ঢাকা | জুলাই ১৩, ২০২৫ - ৮:১৮ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

রাজশাহীতে ‘আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় পৃথক সচিবালয় এর ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময়

  • আপডেট: Sunday, July 13, 2025 - 12:50 am

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী ব্র্যাক লার্নিং সেন্টার মিলনায়তনে শনিবার ‘আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় পৃথক সচিবালয় এর ভূমিকা’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস এসোসিয়েশন এ মতবিনিময় সভা আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আল আসাদ মোঃ আসিফুজ্জামান।

বিভাগের আট জেলার সকল পর্যায়ের বিচারকবৃন্দ মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে বিচারকবৃন্দ ২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহিদ ও আহতদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তাঁদের আত্মত্যাগ গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় এক নতুন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের প্রতীক হিসেবে স্মরণ করেন।

তাঁরা এই আত্মত্যাগকে শোষণ, নিপীড়ন, বৈষম্য এবং ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের এক অবিস্মরণীয় অংশ হিসেবে অবহিত করেন।

সভায় বক্তাগণ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং বিচার বিভাগের প্রকৃত স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য একটি পৃথক সচিবালয়ের প্রয়োজনীয়তার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। তাঁরা জোর দিয়ে বলেন, আইনের শাসন মানে রাষ্ট্র মানুষের খেয়াল-খুশি বা ইচ্ছার দ্বারা নয়, বরং আইন দ্বারা পরিচালিত হবে।

দুঃখজনকভাবে, বাংলাদেশের বিচার বিভাগের সক্ষমতা ও স্বাধীনতা এখনও নির্বাহী বিভাগের উপর বহুলাংশে নির্ভরশীল। বিচারকদের পদ বৃদ্ধি, পদ-সৃজন এবং আদালতের অবকাঠামোগত উন্নয়নের ক্ষমতা নির্বাহী বিভাগের হাতে থাকায় বিচারিক কর্মঘন্টার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না।

তাঁরা বলেন, বিচার বিভাগ তার বাজেটের জন্য সম্পূর্ণরূপে নির্বাহী বিভাগের ওপর নির্ভরশীল, যা তাদের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতাকে খর্ব করে। অর্থনৈতিক দুর্বলতা আদালতের অবকাঠামোগত উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করছে এবং বিচারিক প্রক্রিয়াকে স্থবির করে দিচ্ছে। এসময় বক্তারা বিচার বিভাগের জন্য একটি পৃথক বাজেট কাঠামো এবং স্বাধীন বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠার অপরিহার্যতা তুলে ধরেন।

বিচার বিভাগের উপর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপকে একটি দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে বক্তাগণ বলেন, বিচারকদের বদলি, নিয়োগ, পদায়ন এবং শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিষয়াবলী বহুলাংশে নির্বাহী বিভাগের হাতে ন্যস্ত থাকায় শাসকশ্রেণি ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে বিচারিক প্রক্রিয়ায় অযাচিত প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে।

এর ফলে জনগণের মধ্যে বিচার বিভাগের প্রতি আস্থাহীনতা তৈরি হয়। এই সংকট নিরসনে বিচার বিভাগের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা এবং নির্বাহী ও আইনসভা থেকে এর কার্যকর পৃথককরণ অত্যন্ত জরুরি বলে তাঁরা মত দেন। এসময় বক্তাগণ ‘বিচার বিভাগের সংস্কার না হলে অন্য সকল সংস্কার অর্থহীন হয়ে পড়বে’ মর্মে প্রধান বিচারপতির একটি বক্তব্য স্মরণ করিয়ে দেন ।