এবং স্বাধীনতা পদকে ভুষিত করার দাবী জানান।

প্রসঙ্গত: চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোর উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের রাওতাড়া এই গ্রামই ছিলো পূর্ব বাংলার তেভাগা আন্দোলনের সূতিকাগার। ১৯৪৬ সালে কৃষক ও সাঁওতালদের সংগঠিত করে জোরদার ও শোষকদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান জমিদার পুত্রবধু ইলা মিত্র। ফসলের তিনভাগের দুইভাগ শাসক শ্রেণীকে দিতে অস্বীকৃতি জানায় বাংলার চাষী। আর জমিদারী দমন নীতির বিরুদ্ধে এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন ইলা মিত্র। সইতে হয় অমানুষিক অত্যাচার।