ঢাকা | জুন ২০, ২০২৫ - ৫:৩৫ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

ঢেকুরিয়া হাটের বেহাল দশা খুলে পড়ছে টিনের চালা

  • আপডেট: Thursday, June 19, 2025 - 11:18 pm

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: প্রায় তিনশ বছরের পুরনো সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ঢেকুরিয়া হাটের বেহাল দশা। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে হাটুরেরা দিনের পর দিন মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। এই হাটের বিকল্প হাটের দিকে তারা ঝুঁকছেন।

ফলে এই হাটকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা স্থানীয় ব্যবসায়ীরা লোকসানের শঙ্কায় রয়েছেন। সরকারি রাজস্ব আদায়ের পরিমাণও যাচ্ছে কমে। সিরাজগঞ্জের ইতিহাস ও সংস্কৃতির তথ্যমতে, অষ্টাদশ শতকের শেষের দিকে যমুনা নদীর সন্নিকটে কাজিপুরের মাইজবাড়ি ইউনিয়নের ঢেকুরিয়া নামক স্থানে এই হাটের প্রচলন হয়েছিল।

পাশের বগুড়া জেলার ধুনট উপজেলার সীমানা ঘেঁষা, নদীপথে জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ি উপজেলা ও দক্ষিণে সিরাজগঞ্জ জেলার সাথে যোগাযোগের সহজলভ্যতার কারণে কালক্রমে এই হাটের প্রসার ঘটতে থাকে।

চরের উৎপাদিত মরিচ, ধান, পাট  ও মিষ্টি আলুর বোঝাই নৌকা ঢেকুরিয়া নদীর ঘাটে ভিড়তো। সেখান থেকে গরুর গাড়ি ও ভানগাড়িতে সেসব পণ্য ঢেকুরিয়াহাটে আসতো। পাইকাররা কিনে আবার নৌকা বোঝাই করে নিয়ে যেত তাদের গন্তব্যে। সপ্তাহে প্রতি রোববার ও বৃহস্পতিবার হাট বসে। সরকার প্রতি বছর বেশকিছু টাকার রাজস্ব পায় এই হাট থেকে।

১৯৮৮ সালের বন্যার পর এই হাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর ২০১২ সাল থেকে হাটের তিনশ’ গজের মধ্যে অবস্থিত যমুনার বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙনের ফলে প্রতি বছর বন্যায় হাঁটু সমান পানিতে এই হাট তলিয়ে যেত। এভাবে কয়েক বছর চলার পর ২০১৬ সালে ভাঙা স্থানে বাঁধ নির্মাণের ফলে বন্যার পানিতে ডুবে যাবার হাত থেকে এই হাট রক্ষা পায়।

হাটটির সর্বশেষ ১৯৯৬-১৯৯৭ অর্থবছরে সংস্কার করা হয়েছিল। তখন টিনের ১২ টি খোলাঘর হাটুরেদের জন্য নির্মাণ করা হয়। পুরো হাটের জায়গায় ইটের সলিং করা হয়। ড্রেনেজ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করা হয়। স্থানীয়দের সহায়তায় একটি জামে মসজিদ পাকা করা হয়।

কিন্তু দীর্ঘদিন এই হাটের সংস্কার না হওয়ায় নির্মিত সেই শেডগুলোর টিন নষ্ট হয়ে গেছে। ঘরের চালা থেকে সেগুলো খসে পড়ছে। টিনের খসে যাওয়া ভাঙা অংশ পড়ে হাটে আগত অনেকেই আহত হয়েছেন। ফলে দিন দিন ব্যবসায়ী ও হাটুরেরা এই হাট থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।

বর্তমান ইজারাদার আব্দুল লতিফ জানান, চলতি বছর ছয় লাখ টাকা দিয়ে হাটের ইজারা নিয়েছি। লোকজন টিন, লোহা খসে পড়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কায়  ভয়ে – আতঙ্কে দোকান নিয়ে আর আগের মতো হাটে আসছে না।  কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেওয়ান আকরামুল হক জানান, ঢেকুরিয়া হাটের সংস্কারের বিষয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয়কে লিখিতভাবে জানিয়েছি।

প্রয়োজনীয় বরাদ্দ পেলে সংস্কারকাজ করা হবে। প্রায় তিনশ বছরের পুরনো সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ঢেকুরিয়া হাটের বেহাল দশা। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে হাটুরেরা দিনের পর দিন মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। এই হাটের বিকল্প হাটের দিকে তারা ঝুঁকছেন। ফলে এই হাটকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা স্থানীয় ব্যবসায়ীরা লোকসানের শঙ্কায় রয়েছেন। সরকারি রাজস্ব আদায়ের পরিমাণও কমে যাচ্ছে।

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS