৩৬ হাজার বস্তায় আদা চাষ

সাইদ সাজু, তানোর থেকে: রাজশাহীর তানোর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বাড়ির পার্শ্বের ফাঁকা ও পরিত্যক্ত জায়গা ও পুকুর পাড়ে প্রায় ৩৬ হাজার বস্তায় করা হচ্ছে আদা চাষ। স্বল্প খরচে বেশি লাভ হওয়ায় বস্তায় আদা চাষ বাড়ার পাশাপাশি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বস্তায় আদা চাষ।
কৃষি জমি ব্যবহার না করে, পুকুর পাড়ের খালি জায়গায় বস্তায় আদা চাষ করছেন রাজশাহীর তানোরের তরুণ উদ্যোক্তা একরামুল ও আব্দুল মালেক। পুকুরপাড়ের অব্যবহৃত জমিকে কাজে লাগিয়ে তাঁরা চাঁন্দুড়িয়া ইউনিয়নের শিলিমপুর গ্রামের পুকুর পাড়ে প্রায় ২ হাজার বস্তায় আদা চাষ করছেন।
তারমত উপজেলার বিভিন্ন এলাকার গ্রামে গ্রামে বাড়ির পার্শ্বের জায়গায় আদা চাষ করছেন কৃষকরা। উপজেলা কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় এবং স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা তানজিজুর রহমানের পরামর্শে তারা এই পদ্ধতিতে সফলতা পেয়েছেন।
শুধু এ দুজন নন, তানোরের পরীক্ষা মূলকভাবে এই প্রথম তানোরের ৭টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভা এলাকায় বাণিজ্যিক ভাবে প্রায় ৩৬ হাজার ২শ’ ৫০ বস্তায় আদা চাষ করছেন চাষিরা।
এর মধ্যে উপজেলার চাঁন্দুড়িয়া ইউনিয়নে ৭ হাজার ৫শ’ বস্তা, কলমা ইউনিয়নে ৪ হাজার ৮শ’ বস্তা, তালন্দ ইউনিয়ন ৫ হাজার ৫শ’ বস্তা,বাঁধাইড় ইউনিয়ন ২ হাজার ৫শ’ বস্তা, কামারগাঁ ইউনিয়নে ৪ হাজার ১শ’ বস্তা, পাঁচন্দর ইউনিয়নে ২ হাজার ৯শ’ ৫০ বস্তা ও সরনজাই ইউনিয়নে ৪ হাজার ২শ’ ৫০ বস্তায় আদা চাষ হয়েছে।
এছাড়াও তানোর পৌর এলাকায় ২ হাজার ৫০ বস্তায় এবং মুন্ডুমালা পৌর এলাকার ২ হাজার ৫শ’ ৭০ বস্তায় কৃষি সম্প্রসারণ তানোর উপজেলা কার্যালয়ের উদ্বুদ্ধকরণ প্রকল্পের মাধ্যমে বস্তায় আদা চাষ করেছেন কৃষকরা।
তানোর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি বছরে পরীক্ষামূলক ভাবে প্রায় ৩৬ হাজার ২শ’ ৫০ বস্তায় আদা চাষ করা হয়েছে। এ পদ্ধতিতে বস্তা প্রতি গড়ে খরচ হয়েছে ৫০ টাকা।
ফলন ভালো হলে প্রতি বস্তা থেকে দেড় কেজি থেকে ২ কেজি পর্যন্ত আদা পাওয়া যাবে। বস্তায় আদা চাষে পরিচর্যা বা পরিশ্রম হয় না এবং আর বস্তা পদ্ধতিতে আগাছাও জন্মায়না। ফলে, কম খরচে ও বেশি লাভ হওয়ায় বস্তায় আদা চাষ বাড়ছে। বাড়ির আঙিনা, ছাদ কিংবা পুকুরপাড় যেকোনো জায়গা ব্যবহার করে এখন চাষ হচ্ছে আদা।
বাড়ির পার্শ্বে ও পুকুর পাড়সহ পরিত্যক্ত জায়গায় বস্তা পদ্ধতিতে আদা চাষ করে কেউ কেউ প্রতি বস্তায় ২শ’ টাকা থেকে ৩শ’ টাকা পর্যন্ত লাভ করছেন। কৃষি উদ্যোক্তা লিয়াকত আলী বলেন, এই পদ্ধতিতে বেশি পরিশ্রম লাগে না এবং কম জায়গায় চাষ করা সম্ভব।
মাটি ও সার মিশিয়ে বস্তায় চারা রোপণ করলেই কয়েক মাসের মধ্যেই মিলছে ফলন। সম্প্রতি তাঁদের বস্তায় আদা চাষ কার্যক্রম সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাজশাহী অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক ড. আজিজুর রহমান, রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক উম্মে ছালমা ও তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাইফুল্লাহ আহম্মদ।
এ ব্যাপারে তানোর উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল্লাহ আহমেদ বলেন, বস্তায় আদা চাষে কৃষকরা লাভবান হওয়ার বাড়ছে বস্তায় আদা চাষ এবং জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বস্তায় আদা চাষ।