ঢাকা | জুন ২২, ২০২৫ - ৩:০৭ পূর্বাহ্ন

প্রসাদপুর খেয়াঘাটে ব্রীজ হলে বদলে যাবে ৫০ গ্রামের মানুষের জীবনচিত্র

  • আপডেট: Saturday, June 21, 2025 - 10:56 pm

নজরুল ইসলাম, মান্দা থেকে: নওগাঁর মান্দা উপজেলার প্রসাদপুর খেয়াঘাটে আত্রাই নদীর ওপর একটি ব্রীজ নির্মাণ করা হলে বদলে যাবে অন্তত ৫০টি গ্রামের মানুষের জীবনচিত্র।

বর্তমানে এই ঘাট পার হতে গিয়ে প্রতিদিন ভোগান্তি পোহাচ্ছেন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে চাকরিজীবী, কৃষক, রোগীসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ। এটি এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি হলেও দীর্ঘদিনেও তা বাস্তবায়নের কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, উপজেলার প্রসাদপুর ও গনেশপুর ইউনিয়নের অন্তত ৩০ গ্রামের মানুষ প্রসাদপুর খেয়াঘাট হয়ে উপজেলা সদরে যাওয়া-আসা করেন।

এই খেয়াঘাটে একটি ব্রীজ নির্মাণ করা হলে গনেশপুর ইউনিয়নের একাংশসহ মৈনম ও কাঁশোপাড়া ইউনিয়নের আরও অন্তত ২০ গ্রামের লোকজন সাতবাড়িয়া মোড় হয়ে সহজেই উপজেলা সদরে যাতায়াত করতে পারবেন।

তাদের দাবি, নদীর ওপর প্রসাদপুর খেয়াঘাটে কোনে ব্রীজ না থাকায় বর্ষায় ভরসা নৌকা আর খরা মৌসুমে ব্যবহার করতে হয় নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো। এখানে একটি ব্রীজ নির্মিত হলে বদলে যাবে এ অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা।

উন্নত হবে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাত। বিশেষ করে নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের যাতায়াতে আসবে স্বস্তি। প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আর পার হতে হবে না আত্রাই নদী। প্রসাদপুর বাজারের বাসিন্দা আলম হোসেন বলেন, উপজেলা সদরের আশপাশে রয়েছে অনেক স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

এছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তর, এসি ল্যান্ড অফিস, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক, প্যাথলজি ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারও এখানেই অবস্থিত। ফলে শিক্ষার্থী থেকে রোগী সবার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ যাতায়াতের কেন্দ্রবিন্দু এই খেয়াঘাট। শিক্ষার্থী সামিউল ইসলাম বলেন, বর্ষার সময় আত্রাই নদী পানিতে ভরে ওঠে।

এ সময় প্রতিদিন স্কুলগামী শিশুরা নৌকায় পারাপার হয়। এসব শিশুদের নিয়ে উৎকণ্ঠায় থাকেন অভিভাবকেরা। কখনো কখনো নৌকায় পার হতে ঘণ্টাখানেক সময় লেগে যায়। আবার নৌকা না থাকলে একপাশে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় দীর্ঘ সময়।

গাড়িক্ষেত্র গ্রামের বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন বলেন, বর্ষা মৌসুমে নৌকায় পারাপার হতে হয় আত্রাই নদী। রাত দশটার পর খেয়াঘাট বন্ধ হয়ে গেলে জরুরি প্রয়োজনে কয়েক কিলোমিটার পথ ঘুরে উপজেলা সদরে পৌঁছাতে হয়। জরুরি রোগী হাসপাতালে নিতে ভোগান্তির শেষ থাকে না। সময়ও লাগে অনেক বেশি।

এতে অনেক সময় রোগী মৃত্যুর ঘটনাও নজরে আসে। খুদিয়াডাঙ্গা গ্রামের কৃষক বেলাল হোসেন বলেন, এ এলাকার কৃষকের উৎপাদিত ধান, সবজিসহ অন্যান্য কৃষিপণ্য বিক্রির জন্য প্রসাদপুর বাজারে নিয়ে যান। কিন্তু ব্রীজ না থাকায় ফেরিঘাট হয়ে ঘুরে বাজারে যেতে হয়।

এতে সময় ও পরিবহন খরচ দুটোই বাড়ে। একই সঙ্গে পোহাতে হয় ভোগান্তি। খেয়াঘাটে ব্রীজ হলে কৃষকদের এ ভোগান্তি আর থাকবে না। উপজেলার প্রসাদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন মণ্ডল বলেন, এলাকাবাসীর বহুদিনের দাবি এই খেয়াঘাটে একটি ব্রীজ নির্মাণ।

কয়েকবার সয়েল টেস্টও করা হয়েছে। কিন্তু এরপর আর কোনো অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি না। আদৌ এটি নির্মাণ হবে কিনা, সে প্রশ্ন এখন সবার মুখে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মান্দা উপজেলা প্রকৌশলী আবু সায়েদ বলেন, প্রসাদপুর খেয়াঘাটে ব্রীজ নির্মাণে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য ইতিমধ্যে সয়েল টেস্ট করা হয়েছে। এরপর আর কোনো অগ্রগতি নেয়।

তবে নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় এলে এ প্রকল্পের কাজ ত্বরান্বিত হবে।

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS