পাবনায় জমি নিয়ে সংঘর্ষ, অনুপস্থিত ব্যক্তির নামে মামলার অভিযোগ

পাবনা প্রতিনিধি: পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার হাপানিয়া মসজিদপাড়া গ্রামে জমির সীমানা নিয়ে বিরোধের জেরে দুইপক্ষের সংঘর্ষ ও বাড়ি ঘর ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় উভয়পক্ষ থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা করেছে। তবে সংঘর্ষের ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন না-এমন ব্যক্তিদের মামলায় আসামি করে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ জুন হাপানিয়া মসজিদপাড়া গ্রামের কামাল জোয়ার্দ্দার ও তোফাজ্জাল প্রামানিকের মধ্যে জমির সীমানা নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। তোফাজ্জালের আত্মীয় একইগ্রামের আব্দুর রাজ্জাকসহ তাদের দলবল নিয়ে কামালের বাড়িতে গিয়ে কামালসহ তার স্ত্রী, ছেলে এবং ভাতিজাকে মারপিট করে।
ঘটনার পর কামালের ভাই আবদুল হাই কামাল এবং তোফাজ্জলের মধ্যে জমির বিরোধ আপোস মিমাংসা করে দেন। তবে তোফাজ্জলের আত্মীয় আব্দুর রাজ্জাক-আমিজাল গংদের আপোস হওয়ার কথা বললে তারা না করে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করেন। এ নিয়ে গত ১০ জুন কামাল-রাজ্জাক গংদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
রাজ্জাক গং কামালদের ওপর হামলা করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারধর ও বাড়ি ভাঙচুর করে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ১০জন আহত হয়। তাদের পাবনা জেনারেল হাসপাতাল ও রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় আহত কামাল জোয়ার্দ্দারের ভাই আব্দুল হাই বাদি হয়ে ৯ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। অপরদিকে পরদিন আহত রাজ্জাকের ভাই মোজ্জেম আলী খান বাদি হয়ে ১১ জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে আহত কামাল জোয়ার্দ্দার বলেন, প্রতিবেশীর সাথে জমির সীমানা নিয়ে ঝামেলা ছিল, সেটা আমার ভাই আমিন নিয়ে এসে জমি মেপে মিটিয়ে দিয়েছেন।
এমন সময় আমিজাল গং একজোট হয়ে আমাদের ওপর হামলা করে। বাড়ি ভাঙচুর ও সিএনজি অটোরিকশা ভাঙচুর করে। আমার দুই হাত ভেঙে দিয়েছে। আমার স্ত্রী, ছেলে ও ভাতিজা ঠেকাতে আসলে তাদেরও পেটায় কুপায়। ওরা আওয়ামী লীগ করে এত শক্তি পায় কোথা থেকে জানি না।
অপরপক্ষের আহত আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমার চাচাতো ভাই আমিজাল মোটরসাইকেল নিয়ে যাবার সময় ওদের বাড়ির সামনে আটকিয়ে পিটিয়ে কুপিয়ে আহত করে। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের অনুরোধ করি না মারার জন্য।
তখন আমার মাথার পেছনে ও পিঠে কোপ মারে। তারপর আমার কিছু মনে নেই। প্রথমদিনের মারপিটের ঘটনা আমি দুই পক্ষকে ঠেকিয়ে শান্ত করেছিলাম। মুলত আমার ভাগ্নে মামুনদের জমি নিয়ে কামালদের সাথে দ্বন্দ্ব ছিল।
চাঁদভা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য আব্দুল হান্নান বলেন, ঘটনার দিন কামালের ভাই আব্দুল ওয়াহাব ও হুজ্জাতুল্লাহ মারামারির সময় উপস্থিত ছিলেন না। তাদের মারামারি করতে দেখিনি।
তাদের নামে কোনো মামলা মোকদ্দমাও নাই। তোফাজ্জলের সাথে জমি নিয়ে ঝামেলা ছিল সেটা তো মিল হয়ে গেছিল। তৃতীয় পক্ষ হিসেবে আমিজাল-রাজ্জাক প্রভাব বিস্তার করতে পারে নাই। ওরা সব আওয়ামী লীগ করে, উচ্ছৃঙ্খল মানুষ। তাদের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বেও বিভিন্ন অভিযোগ আছে।
এ বিষয়ে আটঘরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুজ্জামান বলেন, জমি নিয়ে বিরোধে উভয়পক্ষ মামলা করেছে। আমরা তদন্ত করে দেখছি। তবে উভয় মামলার আসামিরা আদালত থেকে আগাম জামিন নিয়েছেন বলে শুনেছি।