ঢাকা | জুলাই ১৩, ২০২৫ - ১:২৬ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

রাজশাহীতে টানা বৃষ্টি, জনজীবনে ভোগান্তি

  • আপডেট: Thursday, July 10, 2025 - 12:48 am

ড্রেন পরিষ্কার না করায় নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতা:

স্টাফ রিপোর্টার: থেমে থেমে টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে রাজশাহী নগরীতে জলাবদ্ধতা ও জনদুর্ভোগ বেড়েছে। বিশেষ করে বুধবারের টানা বৃষ্টিতে এই দুর্ভোগ আরও চরম আকার ধারণ করেছে।

গত মঙ্গলবার রাত থেকে গতকাল বুধবার রাত পর্যন্ত নগরজুড়ে কখনো মাঝারি, আবার কখনো মুষলধারে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে গতকাল সকাল থেকেই ভোগান্তিতে পড়েছেন স্কুল, কলেজগামী শিক্ষার্থী ও কর্মজীবী মানুষ। অনেকেই গতকাল সকালবেলা সময়মতো কর্মস্থলে পৌঁছাতে পারেননি। কেউ কেউ বাধ্য হয়ে বাড়িতেই থেকে গেছেন।

দিনমজুর, রিকশাচালক ও খেটে খাওয়া মানুষের জন্য দিনটি হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ। এছাড়াও টানা বৃষ্টিতে শহরের নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়ায় বেকায়দায় পড়েছেন নগরবাসী। রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানায়, গত মঙ্গলবার থেকে গতকাল বুধবার রাত ৯টা পর্যন্ত রাজশাহীতে ৭৫ দশমিক ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। চলমান এই বৃষ্টিপাত আগামী কয়েকদিন থাকতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

গতকাল বুধবার সকালে দেখা গেছে, টানা বৃষ্টিতে শহরের নিচু এলাকা যেমন ১৫, ১৬, ১৭, ১৮, ৬, ৭, ৩, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার রাস্তাগুলোতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। শুধুমাত্র জলাবদ্ধতাই নয়, ড্রেনের ময়লা পানি বৃষ্টির পানির সঙ্গে মিশে গিয়ে রাস্তায় উঠে আসায় স্বাস্থ্যগত দিক দিয়েও দুর্ভোগে পড়েছেন নগরবাসী।

নগরবাসীর অভিযোগ, নগরীর সড়ক, ড্রেনেজ, স্যুয়ারেজসহ উন্নয়নকাজের ধীরগতি ও নিচু এলাকার ড্রেন নিয়মিত পরিষ্কার না করার কারণে বৃষ্টি এবং জলাবদ্ধতার কাছে তারা জিম্মি হয়ে পড়েছেন। নিজে নিজেই এসব পানি না নামা পর্যন্ত তাদের ভোগান্তির শেষ নেই। নগরী ঘুরে দেখা গেছে, টানা বৃষ্টিতে নগরীর বেশির ভাগ রাস্তাঘাটের ড্রেন উপচে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন রাজশাহী নগরের রিকশাচালকরা। জিরোপয়েন্ট এলাকায় দোকানের ছাউনির নিচে রিকশা ফেলে আশ্রয় নিয়েছেন কয়েকজন। তাদের একজন বলেন, লোকজন বের হয় না, তাই ভাড়া পাই না। রিকশার চাকা না ঘুরলে খাওয়া জোটে না।

কয়েকদিন ধরে যা বৃষ্টি হচ্ছে, মনে হয় না খেয়ে থাকতে হবে। মথুরডাঙা এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, প্রতিবারই বৃষ্টি হলে এলাকার রাস্তাঘাট ডুবে যায়। এবারও একই অবস্থা। একদিনের বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা। বাসা থেকে বের হতে পারি না। সিটি করপোরেশন শুধু আশ্বাস দেয়, কাজ করে না। রাজশাহী কলেজের এক শিক্ষার্থী জানান, সকাল থেকে যানবাহন পেতে অনেক কষ্ট হয়েছে। রাস্তায় যানজট, ক্লাসে সময়মতো পৌঁছানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে সক্রিয় মৌসুমি বায়ু এবং লঘুচাপের প্রভাবে আগামী কয়েকদিন সারা দেশে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি/বজস্রহ বৃষ্টি হতে পারে।

সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে। পূর্বাভাসে বলা হয়, সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক তরিকুল নেওয়াজ কবির স্বাক্ষরিত পূর্বাভাসটিতে জানানো  হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে ফেনীতে, ৩৯৯ মিলিমিটার।

রাজধানী ঢাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।  গত মঙ্গলবার সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা ছিল রংপুরের ডিমলায়, ৩৪.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সবচেয়ে কম তাপমাত্রা ছিল রাঙ্গামাটিতে, ২২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।