বাগমারায় বাক প্রতিবন্ধী পথশিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ প্রতিবাদে মানববন্ধন

বাগমারা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় আট বছর বয়সী বাক প্রতিবন্ধী এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গত সোমবার রাত ১১টার দিকে উপজেলার তাহেরপুর কলেজের পাশে একটি বাগান থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। তবে তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি। স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিকেলে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছেন। এছাড়া আজ বুধবার দুটি সংগঠন প্রতিবাদ সভার ডাক দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাতে শিশুটি তাহেরপুর কলেজের পাশে একটি বাগানে কান্না করছিল। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেন। কিন্তু শিশুটির রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় দ্রুত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালের মুখপাত্র চিকিৎসক শঙ্কর কুমার বিশ্বাস সাংবাদিকদের বলেন, শিশুটিকে ওসিসিতে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তার শারীরিক অবস্থা খুবই নাজুক।
আমরা তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছি। স্বজন ও স্থানীয় লোকজন জানান, ভুক্তভোগী শিশুটির বাবাও মানসিক প্রতিবন্ধী। মা-বাবার মধ্যে ছাড়াছাড়ির পর শিশুটি বাবার কাছে থাকত। কিন্তু বাবা দ্বিতীয় বিয়ের পর তাহেরপুর বাজারের বিভিন্ন জায়গায় পথশিশু হিসেবে ঘুরে বেড়ায়। লোকজনের দেওয়া খাবার খেত এবং বাজারে ঘুমাত। সোমবার রাতে তাহেরপুর কলেজ এলাকায় শুয়ে ছিল। সেখান থেকে তুলে নিয়ে শিশুটিকে ধর্ষণ করে দুর্বৃত্তরা।
শিশুটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন এস এম আরিফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, বিকৃত মস্তিষ্কের লোকজনই শিশুটিকে ধর্ষণ করেছে। তিনি তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। তিনি বলেন, শিশুটির বাবা মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় সে আদর যত্ন পায় না। সৎমা–ও তেমন দেখাশোনা করেন না।
এজন্য পথে পথে ঘুরে বেড়াত। এদিকে প্রতিবন্ধী পথশিশুকে ধর্ষণের প্রতিবাদে গতকাল বিকেলে তাহেরপুর হরিতলা মোড়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেন স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
বৃষ্টির মধ্যে বিকেল সাড়ে চারটা থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত এক ঘণ্টার মানববন্ধনে পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলিমসহ স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন। তাঁরা ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, শিশুটিকে সোমবার গভীর রাতে বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে পাঠানো হয়েছে। শিশুটি এখন ভালো আছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছে।
রক্তমাখা পোশাকসহ আলামত সংগ্রহ করেছে। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও এখনো গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি। এখনো শিশুটির পরিবার অভিযোগ দেয়নি। পুলিশ তদন্ত করছে।