সোনালী ডেস্ক: জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) অভিযোগ করেছে, সরকার জুলাই সনদ ঘোষণার প্রতিশ্রুতি দিয়েও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এ কারণে দলটি জানিয়েছে, আগামী ৩ আগস্ট নিজেরাই ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ করবে।

রোববার রাজধানীর বাংলামোটরে দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। নাহিদ ইসলাম বলেন, “জুলাই ঘোষণাপত্র দেয়ার কথা ছিল সরকারের। ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সেই ঘোষণাপত্র প্রকাশের প্রতিশ্রুতি তারা দিয়েছিল।

কিন্তু তার কোনো উদ্যোগ নেই। সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এজন্য ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে ৩ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে আমরা নিজেরাই জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করব। ” তিনি আরও বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের ইতিহাসে বিরল ঘটনা। শহিদদের আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান দেখাতে এবং নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে এ সনদ অপরিহার্য।

আমাদের দায়িত্ব, ইতিহাস সংরক্ষণ এবং জনগণকে জানানো, ভবিষ্যতে রাষ্ট্র পরিচালনার দিকনির্দেশনা কীভাবে হবে। ”জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ গতকাল রোববার বলেন, “জুলাই আন্দোলনের শহিদ আবু সাঈদের মৃত্যুবার্ষিকীতে জুলাই সনদ ঘোষণার পরিকল্পনা থাকলেও তা সম্ভব হচ্ছে না।

তবে জুলাই মাসের মধ্যেই ঘোষণাপত্র প্রকাশের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। ” এনসিপি এ উপলক্ষে ৩৬ দিনের একটি কর্মসূচিও ঘোষণা করেছে। এনসিপির ৩৬ দিনের কর্মসূচির মধ্যে থাকছে: ১. আগামী ১ জুলাই রংপুরে শহিদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’র সূচনা হবে। ২. পদযাত্রা চলবে ৩০ জুলাই পর্যন্ত।

এ সময়ে দেশের ৬৪ জেলায় যাবেন দলের নেতারা। তারা শহিদ পরিবার এবং আহতদের সঙ্গে দেখা করে তাদের কথা শুনবেন। ৩. ১৬ জুলাই পালন করা হবে ‘বৈষম্যবিরোধী শহিদ দিবস’।

এদিন আবু সাঈদসহ শহিদদের স্মরণে মিলাদ মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। ৪. ৩ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে অনুষ্ঠিত হবে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ ও ইশতেহার পাঠের অনুষ্ঠান। ৫. ৫ আগস্ট ‘ছাত্র-জনতার মুক্তি দিবস’ হিসেবে উদযাপন করবে এনসিপি। এদিন সারা দেশে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালন করা হবে।

‘জুলাই পদযাত্রা’ বাস্তবায়নে কমিটি গঠন করেছে এনসিপি। উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলমকে আহ্বায়ক এবং যুগ্ম আহ্বায়ক অনিক রায়কে সদস্য সচিব করা হয়েছে। নাহিদ ইসলাম বলেন, “এই পদযাত্রার মধ্য দিয়ে আমরা মানুষের আরও কাছে যেতে চাই। যারা জুলাইয়ের আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন, তাদের কথা শুনতে চাই।

বাংলাদেশের পুনর্গঠন এবং নতুন সংবিধানের বিষয়ে জনগণকে সম্পৃক্ত করাই আমাদের লক্ষ্য। ”সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের নেতা সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ ও অনিক রায়।