ফল ছিল ‘পূর্বনির্ধারিত’, দেড় বছর পর অনুসন্ধানে দুদক

স্টাফ রিপোর্টার: দেড় বছর আগে রাজশাহীর কাঁকনহাট পৌরসভায় একটি নিয়োগের প্রক্রিয়া চলাকালেই জানা গিয়েছিল কারা নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন। চাকরিপ্রার্থী এক তরুণী সংবাদ সম্মেলন করেই এ তথ্য জানিয়েছিলেন। পরে ছয়টি পদের মধ্যে চারটির ক্ষেত্রেই ওই তরুণীর দেওয়া ‘তথ্য’ মিলে যায়।
দেড় বছর পর এখন বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার এই পৌরসভায় একজন করে স্যানিটারি ইন্সপেক্টর, স্টোরকিপার, সহকারী কর আদায়কারী, সার্ভেয়ার, নিম্নমান সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর ও অফিস সহায়ক পদে নিয়োগের জন্য ২০২৩ সালের নভেম্বরে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। নিয়োগপ্রক্রিয়া চলাকালেই এতে ঘুষ ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ ওঠে।
ওই সময় পৌরসভার মেয়র ছিলেন আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য এ কে এম আতাউর রহমান খান। নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষের আগেই ঘুষ ও স্বজনপ্রীতির ব্যাপারে তৎকালীন মেয়র আতাউর রহমান ও পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন সহকারী কর আদায়কারী পদের চাকরিপ্রার্থী সানজিদা শেখ।
সানজিদা শেখের বাবা পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ও প্যানেল চেয়ারম্যান গোলাম মর্তুজা শেখ। পরে ওই বছরের ২৬ ডিসেম্বর সানজিদা সংবাদ সম্মেলনও করেন। তিন দিন পর ২৯ ডিসেম্বর নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষে দেখা যায়, স্যানিটারি ইন্সপেক্টর পদে আসাদুল ইসলামকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও সানজিদার দেওয়া তথ্যে মিল রয়েছে। মেয়রের নাতি শিহাব উল্লাহ, মহাসিনা আক্তার ও ইফতেহাদ আহম্মেদ নিয়োগ পেয়েছেন। তবে অফিস সহায়ক পদে শরিফুল ইসলাম ও কম্পিউটার অপারেটর পদে শিহাব আলী নামের অন্য দুজন নিয়োগ পেয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে স্যানিটারি ইন্সপেক্টর পদে চাকরি পাওয়া আসাদুল হক অবশ্য বৃহস্পতিবার দাবি করেন, চাকরির জন্য তিনি কোনো টাকা দেননি। একই দাবি করেন শিহাব উল্লাহও। ওই ছয়জনের নিয়োগে স্বজনপ্রীতি ও আর্থিক লেনদেনের অভিযোগে তৎকালীন পৌর মেয়র একেএম আতাউর রহমান ও পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিমের ব্যাপারে অনুসন্ধানে নামছে দুদক।
দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন জানান, ঈদের ছুটির আগে তাঁরা কাঁকনহাট পৌরসভার ওই নিয়োগের অনিয়মের অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশনা পেয়েছেন। ঈদের ছুটি শেষে তাঁরা এ বিষয়ে কাজ করবেন।