কেন মোবাইল বিহীন কনসার্টের স্বপ্ন দেখছেন সাবরিনা?

অনলাইন ডেস্ক: সাবরিনা অ্যান লিন কার্পেন্টার; একাধারে অভিনেত্রী, গায়িকা ও গীতিকার। ভক্তদের কাছে সাবরিনা কার্পেন্টার নামে পরিচিতি। জন্ম ১৯৯৯ সালের ১১ মে, যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়া রাজ্যের লেহাই ভ্যালিতে।
ছোটবেলা থেকেই গান করেন। মাইলি সাইরাস পরিচালিত গানের প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠান ‘দ্য নেস্কট মাইলি সাইরাস প্রজেক্টে’ তৃতীয় হয়েছিলেন তিনি।
২০১৪ সালে তার ছোট অ্যালবাম (ইপি) ‘ক্যান্ট ব্লেম আ গার্ল ফর ট্রায়িং’ দিয়ে গানের জগতে আনুষ্ঠানিক অভিষেক হয় তার। এরপর এখন পর্যন্ত দুটি পুরোপুরি-দৈর্ঘ্যরে অ্যালবাম ‘আইজ ওয়াইড ওপেন’ (২০১৫) এবং ‘ইভল্যুশন’ (২০১৬) প্রকাশ করেছেন। গানের জগতে আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশের আগে ভক্তরা তাকে অভিনেত্রী হিসাবেই চিনতেন।
২০১১ সালে তার প্রথম এনবিসি টেলিভিশনের ঘটনাবহুল ‘ধারাবাহিক ল অ্যান্ড অর্ডার : স্পেশাল ভিক্টিমস্ ইউনিট’র ১২তম মৌসুমে একটি অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেন।
সেখানে তার চরিত্রটি ছিল ধর্ষণের শিকার এক তরুণী এবং যার সাক্ষাৎকার নিয়েছিল গোয়েন্দা ইলিয়ট স্টেবলার (ক্রিস্টোফার মেলোনি)।
প্রায় একই সময় তিনি চীনের টেলিভিশন কেন্দ্র হুনান ব্রডকাস্টিং সিস্টেমের সরাসরি অনুষ্ঠানে (গোল্ড মেঙ্গো অডিয়েন্স ফেস্টিভ্যাল) গান পরিবেশন করেন।
এরপর কার্পেন্টার আবারো ফক্স টেলিভিশনের ‘দ্য গুডউইন গেমস্’ ধারাবাহিকে অভিনয় শুরু করেন। পাশাপাশি ডিজনি চ্যানেলের একটি ধারাবাহিক ‘গালিভার কুইনন’ এবং এবিসির ধারাবাহিক ‘দ্য আনপ্রফেশনাল’-এ অভিনয় নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
২০১৩ সালে কর্পেন্টারকে ডিজনি চ্যানেলের ধারাবাহিক ‘গার্ল মিটস্ ওয়াল্ড’-এ রোয়ান ব্লেনচার্ডের বিপরীতে মায়া হের্ট চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায়। একই সময় ‘হর্নস’ সিনেমায় তাকে তরুণী মেরিন চরিত্রে অভিনয় করেন।
তবে রক্তে যার গান, তিনি কী আর সেটা ছেড়ে থাকতে পারেন। তাই অভিনয়ের ফাঁকে ফাঁকে গানও তোলেন কণ্ঠে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে অ্যালবাম প্রকাশ করেন ২০১৪ সালে।
সেই থেকে এখনো অভিনয়ের পাশাপাশি গানের সঙ্গেই আছেন তিনি। বর্তমানে রেকর্ডসের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। বিভিন্ন দেশে করছেন কনসার্ট। সম্প্রতি নিজের কনসার্ট নিয়ে একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সাবরিনা।
মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তাকে যদি কোনো কনসার্টে আমন্ত্রণ জানানো হয়, তাহলে সেখানে উপস্থিত দর্শকরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না। যদিও বিষয়টি এখনো বিবেচনাধীন, তবু সাবরিনা চাইছেন, এমনটাই ঘটুক।
এটাও ঠিক, ভক্তরা প্রিয় তারকার কনসার্ট থেকে যতটা সম্ভব স্মৃতি ধরে রাখতে চাইবেন। কিন্তু সাবরিনা চাইছেন, তার কনসার্টগুলোতে সত্তর, আশি কিংবা নব্বই দশকের আবহ ফিরে আসুক। মানুষ শুধু কিছু সময় গান নিয়েই ব্যস্ত থাকুক।
গ্র্যামি বিজয়ী এ গায়িকা সম্প্রতি রোলিং স্টোনকে বলেছেন, ভবিষ্যতে তার কনসার্টে ফোন নিষিদ্ধ করার ধারণার সঙ্গে তিনি একমত।
এ সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে সাবরিনা বলেন, ‘এটা সত্যিই আমার ভক্তদের বিরক্ত করবে, কিন্তু তারাও নিশ্চয়ই কনসিডার করবেন আমার জন্য। কারণ আমি একবার লাসভেগাসে সিল্ক সোনিক দেখতে গিয়েছিলাম, এবং তারা (আয়োজকরা) আমার ফোন লক করে দিয়েছে।
কনসার্টে আমার এর চেয়ে ভালো অভিজ্ঞতা আর কখনো হয়নি। আমার সত্যিই মনে হয়েছিল যেন আমি সত্তরের দশকে ফিরে এসেছি। সত্যিকার অর্থেই মনে হয়েছিল যেন আমি সেখানে আছি। সবাই গান গাইছে, নাচছে, একে অপরের দিকে তাকিয়ে হাসছে। এটা সত্যিই খুব সুন্দর মনে হয়েছে।’
যদিও ‘ম্যানচাইল্ড’ গায়িকা বলেছেন যে, তিনি তার শো থেকে ‘স্মৃতি ধরে রাখতে চাওয়ার জন্য লোকেদের দোষ দিতে পারেন না।’
তিনি বলেন, ‘আমি সেই যুগে বড় হয়েছি যেখানে লোকেরা শোতে আইফোন ব্যবহার করে। এটা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু আমার বয়স যখন বাড়বে, চামড়া কুঁচকে যাবে, আমি ট্রিটমেন্ট নেব (হয়তো), তখন কেউ দূর থেকে ঝুম করে আমাকে এভাবে দেখুক, সেটা আমার পছন্দ না।
এ মুহূর্তে, আমার ত্বক নরম এবং কোমল। এটা ঠিক আছে। এখন থেকে যদি সাবধান না হই, তাহলে পরে আর পারব না।’
মূলত নিজেকে ভক্তদের কাছে আজীবন তারুণ্য ধরে রাখতেই কনসার্টে মোবাইল ফোন নিষিদ্ধের কথা ভাবছেন সাবরিনা।
যদি কার্পেন্টার তার কনসার্টে ফোন নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে তিনি বব ডিলান, অ্যাডেল এবং ম্যাডোনাসহ অতীতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া অন্য শিল্পীদের তালিকায় যুক্ত হবেন।
উল্লেখ্য, সাবরিনা গত বছর তার অ্যালবাম, ‘শর্ট এন’ সুইট’ প্রকাশের মধ্য দিয়ে খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছে যান। এ গায়িকা ‘ম্যানচাইল্ড’ দিয়ে বিলবোর্ড হট ১০০ চার্টে দ্বিতীয় স্থান দখল করেছেন।
বর্তমানে নিজের পরবর্তী স্টুডিও অ্যালবাম ‘ম্যান’স বেস্ট ফ্রেন্ড’ প্রকাশের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। এটি চলতি বছরের আগস্টে প্রকাশ হবে বলে জানা গেছে।