ঢাকা | সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৫ - ৩:০৫ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

রাকসু নির্বাচনে ভিপি পদে ২০ জন জিএস পদে ১৫ জন লড়বেন

  • আপডেট: Monday, September 8, 2025 - 10:28 pm

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ এবং সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনে মোট ৩২২ টি মনোনয়নপত্র দাখিল হয়েছে। কেন্দ্রীয় সংসদে ভিপি (সহ-সভাপতি) ২০ জন এবং জিএস (সাধারণ সম্পাদক) পদে ১৫ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

এর মধ্যে রাকসুতে ২৬০ জন এবং সিনেটে ৬২ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে। এছাড়াও প্রতিটি হল সংসদ নির্বাচনে ১৫টি পদে মোট ১৭টি হলে ৬০৩ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। গত রোববার রাতে রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার এসব তথ্য জানান।

গত ৩১ আগস্ট মনোনয়নপত্র বিতরণ কার্যক্রম শেষ হয়। ওই সময় রাকসুতে ৩৯৫ জন, সিনেটে ৮৪ জন এবং ১৭টি হলে ৭৫৪ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। সেই হিসাবে, মনোনয়নপত্র জমা দেননি রাকসুতে ১২৬ জন, হল সংসদে ১৫১ জন এবং সিনেটে ২২ জন। দাখিলকৃতদের মধ্যে সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে ১৬ জন, ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক পদে ৯ জন, সহকারী ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক পদে ৬, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক পদে ১১, সহকারী সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক পদে ৯, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক পদে ৭, সহকারী মহিলা বিষয়ক সম্পাদক পদে ৮, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক পদে ১৩, সহকারী তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক পদে ৮ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

এ ছাড়া মিডিয়া ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক পদে ১০ জন, সহকারী মিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ১০, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক পদে ৯, সহকারী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক পদে ৮, বিতর্ক ও সাহিত্য সম্পাদক পদে ৯, সহকারী বিতর্ক ও সাহিত্য সম্পাদক পদে ৬, পরিবেশ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক পদে ১২, সহকারী পরিবেশ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক পদে ১৮ এবং নির্বাহী সদস্যপদে ৫৬ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
কোন হলে কতজন প্রার্থী

প্রতিটি হলে ১৫টি পদে হল সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ১৭টি হলে নির্বাচনে অংশ নিতে মোট ৬০৩ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে শেরে বাংলা ফজলুল হক হলে ৪১ জন, শাহ মখদুম হলে ৪৩, নবাব আব্দুল লতিফ হলে ৩০, সৈয়দ আমীর আলী হলে ৪০, শহিদ শামসুজ্জোহা হলে ৩৮, হবিবুর রহমান হলে ৪৯, মতিহার হলে ৪৮, মাদার বখশ হলে ৪২, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে ৫১, শহিদ জিয়াউর রহমান হলে ৪৬, বিজয়-২৪ হলে ৩৫ জন। অন্যদিকে ছাত্রীদের মন্নুজান হলে ২৬ জন, রোকেয়া হলে ২২, তাপসী রাবেয়া হলে ২৪, বেগম খালেদা জিয়া হলে ২০, রহমতুন্নেসা হলে ২১ এবং জুলাই-৩৬ হলে ২৭ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম বলেন, ৮ ও ৯ সেপ্টেম্বর প্রার্থীদের যাচাই-বাছাই শেষে আগামী ১০ সেপ্টেম্বর প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হবে। ওই দিন কোন পদে কে এবং নারী কতজন এসব বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।
সর্বশেষ সংশোধিত তফসিল অনুযায়ী, ১১ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত প্রার্থিতার তালিকায় আপত্তি গ্রহণ ও নিষ্পত্তি, ১৩ সেপ্টেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার এবং ১৪ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। এরপর ২৫ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনে ভোট গ্রহণ ও ফলাফল প্রকাশিত হবে।
দুইটি প্যানেল ঘোষণা

এদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে ‘রাকসু ফর রেডিক্যাল চেঞ্জ’এবং ‘গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ’ নামে দুইটি প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেলে রাকসু ভবনের সামনে ‘রাকসু ফর রেডিক্যাল চেঞ্জ’ ১৯ টি পদে ও সন্ধ্যায় পরিবহন মার্কেটে ‘গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ’ ১৬ টি পদে পৃথক সংবাদ সম্মেলনে এ প্যানেল ঘোষণা করা হয়।

‘রাকসু ফর রেডিক্যাল চেঞ্জ’ প্যানেলে রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনগুলোর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র অধিকার পরিষদ ও ছাত্র ফেডারেশনের নেতা-কর্মীরা আছেন। অন্যদিকে ‘গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ’ প্যানেলে বামপন্থী ছাত্রসংগঠন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, ছাত্র গণমঞ্চ, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র যুব আন্দোলন, বৃহত্তর পার্বত্য চট্রগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতা-কর্মীরা আছেন।

‘রাকসু ফর রেডিক্যাল চেঞ্জ’ প্যানেলে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে আছেন ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি মেহেদী মারুফ। এছাড়া সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে উত্তরণ লেখক ও পাঠক সূতিকাগারের সাবেক সভাপতি আফরিন জাহান এবং সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আল শাহরিয়ার শুভ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এই প্যানেল ঘোষণা করেন রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সদস্য সচিব আমানুল্লাহ আমান।

অন্যদিকে ‘গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ’ প্যানেলে সহসভাপতি (ভিপি) পদে লড়বেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) কোষাধ্যক্ষ কাউছার আহম্মেদ এবং সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ছাত্র গণমঞ্চের আহ্বায়ক নাসিম সরকার। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি রাকিব হোসেন এই প্যানেল ঘোষণা করেন।

রাকসু ফর রেডিক্যাল চেঞ্জ প্যানেলে ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক পদে মেহেদী হাসান মাসুম, সহ-ক্রীড়া সম্পাদক পদে রিদুয়ানুল হক ইমন, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক রাতুল মাহমুদ, সহ-সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক মুবতাসিন ফুয়াদ ধ্রুব, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আবিদা আক্তার লাবণী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক গাজী ফারহান লাবিব, সহ-মিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক মাহমুদুল হাসান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক জুহাইম তামিম, সহ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এফ এম যুবায়ের হাসান, বিতর্ক ও সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক রমজানুল মোবারক, সহ-বিতর্ক ও সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক নাজমুল ইসলাম , পরিবেশ ও সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এ ছাড়া নির্বাহী সদস্য পদে লড়বেন সজীব হোসাইন, ওয়াজিদ শিশির, মাহফুজুল ইসলাম নয়ন এবং আব্দুল হামিদ।

প্যানেল ঘোষণার আগে রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সদস্য সচিব আমানউল্লাহ খান বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী শাসনতন্ত্রের পতনের পর যখন জনমনে গণতান্ত্রিক আকাক্সক্ষা প্রস্ফুটিত হচ্ছে, সেই সময়ে আমরা একটি গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাসের কথা ভাবছি। গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাসে সবাই তাদের রাজনৈতিক আর্দশ সম্মুখে প্রকাশ করতে পারবে, গুপ্ত রাজনীতি বলে কোনো রাজনীতি এই ক্যাম্পসে থাকবে না। আমরা শিক্ষার্থীদের অধিকার নিশ্চিত করতে পারবে এমন একটা রাকসু চাই। যেখানে কেউ নির্বাচিত প্রার্থীর সমালোচনা করতে ভয় পাবে না। এমন একটা চাওয়া থেকে রাকসু ফর র্যাডিক্যাল চেঞ্জ নামে প্যানেল গঠন করেছি।’

অন্যদিকে ‘গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ’ প্যানেলের অন্য সদস্যরা হলেন সাংস্কৃতিক সম্পাদক তারেক আশরাফ, মহিলা বিষয়ক সহ সম্পাদক শ্রেয়সী রায়, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক . হাসান শাহরিয়ার খন্দকার আলিফ, তথ্য ও গবেষণা সহ সম্পাদক মো. সজীব আলী, সহ-মিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক ফাহিম মুনতাসির রাফিন। এ ছাড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মুনতাসির তাসিন, সহ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক রিসার্চ চাকমা, পরিবেশ ও সমাজ সেবা বিষয়ক সম্পাদক আজমাইন আতিক, সহ-পরিবেশ ও সমাজ সেবা সম্পাদক শামীন ত্রিপুরা। নির্বাহী সদস্য পদে লড়বেন আসাদ সাদিক রাফি, আহমেদ ইমতিয়াজ সৈকত, সাজ্জাদ শেখ ও জুনায়েদ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রাকিব হোসেন বলেন,‘ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে গালভরা প্রতিশ্রুতি দিতে আমরা আগ্রহী নই। তার চেয়ে আমরা শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক ক্ষমতা প্রতিষ্ঠার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। কারণ ফ্যাসিস্ট ক্ষমতাধরদের অধীনে জিম্মি জীবন আমরা ভুলে যেতে পারি না।’