আম পাড়তে বাধা দিয়ে হত্যার হুমকির অভিযোগ, জামায়াত কর্মী গ্রেপ্তার

নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের বড়াইগ্রামে আম পাড়তে গিয়ে হত্যার হুমকির মুখে পড়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আবদুল খালেক (৬৫) নামে জামায়াতে ইসলামীর এক সক্রিয় কর্মীকে গত শনিবার গ্রেপ্তার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
আবদুল খালেক বড়াইগ্রাম উপজেলার জোয়াড়ী ইউনিয়নের কায়েমকোলা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সক্রিয় কর্মী।
আবদুল খালেক দাবি করেন, উপজেলার কায়েমকোলা মৌজার সাতটি দাগে তাঁর ১৯ বিঘা জমি রয়েছে, যেখানে তিনি বহু বছর ধরে আম ও লিচুর বাগান করেছেন। গত ৫ আগস্টের পর তাঁর দূর সম্পর্কের স্বজনেরা ওই বাগান দখলের চেষ্টা চালান। অভিযোগকারী আবদুর রাজ্জাক বলেন, শুক্রবার সকালে তিনি স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে বাগানে আম পাড়তে যান।
এ সময় আবদুল খালেক, আবদুল মালেক, পলাশ, সাত্তারসহ ১২ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা চালান এবং হত্যার হুমকি দিয়ে বাগান থেকে বের করে দেন। পরে বিষয়টি সেনাবাহিনী ও পুলিশকে জানানো হলে অভিযান চালিয়ে আবদুল খালেককে আটক করা হয়।
রোববার কায়েমকোলা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, রাজ্জাকের দাবি করা বাগানে সারি সারি আমগাছ রয়েছে এবং আমগুলো পরিপক্ব হয়ে রং ধরেছে। বাগানে ঘাস কাটতে আসা স্থানীয় নারী মরিয়ম বলেন, রাজ্জাকেরা এই আমবাগান করেছে। তবে গত আট মাস ধরে পলাশরা এই বাগান দখলের চেষ্টা করছে। আবদুর রাজ্জাক আরও বলেন, আমি সরকারি চাকরি থেকে অবসরে এসেছি, আমার ছেলেও সরকারি চাকরিজীবী।
৫ আগস্টের পর জামায়াতের কর্মী আবদুল মালিকেরা আমার বাগান ও পুকুর দখলের চেষ্টা শুরু করে। শুক্রবার সকালে আমার গলায় হাঁসুয়া ধরে আম পাড়তে বাধা দেয়। আমি আমার হাতে লাগানো গাছের আম খেতে পারছি না। আমি ন্যায়বিচার চাই।
অভিযুক্ত আবদুল মালেক বলেন, তিনি জোয়াড়ী ইউনিয়ন জামায়াতের সমাজকল্যাণ সেক্রেটারি এবং গ্রেপ্তার আবদুল খালেক তাঁর ভাই। তাঁদের পূর্বপুরুষদের নামে জমিগুলো থাকলেও এসএ ও আরএস খতিয়ানে নাম ওঠেনি। তাই তাঁরা আদালতে মামলা করেছেন। মামলা নিষ্পত্তির আগেই রাজ্জাক আম পাড়তে গেলে বাগ্বিতণ্ডা হয়।
অথচ মিথ্যা অভিযোগে তাঁর ভাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বড়াইগ্রাম উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক বলেন, এটি একটি পারিবারিক বিষয়, জামায়াতে ইসলামীর কোনো সম্পৃক্ততা নেই। বড়াইগ্রাম থানার পরিদর্শক গোলাম সারোয়ার হোসেন বলেন, চাঁদাবাজি ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্ত অব্যাহত আছে।