স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী জেলায় এ বছর ১৯ হাজার ৬০৩ হেক্টর জমিতে প্রায় ২.৬০ লক্ষ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। দেশের মোট আম রপ্তানির প্রায় ৭০ শতাংশই হয় রাজশাহী অঞ্চল থেকে। চলতি অর্থবছরে এ পর্যন্ত ৮১০ মেট্রিক টন আম রপ্তানি হয়েছে, যা গত কয়েক বছরের তুলনায় প্রায় ১০ গুণ বেশি। তবে বক্তারা বিমান পরিবহনের উচ্চ ভাড়া ও স্পেস সঙ্কটকে রপ্তানি বাড়ানোর পথে প্রধান অন্তরায় হিসেবে উল্লেখ করেন।

আমের রাজধানী রাজশাহীতে গতকাল শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য আম মেলায় বক্তারা একথা জানান। নিরাপদ ও রপ্তানিযোগ্য আমের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং বিশ্ববাজারে রাজশাহীর আমের ব্র্যান্ডিং আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার বিকেলে নগরীর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালকের অফিস চত্বরে বেলুন-ফেস্টুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, “রাজশাহীর আম বিশ্বজুড়ে আমাদের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। এর সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে নিরাপদ উৎপাদন নিশ্চিত করতে হবে।”

এসময় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাজশাহী অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক ড. মো. আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মহিনুল হাসান, ফল গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুল ইসলাম, আঞ্চলিক বীজ প্রত্যয়ন অফিসার ড. মো. মোতালেব হোসেন, বিএডিসির উদ্যান উন্নয়ন কেন্দ্রের যুগ্ম পরিচালক হাসান তৌফিকুর রহমান। এসময় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন- কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাজশাহীর উপপরিচালক উম্মে ছালমা। এছাড়াও কৃষকদের মধ্যে বাঘা উপজেলার আম চাষি শফিকুল ইসলাম অনুভূতি প্রকাশ করেন।

মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মোট ২১টি স্টলে থরে থরে সাজানো হয়েছে বাহারি জাতের আমসহ প্রায় দেড়শ প্রকারের দেশীয় ফল।

ল্যাংড়া, হিমসাগর, আম্রপালি, ফজলি, হাঁড়িভাঙা আমের পাশাপাশি বিদেশি ফল ড্রাগন, স্ট্রবেরি, অ্যাভোকাডো, লংগন ও রাম্বুটানের মতো ফলও দর্শনার্থীদের নজর কাড়ছে। মেলায় ফল গবেষণা কেন্দ্র, বিএডিসি, হর্টিকালচার সেন্টারসহ বিভিন্ন নার্সারি ও সফল কৃষি উদ্যোক্তারা অংশগ্রহণ করেছেন।

আয়োজকরা জানান, ‘রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পের’ আওতায় আয়োজিত এ মেলা আগামী ২৬ জুন পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। মেলায় ফল প্রদর্শনীর পাশাপাশি চাষিদের জন্য কৃষিপ্রযুক্তি-বিষয়ক পরামর্শ সেবাও দেওয়া হচ্ছে।