ঢাকা | জুন ২৩, ২০২৫ - ৩:৩১ অপরাহ্ন

গ্রামাঞ্চল থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ‘ফেরিওয়ালা

  • আপডেট: Monday, June 23, 2025 - 1:09 am

সাইদ সাজু, তানোর থেকে: রাজশাহীর তানোরে ৩৬ বছর ধরে কাঁধে ভার নিয়ে গ্রামে গ্রামে গিয়ে মনহারির চুরি, ফিতা, আলতা, সাবান বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন তানোর সদর হিন্দুপাড়ার চন্দন। ৩৬ বছর আগে গ্রামাঞ্চলে দোকান পাট রাস্তাঘাট তেমন ছিল না। সেই সময় চুরি, ফিতা, আলতা, সাবান এগুলো গ্রামে গ্রামে ফেরি করে বিক্রি করতেন এসব ফেরিওয়ালারা।

সে সময় গ্রামাঞ্চলে ঈদের প্রসাধনীসহ আলতা, সাবান, স্নো, পাউডার ও চুরি, ফিতার চাহিদা মেটাতেন এই ফেরিওয়ালারা। ফলে, গ্রামাঞ্চলে তাদের  কদর অনেক বেশি থাকলেও সেগুলো এখন আর দেখা যায় না। কিন্তু সেই আদি ব্যবসা ধরে রেখেছেন চন্দন।

তিনি দীর্ঘ ৩৬ বছর ধরে তিনি এই পেশা ধরে রেখে জীবিকা নির্বাহ করছেন। তিনি শুক্রবার ও মঙ্গলবার হাটে এসব বিক্রি করেন। আর অন্যদিনগুলোতে কাধে ভার নিয়ে এসব প্রসাধনী সকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত তানোর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার গ্রামে গ্রামে গিয়ে বিক্রি করেন। এক সময়ে তানোর উপজেলা গ্রামাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা তেমন ছিল না।

সেই সময় এ ধরনের ফেরিওয়ালার সংখ্যাও ছিলো অনেক। কিন্তু এখন আর চোখে পড়ে না এসব প্রসাধনীর বিক্রি করা ফেরিওয়ালার। কালের আবর্তনে বিলুপ্ত হয়ে গেছে এসব ফেরিওয়ালা।

গ্রামাঞ্চলের গড়ে উঠেছে মার্কেট ও বিশাল বিশাল এ ধরনের দোকানপাট। রোববার সন্ধ্যায় তানোর উপজেলার গেটের রাস্তায় হঠাৎ চোড়ে পড়লো চুরি ফিতা আলতা সাবানসহ বিভিন্ন প্রসাধনীর মারামাল নিয়ে কাদে ভার নিয়ে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এসব বিক্রি করে বাড়ি ফিরছেন। এসময় কথা হয় তার  সাথে।

তিনি বলেন, ১৯৮৮ সাল থেকে আমি এই ব্যবসা করছি, শুক্রবার ও মঙ্গলবার গোল্লাপাড়া হাটে বিক্রি করি। অন্য দিনগুলোতে বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে  এসব বিক্রি করি। আগে গ্রামে গেলে বেচা কেনা বেশি হতো। এখন একটু কম। তবে, খারাপ না। যা বিক্রি করি তাতেই চলে যায় সংসার। তিনি বলেন, এখন গ্রামসহ বিভিন্ন হাট বাজারে বাহারীসব দোকান পাটের কারনে বেচা কেনা আগের মত হরতে পারিনা।

তিনি আরও বলেন, গ্রাম ঘরে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যা বিক্রি হয়। তাতে প্রতিদিন ৩ শ টাকা থেকে ৫ শ টাকা পর্যন্ত লাভ হয়। আগে বিক্রি বেশি হতো লাভও বেশি হতো। রাজশাহী শহরসহ বিভিন্ন শহর থেকে এসব মালামাল ক্রয় করে গ্রামে গিয়ে বিক্রি করি। তিনি আরো বলেন, আগে অনেকেই এই ব্যবসা করতেন।

কালের আবর্তনে তারা এই ব্যবসা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গেছেন। কিন্তু আমি ছাড়তে পারছি না। দীর্ঘদিনের এই ব্যবসার প্রতি মায়া জন্মে গেছে। যতদিন বেচে আছি এই ব্যবসায় করে যাবো বলেও জানান তিনি।

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS