ঢাকা | সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৫ - ৭:৩৪ পূর্বাহ্ন

চারঘাটে শারদীয় দুর্গোৎসবের আমেজ

  • আপডেট: Monday, September 22, 2025 - 9:00 pm

মোজাম্মেল হক, চারঘাট থেকে: সারাদেশের মত রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শ্বারদীয় দুর্গোৎসবের ধুম ধাম শুরু হয়েছে। চিরা চরিত ধর্মীয় প্রথা অনুযায়ী সারা দেশব্যাপী হিন্দু সম্প্রদায়ের এটি হল সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। শরতের শেষান্তে হেমন্তের আগমনে শিউলি ঝরা আর রজনী গন্ধার সুবাসে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়কে আনন্দের বন্যায় উদ্বেলিত করে তুলেছে। কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী, আবাল ও বৃদ্ধ সকল সনাতন ধর্মালম্বী হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরে ঘরে এখন আনন্দের বন্যা বইছে।

ইতিমধ্যে হিন্দুদের বাড়ি বাড়ি নাড়ু, মুড়ি, খৈ, চিড়া আর নতুন জামা কাপড় তৈরির ধুম পড়ে গেছে। চারঘাট উপজেলায় এ বছর ৩৮টি মণ্ডপে দুর্গাপুজা উদযাপন হবে বলে চারঘাট উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাবেক সভাপতি স্বপন কুমার কর্মকার জানিয়েছেন। সুদুর ব্রিটিশ আমল থেকে চারঘাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়রা তাদের অতীতের স্মৃতি ধারণ করে আসছে। এই চারঘাট উপজেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ বাস করে।

চারঘাট উপজেলার খোর্দ্দগোবিন্দপুর গ্রামের চন্দন সাহা বলেন, এক সময় চারঘাটে দুর্গাপূজা, সরস্বতী পূজা, লক্ষীপূজা, কালিপূজা, চড়কপূজা, দোলযাত্রা ও রথযাত্রাসহ বিভিন্ন ধরনের ধর্মীয় উৎসব পালিত হত। কালের বিবর্তনে সব কিছু হারিয়ে গেলেও আজও চারঘাটের দুর্গাপুজার সুনাম অক্ষুণ্ন রয়েছে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন। ইতিমধ্যেই হিন্দুদের বাড়ি বাড়ি জামাই মেয়ে নিয়ে আসার ধুমধাম শুরু হয়েছে। এ পূজা শরৎকালে হয় বলে একে শারদীয় দুর্গোৎসব বলা হয়।

এর মধ্যে প্রতিমা তৈরির কাজও প্রায় শেষের দিকে এখন চলছে রং তুলির কাজ। আর মাত্র ক’দিন পরেই পূজামণ্ডপ গুলো ঢাক ঢোলের বাজনা আর উলুধ্বনিতে ভরে উঠবে। সন্ধ্যা পুজার সময় ঢাকের বাজনার তালে তালে চলবে বিভিন্ন ধরনে নাচ। দুর্গাদেবীর শুভাগমনে হিন্দু সম্প্রদায়ের মনে এখন আনন্দের বন্যা বইতে শুরু করেছে।

এক সময় দুর্গাপূজাকে ঘিরে পূজা মন্দিরের আঙ্গিনায় চলত যাত্রাগান, পালাগান, জারি, সারি গানসহ বিভিন্ন ধরনের আনন্দ উৎসব। কিন্তু কালের বিবর্তনে সবকিছু হারিয়ে গেছে। মহাময়ী দুর্গাদেবীর শুভাগমনে ধুয়েমুছে যাক সকল প্রকার মহামারী রোগবালা, মুছে যাক সকল মানুষের মনের গ্লানি, বয়ে আনুক দেশের মাঝে সুখ শান্তি এই প্রত্যাশা সকলের।

পুজা মন্দিরগুলো সার্বিক নিরাপত্তার জন্য কয়েক দফা আলোচনা সভা করা হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। চারঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার জান্নাতুল ফেরদৌস ও চারঘাট মডেল থানার (ওসি) মিজানুর রহমান উপজেলার ৩৮ টি পুজা মন্দির পরিদর্শন করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রত্যেকটি পূজা কমিটিকে পরামর্শ দিয়েছে এবং সার্বিক নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছে পুলিশের পাশাপাশি আনসার ভিডিপির সদস্যরাও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন।

হিন্দু ধর্মের তিথী মোতাবেক আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর রোববার সন্ধ্যা ৬ টায় দুর্গাদেবীর আসন গ্রহণ এবং আগামী ২ অক্টোবর বৃহস্পতিবার দুর্গা দেবীর বিসর্জন। এবার দেবীর গজে আগমন ও দোলায় গমন করবে বলে ঠাকুর মহাশয়দের কাছ থেকে জানা গেছে। সবমিলে চারিদিকে দুর্গাপূজার ধুম পড়ে গেছে।