রাকসু নির্বাচন: শেষ হলো প্রচারণা, নির্বাচন আগামাীকাল

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ এবং সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের প্রচারণার সময় শেষ হয়েছে গতকাল মঙ্গলবার রাত ১২টায়। শেষ দিনে ক্যাম্পাসে প্রার্থীদের ব্যাপক প্রচারণা দেখা গেছে। শেষ সময়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। ক্যাম্পাসে মাইকিং করে নির্বাচন সংক্রান্ত বিভিন্ন নির্দেশনা জানাচ্ছে প্রশাসন।
এদিকে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ‘পক্ষপাতমূলক’ আচরণের অভিযোগ এনে চারটি হলের প্রজেকশন সভা (পরিচিতি) স্থগিত করেছে ছাত্রশিবির মনোনীত প্যানেল ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৩ বছর পরে ১৯৫৬-৫৭ মেয়াদে প্রথম ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়। প্রতিষ্ঠার পরে পাকিস্তানি আমলের ১৪ বছরে নির্বাচন হয়েছে ১০ বার এবং স্বাধীনতার ৫৪ বছরে নির্বাচন হয়েছে ৬বার।
প্রথম দুই মেয়াদে ‘রাজশাহী ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (রাসু)’ নামে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে নাম পরিবর্তন করে ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু)’ নামে ১৪বার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বশেষ ১৯৮৯-৯০ মেয়াদে নির্বাচন হওয়ার পর দীর্ঘ ৩৫ বছর রাকসুর সকল ধরনের কার্যক্রম বন্ধ ছিল। পরে ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের ফলে নিজেদের অধিকার নিয়ে সোচ্চার হন শিক্ষার্থীরা। রাকসুর জন্য প্রশাসনকে রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ভাবে চাপ দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের মুখে ঘোষণা করা হয় তফসিল। তফসিল অনুযায়ী আগামীকাল বৃহস্পতিবার ১৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন। নির্বাচন কমিশন এখন শেষ সময়ের প্রস্তুতি নিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। প্রার্থীরা শেষ সময়ের প্রচারণা চালাচ্ছেন।
দীর্ঘ ৩৫ বছর পরে আগামীকালের এ নির্বাচনে ২৮ হাজার ৯০১ জন ভোটার রয়েছে। রাকসুর ২৩টি পদের বিপরীতে ২৪৭ জন এবং সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ৫টি পদে ৫৮ জন প্রার্থী লড়াই করবেন। এর ভেতর সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ১৮ জন, সাধারণ সম্পাদক পদে (জিএস) ১৩ ও সহকারী সাধারণ সম্পাদক পদে ১৬ জন।
রাকসুর অন্যান্য পদের মধ্যে ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক পদে ৮ জন, সহকারী ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক পদে ৬, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক পদে ১০, সহকারী সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক পদে ৯, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক পদে ৬, সহকারী মহিলাবিষয়ক সম্পাদক পদে ৮, তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক পদে ১৩, সহকারী তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক পদে ৮ জন প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় এসেছে।
এ ছাড়া মিডিয়া ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক পদে ৯ জন, সহকারী মিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ৯, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক পদে ৯, সহকারী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক পদে ৮, বিতর্ক ও সাহিত্য সম্পাদক পদে ৬, সহকারী বিতর্ক ও সাহিত্য সম্পাদক পদে ৮, পরিবেশ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক পদে ১২, সহকারী পরিবেশ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক পদে ১৬ এবং নির্বাহী সদস্যপদে ৫৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
এ নির্বাচনে দশের অধিক প্যানেল রয়েছে। আলোচিত প্যানেল গুলো হলো- ছাত্রদল মনোনীত প্যানেল ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম, ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’, ছাত্র অধিকার পরিষদ ও ছাত্র ফেডারেশনের নেতৃত্বে গঠিত ‘রাকসু ফর র্যাডিক্যাল চেঞ্জ’, সাবেক সমন্বয়কদের নেতৃত্বে ‘আধিপত্যবাদ বিরোধি ঐক্য’, বাম জোটের ‘গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ’, ছাত্র ইউনিয়ন (একাংশ) ঘোষিত ‘অপরাজেয় ৭১, অপ্রতিরোধ্য ২৪’, সাবেক আরেক নারী সমন্বয়কের নেত্বতে ‘সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ’, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন মনোনিত ‘সচেতন শিক্ষার্থী পরিষদ’ ।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের জামাল নজরুল ইসলাম অ্যাকাডেমিক ভবনের ফটকে দাঁড়িয়ে ছিলেন প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা। তারা ভবনে প্রবেশ ও বাইরে আসা শিক্ষার্থীদের হাতে দিচ্ছেন লিফলেট ও প্রচারপত্র। অনেকে শিক্ষার্থীদের দিয়েছেন ছোট ছোট বুকমার্ক দিয়েছেন কেন্দ্রে তার নামটি খুজে পাওয়ার জন্য। শুধু জামাল নজরুল ইসলাম অ্যাকাডেমিক ভবন নয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি অ্যাকাডেমিক ভবনের সামনেই এমন চিত্র ছিলো। এ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেট, টুকিটাকি চত্বর, আমবাগানসহ শিক্ষার্থীদের প্রধান আড্ডার স্থানগুলো ছিল প্রার্থীদের প্রধান টার্গেট। এ জায়গাগুলোতে তারা জমজমাট প্রচারণা চালিয়েছেন। এ দিন আগত সকল শিক্ষার্থীর হাতে প্রার্থীদের প্রচারপত্র দেখা গেছে।
দিনের শুরুতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে প্রচারণায় দেখা যায় এক ভিন্ন চিত্র। এদিন সকালে পরিবহন মার্কেটে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন ছাত্রদল মনোনীত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী শেখ নূর উদ্দিন আবির। বেলা ১১টার দিকে প্রচারণায় সেখানে আসেন ছাত্রশিবির মনোনীত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ। জাহিদকে দেখে সামনে এগিয়ে আসেন আবির। এসেই তারা বুকে জড়িয়ে নেন একে অপরকে।
এ সময় আবির বলেন, ‘আমরা একটি সুন্দর ও সুষ্ঠু শিক্ষার পরিবেশের জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছি। আমরা এখান থেকে আমাদের ভবিষ্যৎ গড়ে নেব। এর জন্য আমরা সকল প্রার্থীরা এক সাথে থাকবো, এক সাথে কাজ করব।’
জাহিদ বলেন, ‘আমরা একসাথে থেকেছি, এক সাথে রাজনীতি করেছি। এই যে একটা ইতিহাস সৃষ্টিকারী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে আমরা এই ইতিহাসের একটি অংশ। আমরা মনে করি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে লেখা থাকবে।’
প্রচার-প্রচারণা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন উভয় প্রার্থী। ছাত্রশিবির মনোনীত প্যানেল ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’র ভিপি প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, ‘প্রচার প্রচারণার শেষ দিন। এ সময়টি আমাদের প্রচারণার কার্যক্রমে ব্যস্ত কেটেছে। শেষ সময়ে আমরা নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রাখার চেষ্টা করছি। আমাদের দাবি, নির্বাচন কমিশন যেন পক্ষপাতমূলক আচরণ থেকে বিরত থাকে। তারা নিরপেক্ষভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করলে, ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকবে।’
ছাত্রদল মনোনীত প্যানেল ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’র ভিপি প্রার্থী শেখ নূর উদ্দিন আবির বলেন, ‘প্যানেল ঘোষণা হওয়ার পর থেকে আমরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। আমাদের প্যানেলটি সেরা প্রার্থী দিয়ে সাজানো হয়েছে। এতে রয়েছে জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড়, সাংস্কৃতিক কর্মী, নাট্যকর্মী এবং ডিনস অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত মেধাবী শিক্ষার্থীরা। আমরা প্রতিটি পদে যোগ্য ব্যক্তিদের নির্বাচন করেছি। আমরা জয়ের ব্যাপারে অত্যন্ত আশাবাদী।’
ছাত্রদলকে সর্মথন এক প্রার্থীর
এ দিকে নির্বাচনে ছাত্রদল মনোনীত ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’ প্যানেলকে সমর্থন জানিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন এজিএস প্রার্থী ফজলে রাব্বি। মঙ্গলবার দুপুর ১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে এক সংবাদ সম্মেলনে এ সিদ্ধান্ত জানান তিনি।
যানবাহন সংক্রান্ত ৫ নির্দেশনা
১৬ তারিখ নির্বাচন ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস নিরাপত্তার স্বার্থে ৫টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেগুলো হলো- ১. নির্বাচনের দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকার সংবলিত যানবাহন ছাড়া অন্যান্য যানবাহন ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে না, তবে শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে এই নির্দেশনা শিথিলযোগ্য। তারা সকল রাস্তা ব্যবহার করতে পারবে। ২. গণমাধ্যম কর্মীগণ ও তাদের বহনকারী যানবাহন রাকসু নির্বাচন কমিশন থেকে প্রদত্ত পাশ প্রদর্শন করে ক্যাম্পাসে প্রবেশ ও অবস্থান করতে পারবে।
৩. বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ভবনগুলোর দিকে ব্যক্তিগত গাড়ি, মোটরসাইকেল ও অটোরিকশাসহ অন্য কোনো প্রকার যানবাহন প্রবেশ করবে না। তবে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কাজে ব্যবহৃত গাড়িসমূহ এই নির্দেশনার আওতামুক্ত থাকবে। ৪. নির্বাচনের দিন সকল প্রকার মোটরসাইকেল চলাচল সম্পূর্নরূপে নিষিদ্ধ থাকবে। ৫. বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিমপাড়ায় বসবাসরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ নির্বাচনের দিন তাদের আবাসিক এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র শহীদ সাকিব আনজুম (কাজলা) গেট ব্যবহার করতে পারবেন। তাঁরা আবাসিক এলাকা থেকে প্রস্থানের ক্ষেত্রে প্যারিস রোড হয়ে মেইন গেইট ব্যবহার করার জন্য বলা হয়।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্ততি
নির্বাচনী দিনের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের প্র¯ুÍতি নিতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে ক্যাম্পাসে সিনেট ভবনের পাশে সেন্ট্রাল মনিটরিং বক্স করা হয়েছে। এ ছাড়াও নির্বাচনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গতকাল দিবাগত রাত ১২টা থেকে ১৭ অক্টোবর রাত ১২টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসের আশেপাশের ২০০ গজের ভেতর সকল সভা, সমাবেশ ও অস্ত্র বহন নিষিদ্ধ করেছে পুলিশ।
৯ শিফটে চলবে বাস
নির্বাচনের দিন শিক্ষক, কর্মকর্তা তিন শিফট ও শিক্ষার্থীদের জন্য ছয় শিফট সর্বমোট নয় শিফটে চলবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য সকাল ৭ টা ৫ মিনিট, সকাল ৮ টা ৫ মিনিট ও বিকাল ৫ টা ৫ মিনিটে বাস গন্তব্যস্থলে ছেড়ে যাবে এবং সকাল ৭ টা ৩৫ মিনিট, সকাল ৮ টা ৩৫ এবং ৫ টা ৩৫ মিনিটে ক্যাম্পাসে ফিরবে। শিক্ষার্থীদের বাস সকাল সকাল ৮ টা ৫ মিনিট, ৯ টা ১০ মিনিট, ১১ টা ৫ মিনিট, ২ টা ৫ মিনিট, বিকাল ৪ টা ১০ মিনিট, ৫ টা ১৫ মিনিটে ক্যাম্পাস থেকে ছেড়ে যাবে এবং ৮ টা ৩৫ মিনিট, ৯ টা ৩৫ মিনিট, ১১ টা ৩৫ মিনিট, ২ টা ৩০ মিনিট, বিকাল ৪ টা ৩০ মিনিট, ৫ টা ৩০ মিনিটে পুনরায় ফিরে আসবে।
পোলিং অফিসারদের নিয়ে কমিশন ও কর্তৃপক্ষের সভা: নির্বাচন পরিচালনা পদ্ধতি ও সেদিনের নানান বিষয় নিয়ে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, পোলিং কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা সভা করেছে নির্বাচন কমিশন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সভায় নির্বাচন পরিচালনার নীতিমালা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। গতকাল বিকেল তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে এ সভার আয়োজন করা হয়। এ সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. মাঈন উদ্দিন, অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান, বিভিন্ন হলের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও পোলিং কর্মকর্তরা উপস্থিত ছিলেন।
আচরণবিধিতে নতুন নিয়ম
নির্বাচনী প্রচারণার শুরু থেকে ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সভা-সমাবেশ করে সেখানে খাবার বিতরণের অভিযোগ ছিলো। পরে গত মঙ্গলবারে শিবিরের বিরুদ্ধে প্রজেকশন সভায় খাবার বিতরণের অভিযোগ এনে নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ দেয় ছাত্রদল মনোনীত প্যানেল। পরে গত সোমবার সন্ধ্যায় বেগম খালেদা জিয়া হলে শিবিরের প্যানেলের প্রজেকশন সভায় খাবার বিতরণে বাধা দেয় কমিশন। প্রায় ৪০০ প্যাকেট টেস্টি ট্রিটের নাশতা ফেরত পাঠায় কমিশন।
এ ঘটনায় গতকাল নির্বাচনের মাত্র ২ দিন আগে আচরণবিধির ৪ নম্বর ধারার একটি স্পষ্টিকরণ বিজ্ঞপ্তিতে সমাবেশে হলের অভ্যন্তরের সরঞ্জামাদি ব্যবহার ও খাবার বিতরণ না করার নির্দেশনা দেয় নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. এফ নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
এর প্রতিবাদে শহীদ জিয়াউর রহমান হল, সৈয়দ আমীর আলী হল, নওয়াব আব্দুল লতিফ হল এবং শহীদ হবিবুর রহমান হলে প্রজেকশন সভা স্থগিত করেছে ছাত্রশিবির মনোনীত প্যানেল। গতকাল দুপুরে প্যানেলের ফেইসবুক পেজের এক পোস্টে বিষয়টি জানানো হয়েছে। প্যালেনটি জানায়, আমরা নির্বাচন কমিশনের এই পক্ষপাতমূলক সিদ্ধান্তের কারণে আজকের প্রজেকশন মিটিং স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছি। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন ও ন্যায়নিষ্ঠ শিক্ষার্থী ভাই-বোনেরা অতীতের মতোই আমাদের ওপর আস্থা রাখাবে।
উৎসবমুখর নির্বাচনের আশা উপাচার্যের
সার্বিক বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, রাকসু নির্বাচনের বিষয়ে কমিশন অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। ১৬ তারিখ নির্বাচনকে সামনে রেখে মোটামুটি সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। আমরা নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ৩ স্তরের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে রাখবো। এর বাইরে গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করবে, প্রক্টোরিয়াল বডি কাজ করবে। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের সার্বিক সহায়তায় সবমিলিয়ে নির্বাচন উৎসবমুখর হবে বলে আশা রাখছি।
এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘রাকসু নির্বাচন শিক্ষার্থীদের একটি নির্বাচন। নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের এই ভোট কীভাবে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা যায় আমরা সেটিই দেখব। যেকোনো পরিস্থিতিতে আমরা আমাদের সর্বোচ্চ ধৈর্য দেখাবো। সুন্দর একটি নির্বাচনের জন্য আমাদের সকলের সহযোগিতার প্রয়োজন। সকলের সহযোগিতায় আশা করছি আমরা একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করতে পারব।’