ঢাকা | সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৫ - ৩:১৯ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

বাগমারায় পঁচা চাল কাণ্ডের রহস্য এখনও অজানা

  • আপডেট: Thursday, September 18, 2025 - 10:55 pm

অভিযোগের তীর কৃষকদল নেতার দিকে:

আবু বাককার সুজন, বাগমারা থেকে: রাজশাহীর বাগমারায় খাদ্যগুদামে সাত কোটি টাকার পচা ও খাওয়ার অনুপযোগী চাল কোথায় থেকে আমদানি করা হয়েছে; সেই রহস্য এখনও উদঘাটন হয়নি। ভবানীগঞ্জ খাদ্যগুদামে বিপুল পরিমাণ পঁচা চাল মজুত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা প্রসাশক ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের পক্ষ থেকে পৃথকভাবে তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু দুই সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও সেই তদন্তের কোন অগ্রগতি আজও দেখা যায়নি। অন্যদিকে এ ঘটনার পেছনে উপজেলা কৃষক দলের একজন নেতা জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সম্প্রতি ভবানীগঞ্জ খাদ্যগুদামে বিপুল পরিমাণ পঁচা ও খাওয়ার অনুপযোগী দুর্গন্ধযুক্ত নিম্নমানের চাল মজুদ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠে। এর প্রেক্ষিতে রাজশাহী জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অধিদপ্তরের কারিগরি পরিদর্শক সিহাবুল ইসলাম ও বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম গত ৪ সেপ্টেম্বর ভবানীগঞ্জ খাদ্যগুদামসহ আশেপাশে থাকা আরো তিনটি গুদামে অভিযান চালিয়ে প্রায় সাত কোটি টাকার পচা ও খাওয়ার অনুপযোগী চাল জব্দ করা হয়।

এ ঘটনায় ভবানীগঞ্জ খাদ্যগুদামসহ ওই তিনটি গুদাম সিলগালা করে দেয়া হয়। একইসাথে পচা ও খাওয়ার অনুপযোগী চাল মজুত করার অভিযোগে ভবানীগঞ্জ খাদ্যগুদামের উপপরিদর্শক বাচ্চু মিয়াকে সাময়িকভাবে বরখাস্তও করা হয়।

এদিকে, গত ৯ সেপ্টেম্বর ভবানীগঞ্জ পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক বাগমারা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে পঁচা চাল মজুত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। এসময় তিনি অভিযোগ করেন, চাল সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে রয়েছেন উপজেলা কৃষক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও বাগমারা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি মনিরুজ্জামান চঞ্চল।

ওই সিন্ডিকেটের অন্য সদস্যরা হলেন- চালকল মালিক সামশুল ইসলাম, মেসার্স ভাই ভাই চালকলের মালিক নজরুল ইসলাম ও চাল ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন। সরকারি গুদামে পচা চাল সরবরাহ করে তারা কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

এর সঙ্গে বরখাস্ত হওয়া ভবানীগঞ্জ খাদ্যগুদামের উপপরিদর্শক বাচ্চু মিয়াসহ খাদ্য বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সরাসরি যোগসাজশ রয়েছে। এর দুদিন পর একই স্থানে চালকল মালিক সমিতির সভাপতি মনিরুজ্জামান চঞ্চল পালটা সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেন; তাদের বিরুদ্ধে পচা চাল সরবরাহের যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা আদৌ সঠিক নয়। কারণ ওই খাদ্যগুদামে তারা সরকারি নিয়ম মেনে শতভাগ ভালমানের নতুন চাল সরবরাহ করেছেন।

সেই চালগুলো গুদাম থেকে অন্যত্র সরিয়ে সংশ্লিষ্ট গুদামের এক কর্মকর্তা অসৎ উদ্দেশে পবা উপজেলার নওহাটা এবং মোহনপুর ও তানোর উপজেলার বিভিন্ন মিল থেকে পচা চাল আমদানি করেছেন। সঠিকভাবে তদন্ত করা হলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে বলেও তিনি দাবি করেন।

এ বিষয়ে রাজশাহীর আঞ্চলিক খাদ্যনিয়ন্ত্রক মাইন উদ্দিন বলেছেন, পচা চাল মজুত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে ভবানীগঞ্জ খাদ্যগুদামের উপপরিদর্শক বাচ্চু মিয়াকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। আর এ ঘটনার সঙ্গে আরও কারা জড়িত রয়েছে সেই বিষয়টি উদঘাটনের জন্য বর্তমানে তিনটি তদন্ত টিম কাজ করছে।