ঢাকা | অক্টোবর ৬, ২০২৫ - ২:১৭ পূর্বাহ্ন

রাজশাহীতে পাঁচদফা দাবিতে বাসমাশিস’র সংবাদ সম্মেলন

  • আপডেট: Sunday, October 5, 2025 - 10:21 pm

স্টাফ রিপোর্টার: শিক্ষকদের পাঁচদফা দাবি বাস্তবায়নে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি (বাসমাশিস)।

রোববার রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তাদের দাবিগুলো মেনে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও এন্ট্রি পদ নবম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদের জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক শাহনেওয়াজ খান এবং কমিটির সদস্য সচিব ও রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষক শহীদুল্লাহ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতায় ৯টি বিভাগীয় কার্যালয়, ৬৪টি জেলা শিক্ষা অফিস, ৫১৬টি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস, ৬৮৬টি সরকারি কলেজ, ৭০৬টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১০৪টি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ৫টি উচ্চ মাধ্যমিক টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট রয়েছে। মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২১ হাজার ২৩২টি।

এর মধ্যে স্কুলের সঙ্গে কলেজ আছে ১ হাজার ৫১৪টি। আর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের সংখ্যা ২ লাখ ৯৩ হাজার ২৮৯ জন। শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৯০ লাখ ৬৩ হাজার ৪২২ জন। সারাদেশের মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, জনবল এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দেখভাল করার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে মাত্র একজন উপপরিচালক ও দুজন সহকারী পরিচালক আছেন। বিশাল সংখ্যক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চালাতে গিয়ে তারা হিমসিম খাচ্ছেন। অথচ সরকারি মাধ্যমিকের প্রায় ১৫ হাজার শিক্ষকের জন্য পদোন্নতিযোগ্য পদ মাত্র ৪ শতাংশ।

যৌক্তিক কোনো পদসোপান না থাকায় দীর্ঘ ৩২-৩৩ বছর চাকরি করেও অধিকাংশ শিক্ষককে পদোন্নতি ছাড়াই অবসরে যেতে হয়। পদোন্নতি অনিয়মিত, বিধায় বেশকিছু পদ খালি পড়ে থাকে যা পদোন্নতি বঞ্চিতদের হতাশ করার পাশাপাশি মানসম্মত শিক্ষা বাস্তবায়নে অন্তরায় হিসেবে কাজ করে। সরকারি মাধ্যমিকে শিক্ষক-কর্মকর্তারা প্রাপ্য বকেয়া টাইমস্কেল, পদমর্যাদা, পদোন্নতি, পদায়নসহ চাকরির বিভিন্নক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার। তাই শিক্ষকদের পাঁচদফা দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এক্ষেত্রে আদালতের রায় থাকলেও দায়িত্বশীলরা তা আমলে নিচ্ছেন না। এ অবস্থায় তারা আরও কঠোর আন্দোলন, এমনকি আদালত অবমাননার মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- সংগঠনের আহ্বায়ক ও রাজশাহী অঞ্চলের আঞ্চলিক উপপরিচালক আব্দুর রশিদ, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল ওয়াহাব, রাজশাহী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রহিমা আখতার জাহান, গভঃ ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ড. শাহানাজ বেগম, সিরোইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র মণ্ডল, হাজী মুহম্মদ মুহসিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আঞ্জুমান আরা খানমসহ জেলার সরকারি ও বেসরকারি স্কুলের অসংখ্য শিক্ষক-নেতৃবৃন্দ।

তাদের দাবিগুলো হলো- স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করা, সরকারি মাধ্যমিকের সহকারী শিক্ষকের এন্ট্রিপদ নবম গ্রেডে উন্নীত করে চার স্তরীয় পদসোপান, অনতিবিলম্বে আঞ্চলিক উপপরিচালকের প্রশাসনিক এবং আর্থিক ক্ষমতা সংরক্ষণসহ মাধ্যমিকের সকল কার্যালয়ের মর্যাদা রক্ষা করা, বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখার সকল শূন্যপদে নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন এবং বকেয়া সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেলের মঞ্জুরি আদেশ প্রদান। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগামী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে দাবি বাস্তবায়নে পদক্ষেপ না নিলে মানববন্ধন, বিভাগীয় শিক্ষক সমাবেশ এবং জাতীয় পর্যায়ে ঢাকায় শিক্ষক মহাসমাবেশসহ কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।