ঢাকা | জুলাই ৪, ২০২৫ - ৮:১৩ পূর্বাহ্ন

রাবি চারুকলা অনুষদের শিক্ষককে শারীরিক লাঞ্ছনার অভিযোগ সহকর্মীর বিরুদ্ধে 

  • আপডেট: Friday, July 4, 2025 - 12:02 am

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা অনুষদের এক জ্যেষ্ঠ অধ্যাপককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে একই অনুষদের এক সহকর্মীর বিরুদ্ধে।

চারুকলা অনুষদের ডিনের (অধিকর্তা) কক্ষে গত বুধবার  অনুষদের ২৯ তম সাধারণ সভা চলাকালীন এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগকারী শিক্ষক এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়ে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

অভিযুক্ত শিক্ষক হলেন চারুকলা অনুষদের মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুস ছালাম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরের দায়িত্বে আছেন। অন্যদিকে অভিযোগকারী শিক্ষক চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের অধ্যাপক  আবদুস সোবাহান।

লিখিত অভিযোগপত্রে অধ্যাপক  আবদুস সোবাহান উল্লেখ করেছেন, ‘গত বুধবার চারুকলা অনুষদের অধিকর্তার কক্ষে অনুষদের ২৯তম সাধারণ সভা চলাকালীন অনুষদভুক্ত বিভাগসমূহে সান্ধ্যকালীন মাস্টার্সসহ চারুকলায় ডিপ্লোমা ও সার্টিফিকেট প্রোগ্রাম চালুকরণ প্রসঙ্গ উপস্থাপিত হলে আমি মতামত দেই।

আমার কাছে মনে হয়েছে, সান্ধ্যকোর্স চালু হলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের স্বকীয়তা বিনষ্ট হতে পারে। এ সময় আমি বলি, সান্ধ্যকালীন মাস্টার্সসহ ডিপ্লোমা ও সার্টিফিকেট প্রোগ্রামের বিষয়গুলো বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় চালু হয়েছিল।

ফ্যাসিস্ট সরকারের বিষয়টি বলায় মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য বিভাগের আওয়ামীপন্থী শিক্ষক অধ্যাপক মোস্তফা শরীফ আনোয়ার আমার সঙ্গে উচ্চস্বরে কথা বলায় তাঁর সঙ্গে আমার উচ্চবাচ্য হয়।’

অধ্যাপক আবদুস সোবাহান আরও উল্লেখ করেন, ‘ওই সময় একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুস ছালাম আমার মতামতকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে আমাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘একে বের করে দেয়া হোক’।

যা সম্পূর্ণ তাঁর এখতিয়ারের বাইরে। এ সময় আমি দু-পা সামনে এগিয়ে গিয়ে বলি, ‘তুমি আমাকে বের করে দিতে বলার কে?’। ওই মুহূর্তে আব্দুস ছালাম উত্তেজিত হয়ে আমার কোমর জাপটে ধরে ওপরে তোলে এবং বলপ্রয়োগ করে চেয়ারে বসিয়ে দেয়।’

এ ব্যাপারে চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের অধ্যাপক ড. আবদুস সোবাহান বলেন, ‘মিটিং চলাকালে আমার মতামতকে অগ্রাহ্য করে সহযোগী অধ্যাপক আব্দুস ছালাম আমাকে বের করে দেওয়ার কথা বলেন। যা তার এখতিয়ার বহির্ভূত। আমি এর প্রতিবাদ করলে আমার কোমর ধরে চেয়ারে বসিয়ে দেন।

সকল সহকর্মীর সামনে এই ধরনের শারীরিক লাঞ্ছনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচরণবিধির চরম লঙ্ঘন এবং একজন অধ্যাপক হিসেবে আমার জন্য অত্যন্ত অপমানজনক।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুস ছালাম বলেন, ‘উনাকে (অধ্যাপক আবদুস সোবহান) চেয়ারে বসিয়েছি এটা সত্য, তবে লাঞ্ছনার উদ্দেশ্যে নয়। সভায় একটি বিষয়ে সবাই যখন একমত তখন তিনি একা ভিন্নমত পোষণ করে উত্তেজিত হয়ে পড়েন।

সেখানে তিনি রাজনৈতিক বক্তব্যের মতো কথা বলেছেন, যদিও সেটা কোনো রাজনৈতিক ক্ষেত্র ছিল না। তখন আমি ডিন মহোদয়কে অনুরোধ করি উনাকে থামান। এই কথাটা বলা যেন আমার অন্যায় হয়ে গেছে!’

সার্বিক বিষয়ে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী চারুকলা অনুষদের অধিকর্তা অধ্যাপক  মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘সভায় একটি বিষয়ে আলোচনা চলছিল। আলোচনার একপর্যায়ে একজন শিক্ষকের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে অধ্যাপক সোবাহান উত্তেজিত হয়ে সভার এজেন্ডা বহির্ভুত অপ্রাসঙ্গিক কথাবার্তা বলতে শুরু করেন।

তখন সহযোগী অধ্যাপক ছালাম অধ্যাপক সোবহানকে আস্তে কথা বলতে বললে অধ্যাপক সোবহান উত্তেজিত হয়ে সহযোগী অধ্যাপক সালামের দিকে তেড়ে যান।

তখন আমি, সহযোগী অধ্যাপক ছালামসহ আরও কয়েকজন শিক্ষক উনাকে তাঁর জায়গায় গিয়ে কথা বলতে বললে তিনি আপত্তি করেন। তখন সহযোগী অধ্যাপক সালাম পরিস্থিতি সামাল দিতে অধ্যাপক সোবহানকে কোলে করে তার জায়গায় নিয়ে বসিয়ে দেন।’

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS