গ্লোবাল পিস ইনডেক্সে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে : প্রেস উইং

সোনালী ডেস্ক: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে গ্লোবাল পিস ইনডেক্সে (জিপিআই) বাংলাদেশের অবস্থান পিছিয়ে যাওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেসব বক্তব্য ছড়ানো হচ্ছে, তা পুরোপুরি বিভ্রান্তিকর।
প্রেস উইং এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে এক বছরেই জিপিআই-এ বাংলাদেশ ৩৩ ধাপ পিছিয়ে গেছে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও আওয়ামীপন্থী কিছু ওয়েবসাইটে এসব বিভ্রান্তিকর দাবি প্রচার করা হচ্ছে।
’এছাড়া এতে বলা হয়েছে, এসব মিথ্যা দাবি প্রচার করছে যে সংঘবদ্ধ জনতার হামলায় শত শত পুলিশ সদস্য ও আওয়ামী লীগ কর্মী নিহত হয়েছে এবং সরকার এসব ঘটনায় চোখ বন্ধ করে থেকেছে, এমনকি অপরাধীদের দায়মুক্তি দিয়ে পার পেতে সহায়তা করেছে।’ তবে প্রেস উইং তাদের যাচাইকৃত ফেসবুক পেজ ‘সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টস’- এ গত শনিবার রাতে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘এই দাবিগুলো পুরোপুরি বিভ্রান্তিকর।’
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এটা সত্য যে অস্ট্রেলিয়া-ভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড পিস (আইইপি) গ্লোবাল পিস ইনডেক্সের ২০২৫ সালের সংস্করণ প্রকাশ করেছে, যেখানে বাংলাদেশ ৩৩ ধাপ নিচে নেমে ১২৩তম স্থানে রয়েছে। কিন্তু এই র্যাংকিং ২০২৪ সালের তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি, কোনো সাম্প্রতিক তথ্যের ভিত্তিতে নয়।’ প্রতিবেদনের ৫ নম্বর পৃষ্ঠায় স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, ‘গত বছর আন্তর্জাতিক বিষয়াবলিতে কিছু বড় পরিবর্তন দেখা গেছে।
২০২৫ সালের জিপিআই প্রতিবেদন এসব কাঠামোগত প্রবণতা খতিয়ে দেখে সংঘাতকে প্রভাবিত করে এমন সমসাময়িক কারণগুলো সম্পর্কে আরো ভালো ধারণা প্রদান করছে।’ প্রতিবেদনের মূল সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে যে বাংলাদেশে শান্তির অবনতির কারণ হলো, পদচ্যুত হাসিনা সরকারের দুঃশাসন ও ব্যাপক সহিংসতা।
দক্ষিণ এশিয়া, যা বিশ্বের দ্বিতীয় সবচেয়ে অশান্ত এলাকা, সেখানে শান্তির মান সবচেয়ে বেশি পতন ঘটেছে। এই অবনতি মূলত হাসিনা সরকারের অধীনে বাংলাদেশে দমনমূলক ব্যবস্থার কারণে ঘটেছে। বিবৃতিতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, ‘২০২৪ সালে, তৎকালীন হাসিনা সরকারের অধীনে বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার ভয়াবহ সহিংসতার মুখোমুখি হয়েছিল।
জাতিসঙ্ঘের অনুমান অনুযায়ী, এই নৃশংস দমনপীড়নে এক হাজার চার শ’ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল।’ রিপোর্টগুলোতে বলা হয়েছে, হেলিকপ্টার ব্যবহার করে ছাত্র প্রতিবাদকারীদের ওপর গুলি চালানো হয়েছিল। বাড়ির ভেতরে আশ্রয় নেয়া শিশুদেরও এই সহিংসতার শিকার হতে হয়েছিল।
রক্তক্ষয় বাড়তে থাকায় এবং জনমানুষের প্রতিবাদ তীব্র হওয়ায়, অবশেষে হাসিনা দেশ পালাতে বাধ্য হয়েছিল। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘হাসিনার শাসনের সময়ের এই নজিরবিহীন ও অবর্ণনীয় সহিংসতা সরাসরি বাংলাদেশের গ্লোবাল পিস ইনডেক্সে বড় ধরনের পতনের কারণ হয়েছে।’