দুর্গাপুরের খাদ্যগুদাম কর্মকর্তার কাছে চাঁদা দাবি, দুই যুবদল নেতার বিরুদ্ধে মামলা

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীর দুর্গাপুর সরকারি খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মাদ রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে দুই যুবদল নেতার বিরুদ্ধে দুর্গাপুর থানায় মামলা করেছেন। পুলিশ বলছে, অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
মামলার দুই আসামি হলেন- রেজাউল করিম (৩০) ও সজিব আলী (২৮)। রেজাউলের বাড়ি দুর্গাপুর পৌরসভার পূর্বসিংগা মহল্লায়, সজিবের বাড়ি পশ্চিমসিংগা এলাকায়। রেজাউল দুর্গাপুর পৌর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য আর সজিব যুবদলের নেতা হিসেবে পরিচিত।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) সকাল প্রায় ১১টার দিকে রেজাউল করিম (৩৩) ও সজিব আলী (২৮) নামের দুই যুবক বিনা অনুমতিতে দুর্গাপুর উপজেলা খাদ্যগুদামে প্রবেশ করেন। গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মাদ রফিকুল ইসলামের অফিসকক্ষে ঢুকে প্রথমে তাঁরা অভিযোগকারীর সামনের চেয়ারে বসেন। এরপর রেজাউল করিম নিজেকে দুর্গাপুর পৌর যুবদলের সাবেক সেক্রেটারি পরিচয় দিয়ে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানারকম অভিযোগ তোলেন।
একপর্যায়ে দুজন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের কাছে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাঁরা ক্ষিপ্ত হয়ে কর্মকর্তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। এমনকি গুদামের বাইরে গেলে তাঁকে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়া হয়। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাজাহান আলম (৫২) এবং বাবুল কুমার প্রামানিক (৪৫) জানান, ওই দুই ব্যক্তি প্রকাশ্যেই সরকারি কর্মকর্তার কাছে টাকা দাবি করেন এবং তাকে ভয়ভীতি দেখান। তাঁরা বলেন, সরকারি দপ্তরের ভেতরে এ ধরনের ঘটনা অত্যন্ত দুঃসাহসিক। প্রয়োজনে তাঁরা আদালতে সাক্ষ্য দিতে প্রস্তুত।
দুর্গাপুর খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও মামলার বাদী রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি একজন সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে সৎভাবে দায়িত্ব পালন করছি। অথচ কর্মস্থলে বসেই আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা দিতে বাধ্য করার চেষ্টা করা হয়েছে। টাকা না দেয়ায় আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়েছে। এতে আমি ভীষণ ভীত ও শঙ্কিত। আমি দ্রুত পুলিশি পদক্ষেপ আশা করছি।
এ বিষয়ে দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুল ইসলাম বলেন, খাদ্যগুদামের খাদ্য কর্মকর্তা বাদী হয়ে দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। অভিযোগ পাওয়ার পর মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুর্গাপুর থানা বিএনপির আহ্বায়ক আয়নাল হক বলেন, চাঁদাবাজ ও লুটতরাজকারীদের বিএনপিতে ঠাঁই হবে না। এ বিষয়ে আমরা গুরুত্ব সহকারে বৈঠক করছি। আজ (গতকাল শুক্রবার) রাত ৯টার দিকে বৈঠকে বসেছি। বৈঠক শেষে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
যুবদল নেতা রেজাউল করিমের দাবি, ৭ টন চাল চুরির বিষয়টি ভিডিও করে সামনে আনার কারণে চাঁদাবাজির মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। উল্টো সেদিন চাল চুরির বিষয়টি ধামাচাপা দিতে টাকা নেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল বলে তাঁদের দাবি।