ঢাকা | জুন ২০, ২০২৫ - ৫:৩৮ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

ডেঙ্গুর প্রকোপ: এডিস নির্মূলে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে

  • আপডেট: Thursday, June 19, 2025 - 10:56 pm

সম্পাদকীয়

এবার দেশে বর্ষা মৌসুমের আগেই ডেঙ্গুজ্বরের প্রকোপ বাড়ছে। বিষয়টি খুবই উদ্বেগের। ডেঙ্গু নিয়ে চলতি বছর এ পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন সাড়ে ছয় থেকে সাত হাজার রোগী।

নানা কারণে দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ এখন বছরজুড়েই লক্ষ করা যায়। বস্তুত মশক নিধনে কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়ায় রাজধানীসহ সারা দেশে এডিসের ঘনত্ব বাড়ছে। এক জরিপের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীতে এবার এডিস মশার বংশবৃদ্ধির হার ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।

প্রতিদিন বাড়ি বাড়ি এডিস মশার সন্ধানে অনুসন্ধান চালিয়েছেন একদল গবেষক। ঈদুল আজহার ছুটির আগের দুই সপ্তাহ ধরে চলা এ জরিপে দেখা যায়, প্রতি ১৫ বাড়ির মধ্যে ৭ থেকে ৮টি বাড়িতেই এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। এডিসের লার্ভার এমন ঘনত্ব উদ্বেগজনক।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে হওয়া অন্য এক জরিপে দেখা যায়, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকার চেয়ে বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন স্থানে এডিস মশার ঘনত্ব বেশি। জরিপ হয়েছিল শীতের সময়। ওই সময় এডিসের উপস্থিতি কম থাকারই কথা। কিন্তু এরপরও এডিসের লার্ভার এ উপস্থিতি বরগুনায় ছিল বেশি।

গবেষকরা লক্ষ করেন, বরগুনাসহ বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন স্থানে, বিশেষত উপকূলীয় এলাকায় বর্ষা মৌসুমের বৃষ্টির পানি বড় মটকা বা প্লাস্টিকের তৈরি পাত্রে ধরে রাখা হয়।

তাদের ধারণা, বর্ষা মৌসুমের পানি উন্মুক্ত অবস্থায় রাখায় সেখানে এডিসের বংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির সঙ্কট মোকাবিলায় দেশের অনেক স্থানে বৃষ্টির পানি ধরে রাখা হয়।

এক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করা না হলে ডেঙ্গু বিস্তারের আশঙ্কা থেকেই যায়। গরমের এ সময় ঘন ঘন বৃষ্টি হচ্ছে। এতে এডিসের বংশ বিস্তারের বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে।

অথচ এ মশা নির্মূলে কর্তৃপক্ষের কার্যকর ব্যবস্থাপনা একেবারেই দৃশ্যমান নয়। চলতি জুনের প্রথম ১৯ দিনে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা আগের মাসের আক্রান্তের চেয়ে বেশি।

বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এভাবে চলতে থাকলে আগামী জুলাইয়ের শেষদিকে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেতে পারে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত অনেকের ক্ষেত্রে পরীক্ষায় নেগেটিভ রিপোর্ট আসছে। কেন এমনটি হচ্ছে, এ বিষয়ে বিস্তারিত গবেষণা হওয়া দরকার।

২০২৩ সালে ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবিলার পরও ডেঙ্গু প্রতিরোধে কর্তৃপক্ষ কেন জোরালো পদক্ষেপ নিচ্ছে না, তা বোধগম্য নয়। ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষা পেতে বছরব্যাপী মশক নিধন ও অন্যান্য কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। মশা নির্মূলে সবাইকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। যেভাবেই হোক, এডিস মশার উৎস পুরোপুরি নির্মূল করতে হবে।

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS