ঢাকা | জুলাই ১৩, ২০২৫ - ১১:২১ অপরাহ্ন

পাকিস্তানি অভিনেত্রীর মৃত্যু-রহস্য ঘনীভূত, তদন্তে গলদঘর্ম পুলিশ

  • আপডেট: Sunday, July 13, 2025 - 4:27 pm

অনলাইন ডেস্ক: পাকিস্তানি অভিনেত্রী ও মডেল হুমাইরা আসগরের মৃত্যুকে ঘিরে রহস্য আরও ঘনীভূত হচ্ছে। অন্যদিকে করাচি পুলিশও তাদের তদন্তের পরিসর সম্প্রসারিত করেছে।

গত ৮ জুলাই করাচির ডিফেন্স এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে তার গলিত পচন ধরা মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনাটি নিয়ে একদিকে যেমন শোকের ছায়া নামে, তেমনি জল্পনারও জন্ম দেয়।একই সঙ্গে বিচারের দাবি নিয়ে ঢেউ ওঠে বিনোদন অঙ্গন ও সাধারণ মানুষের মধ্যে।

ফ্ল্যাট মালিকের বক্তব্য

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম সামা টিভিকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে ফ্ল্যাটটির মালিক মিরওয়াইজ খান জানান, হুমাইরা ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ওই ফ্ল্যাটটি প্রতি মাসে ৪০,০০০ টাকা ভাড়ায় নিয়েছিলেন। ২০১৯ সালে চুক্তি নবায়নের কথা থাকলেও তার দাবি অনুযায়ী, হুমাইরা তা করেননি এবং ভাড়া বৃদ্ধিতেও সম্মতি দেননি।

মিরওয়াইজ খান বলেন, অভিনেত্রীর সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল খুবই সীমিত এবং তা কেবল হোয়াটসঅ্যাপেই সীমাবদ্ধ ছিল। হুমাইরা সর্বশেষ ২০২৪ সালের মে মাসের ভাড়া পরিশোধ করেছিলেন এবং তার স্ক্রিনশটও পাঠান হোয়াটসঅ্যাপে।

ফ্ল্যাট মালিক আরও বলেন, যদিও ২০২১ সালে একাধিকবার নোটিশ ও আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তবুও তিনি ফ্ল্যাট ছাড়তে রাজি হননি। এমনকি ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে আদালতের আদেশ তার বিপক্ষে আসার পরও।

তিনি আরও জানান, বহুবার চেষ্টা করেও তিনি হুমাইরার সঙ্গে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হন। প্রতিবেশীদের কাছ থেকেও ফ্ল্যাটে ঝগড়া ও বকেয়া মেইনটেন্যান্স ফি নিয়ে দুটি অভিযোগ পাওয়া গিয়েছিল। আদালতের রায় কার্যকর করার জন্য আবারও সিভিল কোর্টে যান তিনি। শেষপর্যন্ত এক ম্যাজিস্ট্রেটকে আদেশ বাস্তবায়নের জন্য পাঠানো হলে ফ্ল্যাটের ভেতরে হুমাইরার নিথর দেহ পাওয়া যায়—যা সবাইকে হতবাক করে দিয়েছে।

নীরবতা ও অজানা সংকেতের সময়রেখা

এদিকে দেশটির ফ্যাশন স্টাইলিস্ট দানিশ মাকসুদ জানান, তিনি ২০২৪ সালের ২ অক্টোবর হুমাইরার সঙ্গে একটি ফটোশুটে কাজ করেছিলেন। এরপর থেকে আর কোনো যোগাযোগ ছিল না। তিনি জানান, সামাজিক মাধ্যমে হুমাইরাকে খোঁজার চেষ্টা করলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

এদিকে হুমাইরার প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও, তারা কেউ-ই মন্তব্য করতে রাজি হননি।সম্ভবত ভয়ে অথবা ব্যক্তিগত গোপনীয়তার কারণে।

তদন্তে একাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ

করাচি পুলিশ জানিয়েছে, মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনো নিশ্চিত নয়। ফরেনসিক ও ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষা চলছে। এছাড়া হুমাইরার মোবাইল ফোন থেকে প্রাপ্ত নম্বরের তালিকা থেকে ১০ জনকে সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

এরই মধ্যে দুজনকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ভবনটির সাবেক প্রহরীকেও জেরা করা হয়েছে, যিনি ইতোমধ্যেই চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। তার কাছ থেকে মূলত হুমাইরার সঙ্গে কারো কোনো বিরোধ ছিল কি না, বা মাদকের সংশ্লিষ্টতা ছিল কি না, এসব বিষয়ে তথ্য নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

করাচি পুলিশ আরও জানিয়েছে, সোমবার আরও কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হবে।

কর্মকর্তারা বলছেন, হুমাইরার জীবনের শেষ কয়েক মাসের তথ্য জানতে তারা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন।