ঢাকা | জুন ১৮, ২০২৫ - ৪:০৭ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

ফলন ভালো হলেও গরম-ছুটিতে আম চাষির সর্বনাশ

  • আপডেট: Tuesday, June 17, 2025 - 11:59 pm

রাজশাহী-চাঁপাই-নওগাঁ অঞ্চলের আম বাজারের পটলেখা:

জগদীশ রবিদাস: রাজশাহী, নওগাঁ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে এখন আমের ভরা মৌসুম। অন্য যে কোনো বছরের তুলনায় এসব অঞ্চলে এবার আমের ফলন মন্দ হয়নি। প্রাকৃতিক আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার আমের আকার যেমন বড় এবং পুষ্ট হয়েছে, ঠিক তেমনই আমের গুণগত মানও ভালো।

শুরুতে এসব দেখে আম চাষিরা লাভের আশায় বুক বাঁধলেও এখন সেই আশায় যেন ভাটা পড়েছে। সব জেলায় প্রায় সব জাতের আম একসঙ্গে বাজারে চলে আসায় বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে প্রান্তিক চাষি ও ব্যবসায়ীদের।

সম্প্রতি টানা তাপদাহ, ঈদের দীর্ঘ ছুটি, কুরিয়ার সার্ভিস বন্ধ, বাজারে পাইকারি ব্যবসায়ীর অনুপস্থিতি, ওজন নিয়ে বিভ্রান্তি, প্রশাসনের বাজার মনিটরিংয়ের অভাব ও উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির পর আমের কাঙ্খিত দাম পাচ্ছেন না প্রান্তিক আম চাষিরা। ফলে, এবার তারা বিপুল ক্ষতির মুখে পড়তে চলেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাষি পর্যায়ে এবার আমের দাম গত বছরের তুলনায় বেশ কম। ঢাকার বাজারে আম বিক্রি হচ্ছে গড়ে প্রতি কেজি ৬০ থেকে ১০০ টাকা। তবে সেই একই আম উৎপাদন করা অঞ্চলে দাম ২০ থেকে ৩০ টাকার ওপরে উঠছে না। কোনো কোনো দিন মোকামে দাম ২০ টাকার নিচেও নেমে যাচ্ছে, তখন লোকসান গুণতে হচ্ছে চাষিদের।

এছাড়াও সম্প্রতি রাজশাহী অঞ্চলে চলা তাপপ্রবাহের কারণে প্রায় সব জাতের আম গাছে একসঙ্গে পেকে ঝরে পড়ছে। এসব আম গাছে কোনভাবেই টেকাতে পারছেন না চাষিরা। সব জাতের আম একসঙ্গে মোকামে ও বাজারে চলে আসায় দাম কমে গেছে। অন্যদিকে, ঈদের টানা ১০ দিনের ছুটির কারণে কুরিয়ার সার্ভিসগুলো বন্ধ থাকায় আমের পরিবহন নিয়ে অচলাবস্থার মুখে পড়েছেন আম চাষিরা।

আম পেকে গেলেও পরিবহন বন্ধ থাকায় অনেক চাষি গাছ থেকে আম নামাননি। ফলে সেসব আম এখন গাছেই পেকে গেছে। অনেক আম গাছপাকা অবস্থাতেই ঝড়ে পড়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড়-বড় শহরের মানুষ ঈদ উদযাপনের জন্য গ্রামে চলে যাওয়া কারণে ক্রেতা সঙ্কট আমের মূল্য হাসের আরও একটি কারণ।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ইয়াছিন আলী বলেন, চাঁপাইয়ের আম অন্য জেলার তুলনায় কিছুটা দেরিতে পাকে। সাধারণত: জুন মাসের ১ম সপ্তাহে ক্ষীরসাপাত, দ্বিতীয় সপ্তাহে ল্যাংড়া এবং জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে আসে আম্রপালি জাতের আম।

কিন্তু মে মাসের শেষভাগ থেকে এখন পর্যন্ত বৃষ্টিহীনতা ও প্রচণ্ড গরম অব্যাহত থাকায় ক্ষীরসাপাত, লক্ষণভোগ ও আম্রপালি জাতের আম একসাথে পেকে যাওয়ায় আমের বাজারদরের পতন ঘটে। ক্ষীরসাপাত পাকার মুর্হুতে কোরবানি ঈদের লম্বা ছুটি, ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানের বিপুল পরিমাণ লোকজন গ্রামে যাওয়ায় ক্রেতা সঙ্কটে আমের চাহিদা কমে যাওয়ায় দামও কমে যায়।

এছাড়াও আমের ওজন ও কমিশন নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার কারণেও চাষিদের কপাল পুড়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। গোমস্তাপুর উপজেলার আমচাষি সমিতির সভাপতি মাইনুল বিশ্বাস জানান, ভরামৌসুমে আমের ওজন ও কমিশন নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার কারণে বাহিরের ব্যাপারীরা এই জেলায় আসতে দেরি করায় স্থানীয় বাজারে আমের দরে পতন ঘটেছে। বাজারে আম আসার আগেই ওজন ও কমিশন নিয়ে বিভাগীয় কমিশনার অফিসে সভা ডাকলে হয়তো ব্যাপারীরা বিভ্রান্ত হতেন না।

এদিকে, রাজশাহী অঞ্চলের জেলাগুলোতে বিভিন্ন ধরনের আম আহরণে প্রশাসনের বেঁধে দেয়া ক্যালেন্ডারের সময়সীমা প্রায় ভেঙে পড়েছে। চাষিরা বলছেন, আম সংগ্রহ সময়ে বৈরী আহবাওয়া ও উচ্চ তাপমাত্রার কারণে গাছে পরিপক্ব সব আম দ্রুত পেকে যাচ্ছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গাছের আমে রঙ ধরছে।

বোঁটা নরম হয়ে পাকা আম গাছ থেকে ঝরে পড়ছে। ফলে চাষিরা বাধ্য হয়ে আম নামিয়ে মোকামে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কাক্সিক্ষত দাম পাচ্ছেন না। রাজশাহী অঞ্চলের প্রধান মোকামগুলোতে এখনো চালানি ব্যাপারীর সংখ্যা কম। ফলে ক্রেতার অভাবে চাষিরা অনেক কম দামে আম বিক্রি করে দিচ্ছেন। যে যে দাম পাচ্ছেন সেই দামেই বিক্রি করছেন।

কারণ পাকা আম ঘরে রাখলে এক-দুদিনের মধ্যে সব পচে নষ্ট হয়ে যাবে। নওগাঁর বদলগাছী এলাকার চাষি ইয়াকুব মিয়া বলেন, এ এলাকার বিখ্যাত ফজলি আমের মণ যাচ্ছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা পাইকারি, যা গত বছরের চেয়ে প্রায় ৬০০ টাকা কম। তিনি বলেন, এবার ঈদের কারণে আমাদের সর্বনাশ হয়েছে।

লম্বা ছুটিতে শহরের মানুষ গ্রামে থেকেছে। ফলে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহর এলাকায় আম পাঠানো যায়নি, চাহিদাও ছিল না। তখন আম পেকেছে, নষ্ট হওয়ার ভয়ে কম দামে বিক্রি করেছি। আরও কয়েকজন আম চাষি জানান, আম পেকে গেলে দ্রুত পচন ধরে। ফলে কম দামেই আম বিক্রি করতে বাধ্য হন তারা। একদিকে ছুটিতে বেচাবিক্রি ছিল কম, তার মধ্যে প্রচণ্ড গরমে আম দ্রুত পেকেছে ওই সময়।

কৃষি বিভাগ সূত্রমতে, চলতি মৌসুমে দেশে ২৮ লাখ টন আম উৎপাদনের টার্গেট রয়েছে। এর মধ্যে বৃহত্তর রাজশাহীর চার জেলায় ১২ লাখ ৫৫ হাজার টন (চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৪ লাখ ৫৮ হাজার টন, নওগাঁয় ৩ লাখ ৭৮ হাজার টন, রাজশাহীতে ২ লাখ ৮৫ হাজার ৮৪৩ টন ও নাটোরে ১ লাখ ৪৩ হাজার টন) আম উৎপাদনের টার্গেট রয়েছে।

রাজশাহী ফল গবেষণা ইনস্টিটিউট, রাজশাহীর মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, রাজশাহী অঞ্চলে বিদ্যমান উচ্চ তাপমাত্রা ও বৃষ্টিহীনতার কারণে আমের ক্ষেত্রে ‘ফোর্স রাইপেনিং’ সিনড্রোম ঘটেছে। বৃষ্টি না থাকায় আমের বোঁটায় থাকা ফ্লুইড শুকিয়ে আপনা-আপনি গাছ থেকে ঝরে পড়ছে আম।

তিনি বলেন, বিভিন্ন জাতের আম নির্ধারিত টাইম লাইনের দুই সপ্তাহ আগে গাছে পেকে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে চাষিরা পাকা আম দ্রুত গাছ থেকে নামিয়ে মোকামে তুলছেন। আমরা জেনেছি এবার মোকামে আমের দাম কিছুটা কম। তবে শিগগিরই বৃষ্টি হলে বিভিন্ন ধরনের আমের স্থায়িত্ব কিছুদিন বাড়বে। এছাড়াও আম গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোখলেসুর রহমান জানান, ভৌগলিক ও উৎপত্তিস্থল এবং সুস্বাদু আমের উৎপাদন হিসেবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রসিদ্ধ।

তাই বরাবরই এই জেলার মানুষ আমের চাহিদা মিটিয়ে প্রতিবছর প্রায় ৩-৪ লাখ মেট্রিক টন আম দেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা, কুমিল্লা, নোয়াখালি, বরিশালসহ বিভিন্ন স্থানে বাণিজ্যকভাবে পাঠিয়ে থাকে। কিন্তু জেলায় এখন বৈরী আবহাওয়া (পক্ষকালব্যাপি প্রচণ্ড গরম) অব্যাহত থাকায় চাষিরা গাছে আম রাখতে পারছে না।

কানসাটের আম বাজারের আড়তদার রুহুল আমীন জানান, এবার ঈদের মধ্যে ক্ষীরসাপাত আম বাজারে আসে। জৈাষ্ঠের শেষভাগে অত্যাধিক গরম এবং লম্বা ছুটির কারণে চাষিরা প্রথমে চেষ্টা চালান গাছ থেকে আম কম নামানোর। কিন্তু অত্যাধিক গরমে পাকা আম গাছ থেকে ঝরে পড়ছিলো, তাই বাধ্য হয়ে বেশির ভাগচাষি বাজারে ক্ষীরসাপাত আম নামানোর কারণে সরবরাহ বেড়ে যায়, আর ব্যাংক বন্ধ ও বাজারে ব্যাপারী ও ক্রেতা না থাকায় অনেকচাষি ন্যায্য দাম না পেয়ে ক্ষতির মধ্যে পড়েছে।

তিনি আরও বলেন, ঈদের ছুটি অর্থাৎ জুনের গত ১৫ দিনে ক্ষীরসাপাত জাত আমের ভরামৌসুমে জেলার ৫টি উপজেলার লাখখানেক প্রান্তিকচাষি আমের কাঙ্খিত দাম না পেয়ে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ কোটি টাকার মত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

আমচাষি ফারুক হোসেন বলেন, এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে এবারও আমচাষ করি ৫ বিঘা। তার মধ্যে এবার আমের দাম না পাওয়ায় কিভাবে তিনি এনজিও’র কিস্তি পরিশোধ করবেন, তা নিয়ে বড় চিন্তার মধ্যে পড়েছেন।

সরেজমিন গতকাল মঙ্গলবার রাজশাহীর সবচেয়ে বড় আমবাজার বানেশ্বর গিয়ে দেখা যায়, আম থাকলেও ক্রেতার সঙ্কট। ক্ষিরসাপাতি আম মানভেদে প্রতিমন সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আবার চাষি ও বাগান পর্যায়ে ক্ষীরসাপাত আম বিক্রি হচ্ছে প্রতিমন ১ হাজার ২০০ টাকায়। আগাম লখনা জাতের আম বিক্রি হচ্ছে প্রতিমন ৪শ থেকে ৭০০ শ টাকা মনদরে।

ন্যাংড়া জাতের আম বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা প্রতিমন। হাড়িভাঙা ১৬০০ থেকে ১৮০০ টাকায়। যা ঈদের আগে ছিল ২১০০ থেকে ২২০০ মণ দরে। বানেশ্বর বাজারে ভাই ভাই মোকামের ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম বলেন, আম সংগ্রহ সময়ে ঈদ ও বৈরী আহবাওয়া এবং উচ্চ তাপমাত্রার কারণে গাছে পরিপক্ব সব আম দ্রুত পেকে যাচ্ছে।

২৪ ঘণ্টার মধ্যে গাছের আমে রঙ ধরছে। বোঁটা নরম হয়ে পাকা আম গাছ থেকে ঝরে পড়ছে। ফলে চাষিরা বাধ্য হয়ে আম নামিয়ে মোকামে নিয়ে আসছেন। কিন্তু ক্রেতা কম হওয়ায় কাঙ্খিত দাম পাচ্ছেন না। দুর্গাপুর উপজেলার নওপাড়া গ্রামের আশরাফুল ইসলাম বলেন, ঈদের আগে আমসহ বাগান বিক্রি করে ছিলাম।

কিছু টাকা বায়না দিয়ে ছিল ব্যাপারী। পরে দাম কমে যাওয়ায় আসেন নি ব্যাপারী। গরমে আম পড়ে যাচ্ছে। ব্যাপারী না আসায় আমি নিজেই গাছ থেকে আম ভেঙে বাজারে বিক্রি করে দিচ্ছি। তবে বাজারদর খুব কম।

এদিকে, নওগাঁয় প্রশাসনের নির্ধারিত সময়ের আগেই বাজারে এসেছে আম্রপালি ও অন্য জাতের আম। ফলে মোকামে আম সরবরাহ কয়েক গুণ বেড়েছে, অথচ তেমন ক্রেতা নেই। নওগাঁয় পাইকারিতে ল্যাংড়া আম ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা মণ, আম্রপালি ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকা, নাক ফজলি ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।

গত বছর এই সময় এসব আমের দাম প্রায় দ্বিগুণ ছিল। নওগাঁর বড় মোকাম সাপাহারের আম বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, এবার সময়ের আগেই আম বাজারে উঠেছে। দাম ঠিকমতো পাওয়া গেছে মাত্র প্রথম চার-পাঁচ দিন। এর পরই শুরু হয়েছে দরপতন। আম চাষিদের দাবি, সরকারিভাবে বাজার ব্যবস্থাপনা, সংরক্ষণ সুবিধা ও ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা গেলে এমন লোকসান এড়ানো যেত।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক উম্মে ছালমা বলেন, এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমের বাম্পার ফলন হয়েছিল। বাজারে পর্যাপ্ত আম রয়েছে। তবে একেবারে ঈদের সময় আম পাড়ার মৌসুম শুরু হওয়ায় দাম হয়তো একটু কম মনে হচ্ছে। দাম একটু বাড়লে চাষিরা লাভবান হতো।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাজশাহী বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক ড. আজিজুর রহমান বলেন, রাজশাহী অঞ্চলে এবার আমের ফলন বেশ ভালো। তবে তাপপ্রবাহ, অত্যধিক গরম ও বৃষ্টিহীনতার কারণে আম দ্রুত পেকে যাচ্ছে। ঈদের লম্বা ছুটির কারণে আম চালান ও পরিবহণে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। ফলে আমের দাম কম।

এর পরও ফলন যেহেতু ভালো, সেহেতু চাষিরা ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নিতে পারবেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আরো বলেন, এবার চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩৭ হাজার ৫০৪ হেক্টর জমির আমবাগানে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পৌনে চার লাখ মেট্রিক টন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশাব্যক্ত করেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ইয়াছিন আলী বলেন, এবার চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩৭ হাজার ৫০৪ হেক্টর জমির আমবাগানে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পৌনে চার লাখ মেট্রিক টন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশাব্যক্ত করেন তিনি।

চাষিদের লোকসানের মধ্যেও রপ্তানি ইতিবাচক: চাষিদের লোকসানের মধ্যেও এ বছর আম রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় রয়েছে বলে জানা যায় ‘রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্প’র তথ্যে। প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আরিফুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, এ পর্যন্ত ২৪টি দেশে প্রায় সাড়ে ৫০০ টন আম রপ্তানি হয়েছে।

আরও দুই মাস ধরে রপ্তানিযোগ্য আম বিদেশে যাবে। তাতে গত বছরের চেয়ে রপ্তানি বেশ বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এবছর থেকে চীনে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের আম রপ্তানি শুরু হয়েছে। গত ২৯ মে ১০ টন আমের একটি চালান চীনে পাঠানো হয়েছে। তার আগে চীনে কখনো আম রপ্তানি হয়নি। এ মৌসুমে সব মিলিয়ে প্রায় ১০০ টন আম রপ্তানি হবে চীনে।

এছাড়া ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ফিলিপাইন, সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, যুক্তরাজ্য, ইতালি, জার্মানি, ফ্রান্স, সুইডেন এবং কানাডার মতো দেশগুলোতে বাংলাদেশের আম রপ্তানি করা হয়। এবার প্রায় পাঁচ হাজার টন আম বিদেশে রপ্তানির টার্গেট রয়েছে বলে জানান আরিফুর রহমান।

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS