লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি: নাটোরের লালপুরে পদ্মা জেনারেল হাসপাতাল নামের একটি বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকের অবহেলায় এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ করেছেন স্বজনরা।

সোমবার দুপুরে এ ঘটনায় লালপুর থানায় একটি নিয়মিত মামলার রুজু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মমিনুজ্জামান। এর আগে গত রোববার রাতে এ বিষয়ে  লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নবজাতকের মা জাহানারা খাতুন (৩১)।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার বিকাল ৪ টায় প্রসব বেদনা নিয়ে চিকিৎসক ফারজানা ইসলাম বিভার অধীনে পদ্মা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন ভুক্তভোগী জাহানারা খাতুন। সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতে হাসপাতালে কর্তব্যরত নার্স জান্নাত আক্তার ও অন্যান্যরা তার নরমাল ডেলিভারি করান।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী জাহানারা খাতুন বলেন, অদক্ষ নার্স দিয়ে নরমাল ডেলিভারি করানোর সময় নবজাতক গুরুতর আহত হয়। তবে বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রথমদিকে আমাদেরকে জানাননি। চিকিৎসক বিভার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। এসময় হাসপাতালে কোন শিশু বিশেষজ্ঞ ছিলেন না।

পরবর্তীতে আমরা শিশুর চিকিৎসার বিষয়ে চাপাচাপি করলে রাত সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাচ্চাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পদ্মা জেনারেল হাসপাতালে সময় মত আমার শিশুটির সঠিক চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হলে তার মৃত্যু হতো না বলে আমার বিশ্বাস।

এ বিষয়ে চিকিৎসক ফারজানা ইসলাম বিভা বলেন, রোগীরা দীর্ঘ সময় ধরে বাসায় নরমাল ডেলিভারির চেষ্টা করেন। এ বিষয়টি তারা আমার কাছে গোপন করে নরমাল ডেলিভারি করানোর জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন। সে সময় বাচ্চা ও গর্ভবতী মায়ের সার্বিক অবস্থা স্বাভাবিক থাকায় নরমাল ডেলিভারির জন্য অপেক্ষা করতে বলি এবং নির্ধারিত সময়ে ডেলিভারি সম্পন্ন হয়।

হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুলতানুজ্জামান টিপু চিকিৎসায় অবহেলার কথা অস্বীকার করে জানান, স্বাভাবিক নিয়মানুযায়ী বাচ্চা প্রসব করানো হয়। বাচ্চার শ্বাস-প্রশ্বাস ও হার্টবিট ভালো ছিল। তবে কান্না না করায় কর্তব্যরত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তাৎক্ষণিক তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।

সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা  মমিনুজ্জামান গতকাল সোমবার দুপুরে জানান, ঘটনার বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।