নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নিয়ামতপুরে চাঞ্চাল্যকর পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী মমতা আক্তার মিমের হত্যাকারীদের দ্রত গ্রেপ্তারসহ ফঁসির দাবি জানিয়েছেন তার সহপাঠীসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী ও এলাকাবাসী।

বুধবার দুপুরে বিদ্যালয় আঙিনায় অনুষ্ঠিত মিমের স্মরণসভা দোয়া ও মা সমাবেশে এ দাবি জানান তারা। স্মরণসভায় বক্তারা বলেন, এটি একটি হত্যাকাণ্ড। মিম বিদ্যালয় যাওয়ার পথে তাকে কৌশলে আটকিয়ে ধর্ষণ করে খুনিরা। এরপর তার মরদেহ বিদ্যালয়ের সন্নিকটের একটি ডোবার পানিতে কলাগাছ চাপিয়ে লুকিয়ে রাখা হয়।

ঘটনার দু-দিনপর গন্ধ ছড়ালে গ্রামবাসী গন্ধের সূত্র ধরে ওই ডোবায় ফেলে রাখা কলাগাছ লাঠি দিয়ে আলগা করলে মিমের দেহের অংশ বিশেষ ভেসে উঠে পানির ওপর। পরে পুলিশকে খবর দিলে মিমের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।

মিমের সহপাঠী পপি ও তোহুরা বন্ধুর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে জানায়, ঘটনার দিন আগেও মিমের সাথে তারা খেলা করেছে, মজা করেছে। আজ সেই বন্ধু বখাটে নেশাগ্রস্তদের কবলে পড়ে নির্মমভাবে খুন হতে হলো। এমনকি একটি পঁচা ডোবায় তার লাশ গুম করা হয়েছিলো। এসব কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়ে তারা। তাদের হৃদয় বিদারক কান্নায় পুরো পরিবেশ স্তব্ধ হয়ে যায়, আকাশ বাতাশ ভারী হয়ে উঠে। উপস্থিত সকলের চোখ বেয়ে নেমে আসে জল। কান্নাজড়িত কন্ঠে তাদের একটায় দাবি এ ঘটনার সাথে জড়িতদের শনাক্ত করে দ্রুত গ্রেপ্তারসহ বিচারের মাধ্যমে ফাঁসি কার্যকর করা। যাতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি আর না হয়।

উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হান্নানের সভাপতিত্ব প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আইয়ুব আলীর সঞ্চালনায় সভায় বক্তৃতা করেন গ্রামবাসী ফিরোজ আল মুজাহিদ, শরিফুল ইসলাম, সহকারী শিক্ষক এনতাজ আলী, লতা খাতুন, মিমের বাবা মিনহাজুল, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সহকারী শিক্ষক আসাদুজ্জামান, সভাপতি ও লক্ষীতাড়া ভাদরন্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমুল হক। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এমন নির্মম খুনের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান।

তিনি ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত আাইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন। তিনি শোক সন্তপ্ত পরিবারকে সমবেদনা জানান এবং আশ্বস্ত করেন যে, মিমের বিচার পেতে তার দপ্তর, উপজেলা প্রশাসন ও জেলা প্রশাস সর্বাত্নক সহযোগিতা করবে। উল্লেখ্য, মমতা আক্তার মিম নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার তল্লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী। গত বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিদ্যালয় যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয় মিম। ঘটনার দু’দিন পর গত শনিবার বিকালে বিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী একটি ডোবা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।