সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ইকবাল বাহার কারাগারে

সোনালী ডেস্ক: জুলাই আন্দোলন কেন্দ্রিক রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানাধীন এলাকায় শাহিনুর বেগম নামে এক নারী হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ইকবাল বাহারকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
শনিবার বিকালে শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম জুয়েল রানার আদালত এই আদেশ দেন। এর আগে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার ইন্সপেক্টর কাজী রমজানুল হক আসামিকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী মোর্শেদ আলম শাহিন, সপ্না খানম তার জামিন চেয়ে শুনানি করেন। শুনানিতে আইনজীবীরা বলেন, হত্যা মামলায় কাউকে গ্রেপ্তার করতে হলে কিছু কারণ থাকতে হবে।
আসামিকে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এই মামলায় জড়ানো হয়েছে। যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ নেই। আসামি পুলিশের একজন আইজিপি।
অসুস্থ ব্যক্তি। এই মামলার সঙ্গে কোনও সম্পৃক্ততা নেই। সব আসামি আইনের দৃষ্টিতে সমান। একই ক্যাটাগরির মামলায় সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী জামিন পেয়েছে। গ্রেপ্তারের একদিনের মাথায় নায়িকা নুসরাত ফারিয়াও জামিন পেয়েছে।
তাই যেকোনও শর্তে আসামির জামিনের প্রার্থনা করছি। রাষ্ট্রপক্ষ এই জামিনের বিরোধিতা করে। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার জামিনের আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। গত ২০ জুন সন্ধ্যায় বেইলি রোডের একটি বাসা থেকে সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ইকবাল বাহারকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
তিনি এ মামলার এজাহারনামীয় ২৬ নং আসামি। মামলার অভিযোগে থেকে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ২২ জুলাই যাত্রাবাড়ী থানাধীন কাজলা ফুটওভার ব্রিজের নিচে ছাত্ররা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে। ওই আন্দোলনে ভিকটিম শাহীনুর খাবার পানি সরবরাহ করতে থাকেন।
সাধারণ ছাত্রদের কর্মসূচি চলাকালে মামলার এজাহারনামীয় আসামিদের নির্দেশে অন্য আসামিরা আন্দোলকারীদের ওপর দেশিয় অস্ত্রসহ, সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ায় সেল, রাবার বুলেট ও গুলি বর্ষণ করে। ওই সময় ভিকটিম শিক্ষার্থীদের পানি সরবরাহ করতে গিয়ে মাথায় গুরুত্বর জখম পেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
আশেপাশের সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক মাস ৯ দিন পর তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় ভিকটিমের মেয়ে হাবেজা আক্তার (৩৪) বাদী হয়ে শেখ হাসিনার নাম উল্লেখসহ ২৯৭ জনের নামে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় আরও অজ্ঞাতনামা ২৫০/৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। ইকবাল বাহার এর আগে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে তাকে অতিরিক্ত আইজিপি হিসেবে রাজারবাগ টিঅ্যান্ডআইএমে বদলি করা হয়। ২০১৯ সালে সেখান থেকে তিনি অবসরে যান।