ঢাকা | জুলাই ৪, ২০২৫ - ১:০৪ পূর্বাহ্ন

পরিত্যক্ত প্লাস্টিক বোতল দিয়ে ‘বোতল বাড়ি

  • আপডেট: Thursday, July 3, 2025 - 12:38 am

সাইদ সাজু, তানোর থেকে: বাতিল মানেই ফেলে দেয়া নয়, এই কথাকে বাস্তব রুপ দিয়ে পরিবেশের ক্ষতিকারক রং বেরঙের পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে স্বল্প খরচে স্বপ্নের বাড়ি নির্মান করে সবাইকে চমকে দিয়েছেন রাজশাহীর তানোর উপজেলা সরনজাই ইউনিয়নের ভাগনা গ্রামের বিদেশ ফেরৎ আলমগীর হোসেন।

বাড়ি নির্মান কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন চলছে বাড়ি সাজানোর কাজ আর কয়েক দিনের মধ্যেই আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করে পরিবার নিয়ে বসবাস শুরু করবেন তিনি।

বরেন্দ্র অঞ্চলের প্রাণ কেন্দ্র রাজশাহীর তানোর উপজেলায় এটাই প্রথম নির্মিত পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বোতলের তৈরি বাড়ির খবর ছড়িয়ে পড়ায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের পাশাপাশি আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। ড়২৫ হাজার বিভিন্ন কোমল পানির প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে সুনিপুন ভাবে ২টি বেডরুম, টয়লেট ও বাথরুমসহ তৈরি বাড়িটি চমৎকার দেখাচ্ছে।

গ্রামের  গোছানো এই বাড়িটিতে বোতলসহ  সিমেন্ট, বালি, কাঠ ও উপরে রঙ্গিন টিনের ছাউনি দিয়ে মিস্ত্রিসহ খরচ হয়েছে আড়াই লাখ টাকা।

আলমগীর হোসেন বলেন, রাজমিস্ত্রির রড়ের কাজে দীর্ঘদিন বিদেশে ছিলাম, ইউটিউবে একটি ভিডিও দেখে দেশে এসে এমন একটি বাড়ি তৈরির পরিকল্পনা নিয়ে দোকান পাটসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ১২ হাজার টাকা খরচ করে ২৫ হাজার বোতল সংগ্রহ করে ২০২৪ সালের মাঝমাঝিতে শুরু করি বাড়ি তৈরির কাজ।

তিনি বলেন, এই বাড়িটি তৈরিতে খরচ হয়েছে ৪ লাখ টাকা। বোতল ছাড়া এমন একটি বাড়ি তৈরি করতে খরচ হবে ৬ লাখ টাকা থেকে ৭ লাখ টাকা। বাড়ি তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে এখন চলছে ফিনিসিং।

বাড়ির কাজ শুরুর পর থেকেই বিভিন্ন এলাকার লোকজন আসছেন দেখতে। বাড়ি নির্মানে সময় লেঘেছে ৬ মাস। অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই আনুষ্ঠানিক ভাবে বাড়িটি উদ্বোধনের পর পরিবার নিয়ে বসবাস শুরু করবেন বলেও জানান তিনি। তার এই বাড়িটি তৈরি করা হয়েছে প্লাস্টিক বোতলে বালি ও মাটি ভরে ইট হিসেবে সিমেন্ট দিয়ে দেয়াল তৈরি ও  পিলার, উপরে টিনের চালা।

ভূমিকম্প রোধক ও বুলেট প্রুভ বাড়ি নির্মাণ কাজ শুরু করে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, শুরুতে আলমগীর হোসেনের বাড়ি তৈরি করা দেখে পাগলামী মনে হচ্ছিল।

এখন দেখছি সত্যি সত্যি প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে অসাধারন একটি বাড়ি তৈরি করেছেন আলমগীর হোসেন। কয়েকটা করে বোতল সংগ্রহ করতে করতে একটি বাড়ি তৈরি করে সবাইকে চমকে দিয়েছেন আলমগীর হোসের। স্বল্প খরচে ব্যতিক্রম চমৎকার এই বাড়িটি তৈরি করে ইতিহাস গড়েছেন তিনি বলেও জানান প্রতিবেশীরা।

এমন বাড়ি তৈরির জন্য ইচ্ছে প্রকাশ করছেন অনেকেই। এ ব্যাপারে তানোর উপজেলা প্রকৌশলী সাইদুর রহমান বলেন, এধরনের বাড়িতে খরচ কিছুটা কম হবে সেটা নিশ্চিত। তবে বোতল বাড়ি কতোটা টেকসই (দীর্ঘস্থায়ী) এবং পরিবেশ বান্ধব তা পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হলে বোঝা যাবে বলেও জানান তিনি।

তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) লিয়াকত সালমান বলেন, প্লাস্টিক পরিবেশ দূষণ করে। কিন্তু তানোরে সেই প্লাস্টিককে ইতিবাচকভাবে কাজে লাগিয়ে আলমগীর যে বাড়ি তৈরি করেছেন, তা অত্যন্ত পরিবেশবান্ধব।

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS