ঢাকা | অক্টোবর ১২, ২০২৫ - ২:১৩ পূর্বাহ্ন

রাকসুকে সামনে রেখে রাবিতে অনুষ্ঠিত হলো নির্বাচনি বিতর্ক

  • আপডেট: Saturday, October 11, 2025 - 9:22 pm

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্যাম্পাসে নির্বাচনি বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার মুক্তমঞ্চে আয়োজিত এই বিতর্ক অনুষ্ঠানে অংশ নেন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সহ-সভাপতি (ভিপি) প্রার্থীরা। বিতর্ক অনুষ্ঠানটি রাকসু নির্বাচন কমিশনের আয়োজনে এবং রাজশাহী ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং ফোরামের সহায়তায় অনুষ্ঠিত হয়।

নির্বাচনি বিতর্কে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও স্বতন্ত্র প্যানেলের সহ-সভাপতি (ভিপি) প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। তারা হলেন- ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের মোস্তাকুর রহমান জাহিদ, ‘রাকসু ফর রেডিক্যাল চেঞ্জ’ প্যানেলের মেহেদী মারুফ, ‘সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেলের তাসিন খান, ‘গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ’ প্যানেলের ফুয়াদ রাতুল, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন সমর্থিত ‘সচেতন শিক্ষার্থী পরিষদ’ প্যানেলের মাহবুব আলম, ছাত্র ইউনিয়ন (একাংশ) সমর্থিত ‘অপরাজেয় একাত্তর অপ্রতিরোধ্য চব্বিশ’ প্যানেলের মাসুদ কিবরিয়া, স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী নোমান ইমতিয়াজ, আব্দুর রব।

বিতর্ক অনুষ্ঠানটি প্রেসিডেন্সিয়াল টিভি ডিবেট ধরনে অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে বিতর্কের চারটি পর্ব ছিল। প্রথম পর্বে প্রার্থীদের উদ্বোধনী বক্তব্য প্রদানে ২ মিনিট করে সময় দেয়া হয়। দ্বিতীয় পলিশি পর্বে প্রার্থীরা তাদের বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য ৩ মিনিট সময় পান। তৃতীয় আসে জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব। চতুর্থ পর্বে আসে সমাপনী বক্তব্য, যেখানে প্রার্থীদের ১ মিনিট সময় দেয়া হয়। বিতর্ক অনুষ্ঠানে প্রার্থীরা তাদের মতামত, দৃষ্টিভঙ্গি ও ইশতেহার ও পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন। উদ্বোধনী পর্বে স্বতন্ত্র ভিপি পদপ্রার্থী নোমান ইমতিয়াজ বলেন, ‘কিছু ব্যক্তি বা প্যানেল তাদের ইশতেহার এমনভাবে সাজিয়েছে যা শিক্ষার্থীদের মনে আসার সঞ্চার করবে ঠিকই কিন্তু পরবর্তীতে বাস্তবায়ন হবে কিনা তার কোনো ঠিক নেই।’

রাজনৈতিক দলগুলো অরাজনৈতিক রাকসুকে রাজনৈতিকভাবে চিহ্নিত করছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘গঠনতান্ত্রিকভাবে রাকসু একটি অরাজনৈতিক সংগঠন, কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো সেটিকে এমনভাবে চিহ্নিত করেছে যে, রাকসুকে আর অরাজনৈতিক সংগঠন বলা যাচ্ছে না। উদাহরণস্বরূপ, রাজনৈতিক দলগুলো ছাত্রশিবির সমর্থিত জোট, ছাত্রদল সমর্থিত জোটসহ অনেকে দলীয় ট্যাগে রাকসু নির্বাচন করছে। তাহলে অবশ্যই বলতে হয়, তারা যেহেতু ট্যাগে নির্বাচন করছে, তার মানে এই প্লাটফর্মকে ব্যবহার করতে চাচ্ছে দলীয় স্বার্থ হাসিলের জন্য অথবা তাদের দলকে গতিশীল করার জন্য। আমাদের সকলের উচিত রাকসু যেহেতু একটি অরাজনৈতিক সংগঠন, সেটা মেনেই কাজ করা।’

পলিসি পর্বে ছাত্রশিবির সমর্থিত সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ। তাদের প্যানেলটিকে ইনক্লসিভ হিসেবে গঠন করা হয়েছে বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা যে প্যানেলটি গঠন করেছি সেটি একটি ইনক্লুসিভ প্যানেল। চাইলে শুধু ছাত্রশিবিরের সদস্যদের নিয়েই প্যানেল গঠন করতে পারতাম, কিন্তু আমরা তা করিনি, বরং বিভিন্ন মতাদর্শের শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্ত করে প্যানেল দিয়েছি। আমাদের প্যানেলে যেমন ‘জুলাই আন্দোলনে আহত যোদ্ধা’ আছেন, তেমনি আছেন নারী প্রার্থীও। আমরা যে ইশতেহার প্রকাশ করেছি, তা ১২ মাস মেয়াদী হলেও ইনশাআল্লাহ ৬ থেকে ৭ মাসেই অধিকাংশ লক্ষ্য বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।’

রাকসুকে গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস গড়ে তোলার হাতিয়ার হিসেবে দেখছেন বলে জানান বাম ছাত্র সংগঠনগুলো সমর্থিত ‘গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী ফুয়াদ রাতুল। বিতর্কে তিনি বলেন, ‘রাকসুকে আমরা গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস গড়ে তোলার এক গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসেবে দেখি। জুলাই আন্দোলনেও আমরা ছাত্রলীগের সন্ত্রাস ও দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছিলাম। নির্বাচিত হলে শিক্ষার্থীদের আবাসন ও খাদ্যসঙ্কট নিরসন, সাইবার বুলিং প্রতিরোধ সেল গঠন এবং রাকসুকে একটি ছায়া সংগঠন হিসেবে সক্রিয় রাখার উদ্যোগ নেব। আমাদের লক্ষ্য একটি ভয়ভীতিহীন, গণতান্ত্রিক ও অংশগ্রহণমূলক বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশ তৈরি করা।’