ঢাকা | সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৫ - ৩:৫৫ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

বনসাইয়ের সৌন্দর্যে মুগ্ধ প্রকৃতিপ্রেমীরা

  • আপডেট: Thursday, September 11, 2025 - 10:10 pm

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে চলছে চার দিনের বনসাই প্রদর্শনী। এতে ২৬ জন শিল্পীর প্রায় ২৭০টি বনসাই স্থান পেয়েছে। বরেন্দ্র বনসাই সোসাইটি বৃহস্পতিবার মনিবাজারে চারদিনব্যাপী এ প্রদশর্নীর আয়োজন করেছে। প্রদর্শনী শেষ হবে আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর রাত ৯টায়।

আয়োজকরা জানান, জীবন্ত শিল্প বনসাইয়ের প্রতি মানুষকে আগ্রহী করা তোলা এ আয়োজনের উদ্দেশে। বরেন্দ্র বনসাই সোসাইটি সংগঠনের সদস্যদের নিয়ে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করে থাকে। এতে ভালো সাড়াও মিলছে।

প্রদর্শনীতে গিয়ে দেখা যায়, নান্দনিক সব বনসাই দেখতে ভিড় করছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরাও অভিভাবকদের নিয়ে প্রদর্শনীতে এসেছেন। প্রদর্শনীতে নজর কাড়ছে বৈচি, পাইকড়, লাইকড়, তমাল, শ্যাওড়া ও জিলাপির মতো হারিয়ে যেতে বসা বৃক্ষের বনসাই। দেশি গাছের মধ্যে আছে দেশি বট, ঘুর্নিবীচি ও কামিনী গাছের বনসাই। প্রদর্শনীতে তেতুঁল গাছের একটি বনসাই আলাদা করে মুগ্ধ করছে দর্শনার্থীদের। তিন ফুটের তেতুঁল গাছটিতে ঝুলছে ফুল ও ফল।

প্রকৃতিপ্রেমীরা চাইলেই ৩৫ হাজার টাকায় গাছটি কিনতে পারবেন। এছাড়াও প্রদর্শনীতে বিদেশি গাছের মধ্যে ফাইকাস প্রজাতির মধ্যে বেনজামিনা, রেটুসা, রামফি, গোল্ডেন ও ভাইরেন্স গাছের বনসাই। সেইসাথে বাগান বিলাস, বাওবাব, জেড, ফাইকাস লংআইল্যান্ড ও থাইচেরী ও রঙ্গন ছাড়াও আরও অনেক বনসাই গাছ।

আয়োজনে জায়গা পাওয়া বেশিরভাগ বনসাই এখানে শুধু প্রদর্শনীর জন্য আনা হয়েছে। তবে কিছু বিক্রিও করা হচ্ছে। এগুলোর দাম সর্বনিম্ন এক হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা পর্যন্ত।

আয়োজকরা জানিয়েছেন, উত্তরাঞ্চলে এ ধরনের বনসাই প্রদর্শনী দেখা খুবই বিরল। বনসাই আমাদের জীবনে প্রকৃতির কাছে নিয়ে যাবার একটি মাধ্যম এবং সুন্দর করার অভিনব কৌশল। বনসাই হলো প্রকৃতি প্রেমীদের ভালোবাসার প্রতিচ্ছবি। শহরের কংক্রিটের জীবনে একটু প্রকৃতির ছোঁয়া এনে দিতে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত প্রদর্শনী সবার জন্য উন্মুক্ত। ভালো সাড়াও পড়েছে। রোববার প্রদর্শনী শেষ হবে।

তারা জানান, পুরনো দেয়াল কিংবা ছাদে অনাদরে জন্মানো গাছ সংগ্রহ করে বনসাই করা হয়। দিনে দিনে এসব গাছকে সন্তানের মতো লালন করে নান্দনিক রূপ দেয়া হয়। একেকটা বনসাই করতে ১০-১৫ বছর পর্যন্ত লেগে যায়। এটা একটা শিল্প। সে শিল্প দেখে যখন কেউ মুগ্ধ হয়, তখন আয়োজকদের বুকটা ভরে যায়। দিনের পর দিন ধৈর্য নিয়ে বনসাই করার এটাই আনন্দ, আত্মতৃপ্তি। সে আনন্দ পেতেই বনসাই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে নগরীর মনিবাজারে চারদিনব্যাপী এই প্রদর্শনীতে প্রধান অতিথি থেকে উদ্বোধন করেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা: খন্দকার মো. ফয়সাল আলম। বরেন্দ্র বনসাই সোসাইটির সভাপতি খন্দকার মুহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রদর্শনীতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বরেন্দ্র বনসাই সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক নওরোজ আলি মুহিম।

উল্লেখ্য, বরেন্দ্র বনসাই সোসাইটি হারিয়ে যাওয়া প্রাচীন গাছগুলো সংরক্ষণ করে আসছে এবং প্রকৃতিকে নিজের কাছে রাখার সুন্দর একটি মাধ্যম সৃষ্টি করেছেন।