ঢাকা | জুলাই ১, ২০২৫ - ৩:৩৩ অপরাহ্ন

দেশিয় কাগজশিল্পের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে হবে

  • আপডেট: Monday, June 30, 2025 - 11:45 pm

সম্পাদকীয়

অভ্যন্তরীণ ও রপ্তানি বাজারে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা হারিয়ে বর্তমানে চরম দুর্দশায় পড়েছে শিক্ষা-সংস্কৃতির বিকাশে অবদান রাখা কাগজশিল্প।

শুল্কমুক্ত বন্ড সুবিধা নিয়ে বিদেশ থেকে পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের জন্য কাগজ আমদানিতে ফায়দা নিচ্ছে অসাধু চক্র। মুদ্রণশিল্পের কাঁচামালের সুবিধা পাওয়া এই আমদানি পণ্য খোলাবাজারে বিক্রিতে সরকারি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

তবু বেশি মুনাফার আশায় খোলাবাজারে এই আমদানি করা কাগজ বিক্রি করে আসছে চক্রগুলো। এতে হুমকির মুখে পড়ছে দেশিয় কাগজশিল্পের অস্তিত্ব। আমদানির সুযোগ নিয়ে বিপুল পরিমাণ মুদ্রা বিদেশে চলে যাওয়ার পাশাপাশি ব্যাপকভাবে রাজস্ববঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের কাছে এসব তথ্য তুলে ধরে আমদানিতে শুল্ক সুবিধা প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ পেপার মিল অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমএ)।

সংগঠনটির পক্ষে এর আগে শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে দেয়া আবেদনে বলা হয়, দেশি কাগজ কলগুলোর চাহিদার চেয়ে বেশি উৎপাদন ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও বিদেশ থেকে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা কাগজ খোলাবাজারে বিক্রিতে হুমকির মুখে পড়েছে বাংলাদেশের কাগজশিল্প।

এ অবস্থায় ছাপার জন্য কাগজ আমদানিতে শুল্ক মওকুফের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়েছে বিপিএমএ। রাজস্ব সংস্থায় দেয়া চিঠিতে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের জন্য শুল্কমুক্ত আমদানি করা ছাপার কাগজ বিশেষ বিবেচনায় আমদানির শর্ত ভঙ্গ করে খোলাবাজারে বিক্রি রোধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তাব করা হয়।

জানা গেছে, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দেশের কাগজ শিল্পে জড়িত আছে অন্তত ১০ লক্ষ মানুষের জীবিকা। এ খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ ১০ হাজার কোটি টাকারও ওপরে। শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আমদানি ও শুল্কমুক্ত সুবিধায় কাগজ আনা বন্ধ না হলে এই কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগও বিপন্ন হবে।

দেশি উদ্যোক্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশের কাগজ এখন বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। মানও ভালো। সবচেয়ে বড় কথা, চাহিদার চেয়েও বেশি উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে দেশি কাগজ কলগুলোর। কিন্তু এ সম্ভাবনাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ কাগজ আসছে বিদেশ থেকে।

দেশে উৎপাদিত কাগজের মান পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হলেও আমদানি করা কাগজের মান যাচাই করা হচ্ছে না। ফলে মিথ্যা ঘোষণা আর শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা নিম্নমানের বিদেশি কাগজ কম দামে বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে।

বিপরীতে জ্বালানির অতিরিক্ত দাম ও অবকাঠামোসহ নানা সমস্যায় খরচ বেশি পড়ছে কাগজ উৎপাদনে। তাই প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না দেশি কাগজ।

তাই সরকারকে উৎপাদন খরচ কমাতে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। তাহলেই বাঁচানো সম্ভব দেশিয় এই শিল্পকে।

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS