ঢাকা | জুলাই ২, ২০২৫ - ১২:৪৮ অপরাহ্ন

শিরোনাম

শীতল পাটির শীতল পরশ

  • আপডেট: Wednesday, July 2, 2025 - 12:26 am

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: গরমে কদর বেড়েছে সিরাজগঞ্জের শীতল পাটির। এটি বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী কুটিরশিল্প। প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী এই পাটির দাম ও চাহিদা বেড়েছে দেশজুড়ে। ফলে এ শিল্পের সাথে জড়িতরা অনেকটাই উচ্ছ্বসিত।

শিল্পটির জন্য গতিশীল বাজার সৃষ্টিতে সরকারি সহযোগিতা চেয়েছেন পাটি শিল্পীরা। কারিগরেরা নিজেদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে এই পাটি তৈরি করছেন এখনও। সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ, রায়গঞ্জ ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় তৈরি হচ্ছে শীতল পাটি।

মুর্তা বা পাটি বেত নামক গুল্মজাতীয় উদ্ভিদের ছাল থেকে এটি তৈরি হয়ে থাকে। উপজেলাগুলোর বিভিন্ন গ্রামের পেক্ষাকৃত অনুর্বর জমিতে এর প্রধান উপকরণ পাটি বেত চাষ হচ্ছে।

পাটিশিল্পের কারিগরদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রাচীনকাল থেকেই দেশ-বিদেশে শীতল পাটি বহুল সমাদৃত। এখানকার মুর্তাবেতির শীতল পাটির চাহিদাও প্রচুর।

কামারখন্দ উপজেলার চাদপুর, রায়গঞ্জ উপজেলার ধানগড়া ইউনিয়নের আটঘরিয়া ও দরবস্ত গ্রামের মানুষ শীতল পাটি বুনে তাদের প্রাচীন ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রেখেছেন। গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের অধিকাংশ পরিবার এ শিল্পের সাথে জড়িত। দেশের নানা প্রান্ত থেকে পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা অগ্রিম টাকা দিয়ে শীতলপাটি কিনে নেন।

সংসারের কাজের ফাঁকে বাড়ির নারীরাই তৈরি করেন  নান্দনিক পাটি। এলাকা গুলোতে কয়েক দশক আগেও আয়ের প্রধান উৎস ছিল শীতলপাটি। গরমে প্রশান্তি পেতে শীতলপাটি ব্যবহার করলেও বিয়ে, গায়ে হলুদ, খাৎনাসহ নানা অনুষ্ঠানে এর ব্যাপক ব্যবহার ছিল। যা এখন অনেকটাই কমে গেছে।

সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্লাস্টিক পাটির আগ্রাসনে এ পাটির কদর দিন দিন কমতে শুরু করেছে। এক সময় পাটি বুনে যাদের সংসার চলত, তারা  অনেকেই এখন এ পেশা ছেড়ে দিয়েছেন।

তবে আটঘরিয়া ও দরবস্ত চাঁদপুর ও চুনিয়াহাটি এলাকায় এখনও প্রায় দুই শতাধিক পরিবারের নারী পুরুষ এ ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন। ৯০ বছর বয়সী দুলাল চন্দ্র ভৌমিক বলেন, ছোট বেলা থেকে তিনি শীতল পাটি তৈরি করে আসছেন। যা তাদের পারিবারিক ঐতিহ্য।

চাঁদপুর গ্রামের স্বপ্না রানী জানান, এক সপ্তাহে একটি পাটি বোনা যায়। এতে মুজুরি আসে ৫/৬শ টাকা। তিনি বলেন, এখন শীতল পাটির কদর আগের মতো নেই। সরকারিভাবে সহযোগিতা করা হলে এ শিল্প টিকে থাকবে।

গরমে পাটির বাজার চাঙ্গা থাকায় হরেক নকশায় বুননে দিন-রাত পাড় করছে শিশু, বৃদ্ধসহ নানা বয়সীরা। বর্তমানে প্রতিটি পাটি পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১৫শ  থেকে ২ হাজার টাকায়।

এতে মজুরি বাদে তেমন লাভ না হওয়ায় অন্যান্য দেশে বাজারজাতসহ সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা দাবি করলেন পাটিশিল্পীরা।

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS