ঢাকা | জুলাই ৪, ২০২৫ - ৯:৩৮ পূর্বাহ্ন

চারঘাটে গবাদিপশুর চর্মরোগের প্রাদুর্ভাব

  • আপডেট: Thursday, July 3, 2025 - 11:00 pm

মোজাম্মেল হক, চারঘাট থেকে: চারঘাটে ভাইরাসজনিত সংক্রামক ‘ল্যাম্পি স্কিন’ নামক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে গরু। ভ্যাকসিন সরবরাহ না থাকায় উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে এ রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।

এই চর্মরোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন খামারিরা। জানা যায়, ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজ (পক্স জাতীয়) গবাদিপশু, বিশেষ করে গরুর নতুন একটি রোগ এটি।

ল্যাম্পি স্কিনের ভাইরাসটির উৎপত্তি আফ্রিকায়। এরপর ভারতে এটি দেখা যায়। সম্প্রতি অন্য দেশ থেকে আসা গরুর মাধ্যমে এই জীবাণু দেশে প্রবেশ করেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

প্রথমে গরুর চামড়ার ওপরের অংশে টিউমার জাতীয় ও বসন্তের মতো গুটি গুটি উপসর্গ দেখা দেয়। এরপর দু-এক দিনের মধ্যেই গরুর শরীরজুড়ে গুটি গুটি হয়ে ঘায়ে পরিণত হয়।

এ সময় শরীরে ১০৪-১০৭ ডিগ্রি তাপমাত্রার জ্বর দেখা দেয়। মুখ দিয়ে লালা পড়তে থাকে এবং গরু খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দেয়। অনেক সময় গরুর বুকের নিচে পানি জমে ক্ষত সৃষ্টি হয় এবং ক্ষতস্থান পচে গিয়ে সেখান থেকে মাংস খসে খসে পড়ে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চারঘাটে ৩৫০টি গরুর খামার রয়েছে। এর মধ্যে রেজিস্ট্রিকৃত রয়েছে ১৪ টি। প্রতিদিনই উপজেলার নানা প্রান্ত থেকে ল্যাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত পাঁচ থেকে ছয়টি গরুকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসছে কেউ না-কেউ। উপজেলায় এখন ল্যাম্পি স্কিন রোগে শতাধিক গরু আক্রান্ত।

গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে উপজেলার শলুয়া ইউনিয়নের হলিদাগাছী সরদারপাড়া গ্রামের খামারি বাচ্চুর সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, গত সপ্তাহে হঠাৎ তাঁর গরুর শরীরের বিভিন্ন স্থান ফুলে ওঠা শুরু করে।

এরপর গরু খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে দেওয়ার পর মারা যায়। আরও একটি গরু মারাত্মক ভাবে আক্রান্ত হয়ে আছে। চিকিৎসক বলছেন, রোগ ভালো হতে সময় লাগবে। এটি ভাইরাসজনিত রোগ। প্রতিদিনই এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে গরু।

লোকেরা নিয়ে আসছেন চিকিৎসার জন্য। আক্রান্ত গরুগুলোকে সাধারণ চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। সেগুলোর সুস্থ হতে সময় লাগবে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সরকার এনায়েত কবির বলেন, মশা ও মাছির মাধ্যমে ভাইরাসটি ছড়ায়। তাই আমরা খামারে গিয়ে এর আশপাশ পরিষ্কার রাখার পরামর্শ দিচ্ছি। এটি ভাইরাসজনিত রোগ।

আক্রান্ত গরু গুলোকে সাধারণ চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। সেগুলো সুস্থ হতে সময় লাগবে।

তিনি বলেন, সরকারি ভাবে প্রতিষেধক কোন ভ্যাকসিন নেই তবে বাংলাদেশ প্রানীসম্পদ গবেষণায় ইনস্টিটিউট কর্তৃক হয়েছে কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে বরাদ্দ নেই। তবে বেসরকারিভাবে বিভিন্ন কোম্পানিকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে যাতে এই ভ্যাকসিনগুলো দিয়ে গরুগুলো সুস্থ থাকে।

সরকার এনায়েত কবির বলেন, আমরা উঠান বৈঠকের মাধমে খামারিদের ল্যাম্পিং স্ক্রিন রোগ থেকে সর্তক থাকার জন্য পরামর্শ দিচ্ছি। তিনি আরও বলেন, গরুর বাছুর হওয়ার পর পরই প্রতিষেধক ভ্যাকসিন দেয়ার কথা বলা হচ্ছে যেনো ল্যাম্পিং স্কিন রোগ থেকে সুস্থ থাকতে পারে বলে তিনি জানান।

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS