ঢাকা | জুন ৩০, ২০২৫ - ৫:২৩ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

১৩ পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত

  • আপডেট: Monday, June 30, 2025 - 12:14 am

সোনালী ডেস্ক: ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীতে বড় ধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়। সেই পটভূমিতে পুলিশের অনেক কর্মকর্তা কর্মস্থলে ফিরে এলেও, অনেকে কয়েকদিন পর থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে যান।

দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকা এমন ১৩ জন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সরকার। এ ছাড়া, পৃথকভাবে যৌতুকবিরোধী মামলায় আরও একজন সহকারী পুলিশ সুপারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ-১ শাখা থেকে এ সংক্রান্ত মোট ১৪টি পৃথক প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়। প্রজ্ঞাপনগুলোতে সই করেছেন উপসচিব নাসিমুল গনি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর বিধি ৩(গ) অনুসারে পলায়নের অপরাধে অভিযুক্ত হওয়ায় এবং জনস্বার্থে এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সাময়িক বরখাস্তকালীন সময়ে বরখাস্তকৃত কর্মকর্তারা খোরপোষ ভাতা পাবেন। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সাময়িক বরখাস্ত হওয়া ১৪ কর্মকর্তার মধ্যে রয়েছেন- ১. পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন- এটিইউ-এর সাবেক পুলিশ সুপার।

বর্তমানে বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত। তিনি ১ জানুয়ারি থেকে বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন ২. পুলিশ সুপার শাহজাহান- রংপুর জেলার সাবেক পুলিশ সুপার। বর্তমানে চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত। তিনি ১৬ জানুয়ারি থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ৩. পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল- নারায়ণগঞ্জ জেলার সাবেক পুলিশ সুপার।

বর্তমানে বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত। তিনিও ১ জানুয়ারি থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ৪. অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এম জাহাঙ্গীর হাছান- নৌ পুলিশের কর্মকর্তা। ২০২৩ সালের ৩ অক্টোবর থাইল্যান্ডে চিকিৎসার জন্য ১৫ দিনের ছুটি নিয়ে যান। ছুটি শেষে কর্মস্থলে না ফিরে তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসার জন্য আরও ৬০ দিনের ছুটি নেন।

এরপরও দেশে ফেরেননি ৫. অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহ আলম মো. আখতারুল ইসলাম- রমনা বিভাগের সাবেক এডিসি। বর্তমানে সিলেট ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে কর্মরত। ২৬ জানুয়ারি থেকে অনুপস্থিত ৬. অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এম শামীম- ডিএমপির সাবেক এডিসি।

২০২৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন ৭. অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতেখায়রুল ইসলাম- ডিএমপির সাবেক এডিসি, বর্তমানে কক্সবাজার এপিবিএনে কর্মরত। ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে অনুপস্থিত ৮. অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিশু বিশ্বাস- ডিএমপি ডিবির সাবেক এডিসি, বর্তমানে জামালপুর ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে কর্মরত।

২০২৩ সালের ২৬ অক্টোবর থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ৯. অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান মোল্যা- রাঙ্গামাটি এপিবিএনে কর্মরত ছিলেন। ২ ফেব্রুয়ারি থেকে অনুপস্থিত ১০. অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রুবাইয়াত জামান- তেজগাঁও বিভাগের সাবেক এডিসি, বর্তমানে সুনামগঞ্জ ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে কর্মরত।

২৯ জানুয়ারি থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ১১. অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদুর রহমান- বরিশাল র‌্যাব-৮-এর ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার। ২০২৩ সালের ১৩ নভেম্বর থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ১২. সহকারী পুলিশ সুপার মো. মাহমুদুল হাসান- রাজারবাগ পুলিশ টেলিকম ভবনে কর্মরত ছিলেন।

২০২৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে অনুপস্থিত ১৩. সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইমরুল- কক্সবাজার উখিয়া এপিবিএনে কর্মরত ছিলেন। ২৮ জানুয়ারি থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ১৪. সহকারী পুলিশ সুপার আল ইমরান হোসেন- রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত ছিলেন। ২০২০ সালের যৌতুকবিরোধী মামলার কারণে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “৫ আগস্টের পর থেকে প্রশাসনে অস্থিরতা ছিল। অনেকেই দেশে ছিলেন না। যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন, তদন্তে তাদের বিরুদ্ধে পলায়নের প্রমাণ মেলায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” সরকারি সূত্রগুলো বলছে, অনুপস্থিত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী সময়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রক্রিয়া চলমান।

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS