অবশেষে নন্দনগাছি স্টেশনে থামলো ট্রেন, মিষ্টি বিতরণ

চারঘাট প্রতিনিধি: অবশেষে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নন্দনগাছী স্টেশনে কমিউটার এক্সপ্রেস ট্রেনটি থেমেছে। দীর্ঘ এক যুগ পর মঙ্গলবার সকালে খুলেছে স্টেশনের দরজার তালা। আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রা বিরতি ও স্টেশনের সংস্কারের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিল স্টেশনের পার্শ্ববর্তী ৩ উপজেলার মানুষ।
সরেজমিন স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়েছে। এক যুগ পর স্টেশনের ঘর খুলে টিকিট বিক্রি করা হয়। ঈশ্বরদী-রহনপুর-ঈশ্বরদী রুটে চলাচলকারী কমিউটার এক্সপ্রেস ট্রেনটি সকাল ৯টার দিকে স্টেশনে পৌঁছালে আন্দোলনকারীরা মিষ্টি ও ফুল দিয়ে ট্রেনের পরিচালক ও যাত্রীদের বরণ করে নেন। ট্রেন চলে যাওয়ার পর আন্দোলনকারী ও স্থানীয়রা রেলের লোকজনকে সাথে স্টেশনটি ধুয়ে মুছে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন কাজ শুরু করেন।
এর আগে গত পহেলা মে স্টেশনের পার্শ্ববর্তী চারঘাট, বাঘা ও পুঠিয়া উপজেলার মানুষ ট্রেনের যাত্রা বিরতি ও স্টেশনের সংস্কারের দাবিতে রেলপথ অবরোধ করেন। চার ঘণ্টা ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ থাকার পর রেল কর্তৃপক্ষ দাবি মানার আশ্বাস দিলে আন্দোলন বন্ধ করে আলোচনায় বসে তারা।
রেল কর্তৃপক্ষ ১ জুন থেকে ট্রেনের যাত্রা বিরতি আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন না করায় গত ১১ জুন আবারও রেলপথ অবরোধ করেন তারা। ঈদের ফিরতি যাত্রায় ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেলে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদের মাধ্যমে আবারও আশ্বাস দেয় রেল কর্তৃপক্ষ। সর্বশেষ গত সোমবার আন্দোলনকারীদের সাথে আলোচনায় বসেন পশ্চিমাঞ্চল রেল।
পরে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সহকারী চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট আব্দুল আওয়াল স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে নন্দনগাছীতে কমিউটার এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা বিরতির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়।
কমিউটার এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা বিরতি দেওয়ার পর আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক তামিম ইসলাম বলেন, আমাদের দাবির মাত্র ছোট্ট একটু অংশ পূরণ হয়েছে। এজন্য আমরা পুরোপুরি খুশি না। স্টেশন পুরোপুরি সংস্কার করতে হবে এবং আন্তঃনগর চারটি ট্রেনের যাত্রা বিরতি দিতে হবে। তবে এগুলো যেন পর্যায়ক্রমে হয় এজন্য রেল কর্তৃপক্ষকে সময় দিয়েছি আমরা।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদ বলেন, স্থানীয় জনসাধারণ ও আন্দোলনকারী অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে ট্রেনের যাত্রা বিরতি পাওয়া গেছে। তারা দিনের পর দিন অহিংস আন্দোলন করেছে। ট্রেন যাত্রা বিরতি দেওয়ায় চারঘাট, বাঘা ও পুঠিয়া উপজেলাবাসীর পক্ষ থেকে রেল কর্তৃপক্ষ ও সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানান তিনি।