চালের বাজারে অস্থিরতা মজুদদারদের অসাধু সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে

সম্পাদকীয়
দেশে চালের বাজারে অস্থিরতা চলছেই। রাজধানীর খুচরা বাজারে চিকন চালের (মিনিকেট) দাম কেজিতে ৮ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। মাঝারি ও মোটা চালও কেজিতে ৩ থেকে ৫ টাকা বেড়েছে। দাম বেড়েছে চট্টগ্রামসহ দেশের অন্যান্য জেলায়ও।
চট্টগ্রামে ৫০ কেজি চালের বস্তায় দাম বেড়েছে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরা খবর থেকে জানা যায়, কিছু মিলার ও ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট বাজার অস্থির করার জন্য মূলত দায়ী।
অভিযোগ আছে, কিছু মিলার হঠাৎ করে উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছেন। কিছু মোকাম মালিক চালের সরবরাহ বন্ধ রেখেছেন বা কমিয়ে দিয়েছেন। উদ্দেশ্য, দাম বাড়িয়ে অধিক লাভে চাল সরবরাহ করা।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সরকারের উপযুক্ত নজরদারির অভাবে অসাধু কিছু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়া গেলে বাজার আরী অস্থির হবে।
চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম মানুষের নাগালের বাইরে চলে যেতে পারে। জানা যায়, খুচরা বাজারে মিনিকেট চাল মানভেদে প্রতি কেজি ৮২ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা ঈদের আগে ছিল ৭২ থেকে ৮২ টাকা।
ব্রি-২৮ ও পাইজাম চাল কেজিতে তিন থেকে পাঁচ টাকা বেড়ে ৬০ থেকে ৬৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, এই ভরা মৌসুমে মিলাররা সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়িয়েছেন। এর প্রভাব পড়েছে পাইকারি ও খুচরায়। গত বছরের তুলনায় এ বছর মিনিকেট চাল কেজিতে ১৪ টাকা বেশি।
এক বছরে মোটা চাল ব্রি-২৮ প্রতি কেজিতে আট টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। চালের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে মানুষ রাস্তায় নামতেও শুরু করেছে। সংশ্লিষ্টদের মতে, বোরো মৌসুম শেষে চালের দাম বেশি থাকার যৌক্তিক কোনো কারণ নেই।
মূলত সরকারের ব্যবস্থাপনা সমস্যার কারণেই দীর্ঘ মেয়াদে বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারকে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশে ধান-চালসহ পণ্য মজুদের সুনির্দিষ্ট আইন আছে।
আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে যারাই মজুদ করবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনে চাল আমদানির উদ্যোগ নিতে হবে। বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে হবে।
মিলার, ব্যবসায়ী ও মজুদদারদের অসাধু সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। ভোক্তাদের স্বার্থ ও অধিকার নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেয়া যাবে না।