আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে করোনা: সতর্কতার বিকল্প নেই

সম্পাদকীয়
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবারও নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। গত রোববার দেয়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৫ জনের মৃত্যু ও ৩৬ জনের নতুন করে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা নিঃসন্দেহে এক উদ্বেগজনক ইঙ্গিত।
৬২১টি নমুনা পরীক্ষায় ৫.৮০ শতাংশ শনাক্তের হার ইঙ্গিত দেয়, সংক্রমণ পরিস্থিতি যতটা দৃশ্যমান, বাস্তবে হয়তো তা আরও বিস্তৃত।
মৃত ব্যক্তিদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, করোনা এখনো বিভিন্ন বয়সসীমার মানুষের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ-বিশেষ করে প্রবীণ ও কো-মরবিডিটিতে আক্রান্তরা সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে।
অঞ্চলভিত্তিক চিত্র বলছে, চট্টগ্রাম, ঢাকা ও রাজশাহীতেই এবার মৃত্যু ঘটেছে, যা নির্দেশ করে সংক্রমণ রাজধানী কেন্দ্রিক না থেকে সার্বিকভাবে ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতায় রয়েছে।
২০২৫ সালেও এখন পর্যন্ত ১৬ জনের মৃত্যু এবং ৪৩৩ জন আক্রান্ত হওয়ার তথ্য আমাদের মনে করিয়ে দেয়, করোনাভাইরাস এখনও বিদায় নেয়নি। বরং কম নমুনা পরীক্ষার মধ্যেও যে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, তা আরও বেশি টেস্ট চালুর প্রয়োজনীয়তাকে সামনে নিয়ে আসে।
সঠিক পরিসংখ্যান ছাড়া বাস্তব চিত্র আঁকা যেমন কঠিন, তেমনি প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেয়াও হয়ে পড়ে সীমিত।
বিশেষজ্ঞরা যথার্থই বলছেন, এ ধরণের ‘ধীরগতির সংক্রমণ’ যেন আমাদের আত্মতুষ্টিতে না ফেলে। সতর্কতাই এ মুহূর্তে একমাত্র ভরসা। মাস্ক ব্যবহার, ভিড় এড়িয়ে চলা এবং হালকা উপসর্গে দ্রুত নমুনা পরীক্ষা করানো-এসব সহজ, কিন্তু কার্যকর পদক্ষেপেই হয়তো বড় বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব।
সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিত উদ্যোগ, জনসচেতনতা বাড়ানো এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার সংস্কৃতি পুনরায় জোরদার করাই এখন জরুরি।
অতীত অভিজ্ঞতা আমাদের শিখিয়েছে, অবহেলা করলে পরিস্থিতি কতটা দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। করোনাকে অবহেলা নয়-সতর্কতাই হোক আমাদের প্রতিদিনের অনুশীলন।