পিআর পদ্ধতিতে ভোটাররা জানবেন না কে তাঁর এমপি, এটি বাংলাদেশের জন্য অনুপযুক্ত: সালাহউদ্দিন

সোনালী ডেস্ক: বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট এবং রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পিআর (আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতি উপযুক্ত নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। এই প্রক্রিয়াকে ‘জটিল’ অ্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আনুপাতিক হারে নির্বাচনের কথা যাঁরা বলছেন, তাঁদের একটা উদ্দেশ্য আছে। যাঁরা জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চান, তাঁদের একটু উদ্দেশ্য আছে। হয় নির্বাচন বিলম্বিত করা অথবা বাংলাদেশে নির্বাচন না হওয়া।’
শনিবার বিকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ‘যুদ্ধের ময়দান থেকে রাষ্ট্রের প্রধান জিয়াউর রহমান’ শীর্ষক স্মারক প্রকাশনা ও আর্কাইভ উন্মোচন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন আহমদ এ কথা বলেন।
পিআর পদ্ধতি নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘কেউ রাজনৈতিক দাবি হিসেবে উত্থাপন করতে পারে, সেটা তাদের রাজনৈতিক অধিকার। তবে সেটা সবার ওপর চাপিয়ে দেওয়ার কোনো মানে নাই। কোনো দল তাদের অবস্থান থেকে চাইতেই পারে।
কিন্তু বাংলাদেশের বাস্তবতায় এবং ইতিপূর্বে আমাদের সঙ্গে সংস্কার কমিশনের যে আলাপ-আলোচনা হয়েছে, সেই পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের মধ্যে আমরা কোনো ঐকমত্য পাইনি।
তা ছাড়া বাংলাদেশে আনুপাতিক হারে নির্বাচনের ইতিহাস নাই এবং সংসদীয় রাজনীতি এবং সংসদীয় নির্বাচনের ইতিহাস নাই। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে এটা একটা নতুন ধারণা। যার জন্য অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা পৃথিবীর বহু দেশে হয়েছে। আমরা দেখেছি, এই দেশের জন্য এটি প্রযোজ্য নয়।’
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে মানুষ ঐক্যবদ্ধ আছি, এ দেশের সকল গণতন্ত্রকামী মানুষ সংগ্রাম করেছে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য নয়। একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনের জন্যই আমরা ১৭ বছর সংগ্রাম করেছি। ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য আমাদের অসংখ্য জীবন হারাতে হয়েছে।’
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আনুপাতিক হারে নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোনো সংসদীয় এলাকার ভোটাররা জানবেন না যে, কে তাঁদের এমপি হবে। তা ছাড়া প্রয়োজনে এমপিদের কাছে যে তাঁরা যাবেন, নির্ধারিত কোনো ব্যক্তিকে খুঁজে পাবেন না।’
২০২৬ এর ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আভাস প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের যে প্রস্তাব এসেছে, সেটা তখনই কার্যকর হবে, যখন উনি (প্রধান উপদেষ্টা) নির্বাচন কমিশনকে যথাযথ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সে বার্তাটা দেন, নির্দেশনা দেন। প্রধান উপদেষ্টা এবং নির্বাচন কমিশন উভয় পক্ষের পক্ষ থেকে যখন জাতিকে জানানো হবে, তখনই আশ্বস্ত হব যে আমরা সেই সময়েই নির্বাচনটা পাচ্ছি।’
এদিন রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসমাবেশে যোগ দিয়ে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘পিআর পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচন দেশের মানুষ মেনে নেবে না।’
প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার, অতীতের গণহত্যায় জড়িতদের বিচার ও পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ মহাসমাবেশের আয়োজন করে।
মহাসমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির (চরমোনাই পীর) মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, পিআর পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিকল্প নেই। জনগণের ভোটের অবমূল্যায়ন রুখতে সংসদ নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি চালু করতে হবে।